Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 1:20 am

তথ্যের গ্রহণযোগ্যতা বিবেচনা করে শেয়ার কেনা উচিত

পুঁজিবাজার একটি তথ্যভিত্তিক জায়গা। এখানে অধিকাংশ মানুষই তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যমে শেয়ার কেনাবেচা করে। অনেক সময় তথ্য বিচার-বিশ্লেষণ করে বিনিয়োগ করেও পুঁজিবাজার থেকে কোনো ভালো ফল পাওয়া যায় না। দেখা যায়, যে শেয়ারগুলো বাড়ার কথা কিন্তু সেগুলো বাড়ছে না। তবে তথ্য বা খবরের গ্রহণযোগ্যতা কতটুক তা বিচার-বিশ্লেষণ করেই শেয়ার সংগ্রহ করা উচিত। কারণ সঠিক তথ্য বা খবর না হলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়। হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম দিলাল এবং বিএমএসএলয়ের এমডি ও সিইও রিয়াদ মতিন।
সাইফুল ইসলাম দিলাল বলেন, দেশে দিন দিন খেলাপি ঋণ বেড়েই চলছে এবং এটি অবশ্যই দেশের জন্য ভালো নয়। আর খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমাতে হলে সর্বপ্রথম ব্যাংকারদের সচেতন হতে হবে। আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশি খেলাপি ঋণ হয় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে। এ ব্যাংকগুলো খেলাপি অবলোপন করতে করতে এমন অবস্থায় চলে যায় যে, এক পর্যায়ে তাদের মূলধন সংগ্রহ করতে হয় রাষ্ট্রকে। এতে বোঝা যায়, দেশের জনগণ যে টাকা ট্যাক্স দেয়, সরকারকে তা আসলে ব্যাংকগুলোকে বাচিয়ে রাখার জন্য দিতে হয়। কাজেই এ জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে ব্যাংকারদের সচেতন হতে হবে। তা না হলে এখান থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব নয়। কোনো ভালো উদ্যোক্তা কখনওই ইচ্ছা করে খেলাপি হতে চান না। যদি খেলাপি হয়েই যান তখন ওই উদ্যোক্তার জন্য ব্যাংক লাইফ রিলেশনশিপে একটি সুযোগ থাকে। কিন্তু বর্তমানে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে যে খেলাপিগুলো হচ্ছেÑতা আসলে টাকা নিয়ে চলে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও বর্তমানে এ বিষয়গুলো দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), বাংলাদেশ ব্যাংক বা অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো দেখছে। তবে বিষয়টি নিয়ে আরও আগেই সচেতন হওয়া উচিত ছিল।
রিয়াদ মতিন বলেন, পুঁজিবাজার একটি তথ্যভিত্তিক জায়গা। এখানে অধিকাংশ মানুষই তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যমে শেয়ার কেনাবেচা করে। কারণ অনেকের কাছে শুনি অ্যানালাইসিসের মাধ্যমে বিনিয়োগ করেও দেখা যায় যে, পুঁজিবাজার থেকে কোনো ভালো ফল পাওয়া যায় না। অ্যানালাইসিস করে দেখা যায়, যে শেয়ারগুলো বাড়ার কথা কিন্তু হচ্ছে তার উল্টো। ফলে মানুষের একটি প্রবণতা আগে থেকেই আছে শুনে বিনিয়োগ করার। তবে তথ্য বা খবরের গ্রহণযোগ্যতা কতটুক তা বিচার-বিশ্লেষণ করেই শেয়ার সংগ্রহ করা উচিত। আর সঠিক তথ্য বা খবর না হলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়। তাছাড়া পুঁজিবাজারে আসলে ভালো শেয়ারের অভাব রয়েছে। দেশের অধিকাংশ বড় কোম্পানিগুলো বাজারে তালিকাভুক্ত নেই। যে কোম্পানিগুলো বাজারে আছে তার মধ্যে কিছু কোম্পানি বাদে অধিকাংশ কোম্পানির নামই মানুষ জানে না। এছাড়া অনেক দিন যাবৎ বাজারে রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলো ছাড়ার কথা শোনা যাচ্ছে। অথচ এ ব্যাপারে তেমন কোনো ভূমিকা বা পদক্ষেপই আমরা দেখছি না। কাজেই রাষ্ট্রায়ত্ত, বহুজাতিক এবং দেশের ব্যক্তি মালিকানাধীন বড় কোম্পানিগুলোকে যদি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করা যেত তাহলে বাজারের গভীরতা অনেক বাড়ত বলে মনে করি। এ বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থার আরও সচেতন হওয়া দরকার।

শ্রুতিলিখন: রাহাতুল ইসলাম