নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কভিড ওয়ার্ডের আইসিইউতে অগ্নিকাণ্ডের পর স্থানান্তরিত তিন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালের নতুন ভবনের তৃতীয় তলায় গতকাল সকাল ৮টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা বেলা সাড়ে ৯টার দিকে তা নিয়ন্ত্রণে আনে বলে জানান ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া।
তিনি বলেন, আগুন লাগার পর আইসিইউ ওয়ার্ড থেকে ১৪ রোগীকে অন্য আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছিল। তাদের তিনজন পরে মারা গেছেন। এই তিনজন হলেনÑকাজী গোলাম মোস্তফা (৬৬), আবদুল্লাহ আল মাহমুদ (৪৮) ও কিশোর চন্দ্র রায় (৭০)। আইসিইউতে তাদের কৃত্রিমভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস দেয়া হচ্ছিল।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক বলেন, ১৪টি আইসিইউ কক্ষে ১৪ জন রোগী ছিলেন। তাদের সবার অবস্থাই সংকটাপন্ন ছিল। তারা ভেন্টিলেটেশনে ছিলেন। আগুন লাগার পরপরই দ্রুত তাদের পুরোনো ভবনের আইসিইউ ও বার্ন ইউনিটের এইচডিইউতে সরিয়ে নেয়া হয়। যে তিনজন মারা গেছেন তারা এমনিতেই ক্রিটিক্যাল অবস্থায় ছিলেন, আগুনে কেউ দগ্ধ হননি।
ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা কামরুল হাসান জানান, আগুন লাগার খবর পেয়ে তাদের পাঁচটি ইউনিট দ্রুত সেখানে যায়। আগুন পুরোপুরি নেভাতে দেড় ঘণ্টা লেগে যায়। ততক্ষণে আইসিইউ ওয়ার্ডের ব্যাপক ক্ষতি হয়। দশতলা ভবনের তৃতীয় তলার ওই আইসিইউ ওয়ার্ল্ডটি ছিল করোনা-আক্রান্ত রোগীদের জন্য। একজন রোগী আটকা পড়েছিলেন। ফায়ার সার্ভিস তাকে উদ্ধার করে সরিয়ে নেয়।
আগুনে ওই ওয়ার্ডের সব আইসিইউ মেশিন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেÑজানিয়ে হাসপাতালের পরিচালক নাজমুল হক বলেন, বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে কোনো একটি আইসিইউ মেশিন থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। অগ্নিকাণ্ডের কারণ খতিয়ে দেখতে দুটি তদন্ত কমিটি করেছে হাসপাতাল ও ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক জানান, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তারা তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছেন। আর ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তরের চার সদস্যের তদন্ত কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানান ঢাকা বিভাগীয় উপপরিচালক দেবাশীষ বর্ধন। অধিদপ্তরের উপপরিচালক নূর হাসান আহমেদকে প্রধান করে গঠিত এ তদন্ত কমিটিতে ডিএডি শাহজাহান শিকদার ও দুজন পরিদর্শক সদস্য হিসেবে রয়েছেন।