নিজস্ব প্রতিবেদক :তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন না দিলে, সে নির্বাচন রুখে দিতে নেতা কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি অভিযোগ করেন, যেটা প্রতিষ্ঠিত সত্য, দেশে-বিদেশে সবখানে যে, শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গতকাল শনিবার বিকালে এক বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল উপস্থিত কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা কি শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে নির্বাচন দেখতে চান?’ ‘না’ জবাব এলে তিনি বলেন, ‘তাহলে নির্বাচন রুখে দিতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা, বিএনপি বারবার ক্ষমতায় এসেছি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা দীর্ঘকাল ধরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করছি। আপনারাও (আওয়ামী লীগ) তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করেছিলেন। সে আন্দোলনে ১৭৩ দিন হরতাল করেছিলেন, মানুষ মেরেছিলেন। এখন আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুরোপুরি বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করার জন্য মানুষ মারছেন।’
সমাবেশে মির্জা ফখরুল ঢাকা মহানগরসহ সারাদেশে চার দিনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এর মধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণসহ সব মহানগর এবং ৮৩টি সাংগঠনিক জেলায় আলাদা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
কর্মসূচির মধ্যে আছে ১৯ মে ঢাকা মহানগর উত্তরসহ ২৮ জেলা ও মহানগরে জনসমাবেশ, ২০ মে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ, ২১ মে জেলা ও মহানগর, ২৬ মে ঢাকা মহানগর উত্তরসহ ২০ জেলা ও মহানগরে এবং ২৭ মে ঢাকা মহানগর দক্ষিণসহ ১৫ জেলা ও মহানগরে জনসমাবেশ।
বিএনপি ঢাকা মহানগর উত্তর কমিটির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম প্রমুখ।
এদিকে গায়েবি মামলায় গ্রেপ্তার, নির্যাতনসহ সরকার পদত্যাগের ১০ দফা দাবি আদায়ে ঢাকাসহ সারাদেশে মহানগর-জেলায় বিক্ষোভ সমাবেশের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
ঘোষণা অনুযায়ী, ১৯ মে ঢাকা মহানগর উত্তরসহ ২৮ জেলা ও মহানগর, ২০ মে ঢাকা মহানগর দক্ষিণসহ ২১ জেলা ও মহানগর, ২৬ মে ঢাকা মহানগর উত্তরসহ ১৯ জেলা এবং ২৭ মে ঢাকা মহানগর দক্ষিণসহ ১৫ জেলা ও মহানগরে জনসমাবেশ হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের এই আন্দোলন বিএনপিকে ক্ষমতায় নেয়ার জন্য নয়। আমাদের এই আন্দোলন জনগণকে সঙ্গে নিয়ে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য, গণতান্ত্রিক উপায়ে শান্তিপূর্ণ উপায়ে এই সরকারকে পতন ঘটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য।
‘উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অমান্য, নি¤œ আদালতে আবার আমাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করে কারাগারে প্রেরণ, গায়েবি মামলা দিয়ে নির্বিচারে গ্রেপ্তার, মিথ্যা মামলা, পুলিশ হয়রানি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুতের লোডশেডিং, আওয়ামী সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদ এবং ১০ দফা দাবিতে এই কর্মসূচি হবে।’
নতুন কর্মসূচি অনুযায়ী চার দিনই ঢাকা মহানগরে বিক্ষোভ সমাবেশ হবে। যুগপৎ আন্দোলনের সর্বশেষ কর্মসূচি হয় এপ্রিলের প্রথম দিকে রমজান মাসের শুরুতে। এরপর এটিই প্রথম কর্মসূচি।