নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গণ-অধিকার পরিষদের ছাত্রসংগঠন ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের ওপর দুই দফা হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। গণ-অধিকার পরিষদ এই অভিযোগ করেছে।
দলটি বলছে, হামলায় তাদের ১৫ থেকে ২০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। হামলায় আহত চারজন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, তিনজন গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল ও ১৫ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তবে ছাত্রলীগ বলেছে, একদল ক্রীড়ানুরাগী শিক্ষার্থীর আনন্দ মিছিলে ছাত্র অধিকারের নেতা-কর্মীরা হামলা করেছেন। পরে শিক্ষার্থীরা এর পাল্টা জবাব দিয়েছেন।
গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) এলাকার ডাস ক্যাফেটেরিয়ার সামনে এ ঘটনা ঘটে। আজ টিএসসিতে ছাত্র অধিকার পরিষদের পঞ্চম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্?যাপিত হওয়ার কথা ছিল। সেই কর্মসূচি সফল করতেই সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে টিএসসিতে এসেছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা বলেন, বেলা ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে টিএসসিতে আসেন ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীরা। তাদের আসার খবর পেয়ে আগেই টিএসসি এলাকায় অবস্থান নেন ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী। তারা ছাত্র অধিকারের নেতা-কর্মীদের সামনে ও পাশে অবস্থান নেন। এ সময় ছাত্র অধিকারের নেতা-কর্মীরা ডাস ক্যাফেটেরিয়া-সংলগ্ন সড়কে দাঁড়িয়ে নিজেদের সংগঠনের নামে সেøাগান দিতে থাকেন। হঠাৎ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ‘কুমিল্লা, কুমিল্লা’ বলে সেøাগান শুরু করেন।
একপর্যায়ে তারা ছাত্র অধিকারের নেতা-কর্মীদের মারধর শুরু করেন। একই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনেও ছাত্র অধিকারের নেতা-কর্মীদের মারধর করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
গণ-অধিকার পরিষদের গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, ছাত্রলীগ ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের ওপর দুই দফায় হামলা করেÑপ্রথমে রাজু ভাস্কর্যের সামনে, পরে কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে। হামলায় ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, সহসভাপতি আখতার হোসেনসহ ১৫ থেকে ২০ জন আহত হয়েছেন।
ছাত্র অধিকার পরিষদের তিতুমীর কলেজ শাখার সভাপতি নেওয়াজ খান বলেন, বেলা ১১টার দিকে ছাত্রলীগ ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের ওপর নগ্ন হামলা চালায়। গুরুতর আহত ব্যক্তিদের মধ্যে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ আছেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহির ফয়সাল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান বলেন, গত বৃহস্পতিবার বিপিএলের ফাইনালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের বিজয়ে গতকাল সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল ক্রীড়ানুরাগী শিক্ষার্থী টিএসসিতে আনন্দ মিছিল করছিলেন। এই আনন্দ মিছিল দেখে নাকি ছাত্র অধিকারের নেতা-কর্মীরা বলাবলি শুরু করেছে, ‘খেলাধুলা হারাম!’ এ কথা বলে ছাত্র অধিকারের নেতা-কর্মীরা ক্রীড়ানুরাগী শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিত হামলা করেন। শিক্ষার্থীরা এর পাল্টা জবাব দিয়েছেন। ক্রীড়ানুরাগী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রলীগেরও কয়েক কর্মী ছিলেন। তবে ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে নয়, তারা সেখানে গেছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের সমর্থক হিসেবে। সাধারণ শিক্ষার্থী ও কুমিল্লা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসা শিক্ষার্থীরাও সেখানে ছিলেন।