তথ্য গোপন করে ডিআইজি প্রিজনের জামিন নেওয়ার অভিযোগ দুদকের

নিজস্ব প্রতিবেদক: অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় উপ-মহা কারা পরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) বজলুর রশীদ তথ্য গোপন করে আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন বলে অভিযোগ এনেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তার সেই জামিন বাতিল করতে ঢাকার জজ আদালতে আবেদন করা হয়েছে। আগামী ২২ নভেম্বর সেই আবেদনের শুনানি হবে বলে দুদকের আইনজীবী জানিয়েছেন।

অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় গত ২৯ অক্টোবর ঢাকার বিশেষ জজ ইকবাল হোসেনের আদালত থেকে বজলুরের অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের আদেশ হয়। তার পরের কার্যদিবস রোববার সেই আদেশ বাতিল করতে একই আদালতে আবেদন করেন দুদকের কৌঁসুলি মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর।

গতকাল এ আইনজীবী বলেন, ‘তথ্য গোপন করে অর্থাৎ এর আগে হাইকোর্টের জামিন নামঞ্জুরের আদেশ গোপন করে বজলুরের আইনজীবীরা ঢাকার বিশেষ জজকে অন্ধকারে রেখে জামিন করিয়েছিলেন। যে কারণে দুদকের যথাযথ বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তার জামিন বাতিলের আবেদন করেছি। শুনানির জন্য বিচারক আগামী ২২ নভেম্বর তারিখ ঠিক করেছেন।’

দুদকের এ মামলায় গত ২২ অক্টোবর বজলুর রশীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন একই বিচারক। ওইদিনই তার আইনজীবী জামিন আবেদন করেছিলেন। বিচারক শুনানির জন্য ২৯ অক্টোবর তারিখ ধার্য করেছিলেন।

অভিযুক্ত আসামির কী যুক্তিতে জামিন হলোÑএ প্রশ্নের উত্তরে তখন ওই আদালতের পেশকার মতিউর রহমান বলেছিলেন, ‘তা আমি বলতে পারব না। আমি নথিপত্র দেখিনি। আসামিপক্ষে জামিন চাওয়া হয়েছে, বিচারক তার অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করেছেন। এর বাইরে আমি কিছু জানি না।’

তার জামিন হওয়ার কারণ জানাতে সেদিন ব্যর্থ হয়েছিলেন রাষ্ট্রপক্ষে দুদকের কৌঁসুলি মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীরও। বজলুর রশীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার শেখ ইফতেখার, এসকে আবু সাঈদ প্রমুখ।

তারা বলেছিলেন, বজলুর রশীদের বিরুদ্ধে অন্য কোনো মামলা না থাকায় ওই জামিনের আদেশের ফলে তার মুক্তিতে বাধা নেই।

১৯৯৩ সালে সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পাওয়া বজলুর রশীদ ঢাকায় কারা সদর দপ্তরে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ডিআইজি হিসেবে এর আগে সর্বশেষ ছিলেন রাজশাহীতে।

গত বছরের ৬ অক্টোবর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিপুল পরিমাণ ঘুষের টাকা স্থানান্তর করতে বজলুর রশীদ অভিনব এক পন্থা বেছে নিয়েছেন। কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে শতাধিক ধাপে তিনি পাঠিয়েছেন কয়েক কোটি টাকা। টাকা তুলেছেন তার স্ত্রী রাজ্জাকুন নাহার।

এ জন্য প্রকৃত ঠিকানা গোপন করে স্ত্রীর নামে সিম তোলা হয়েছে এবং সরাসরি নিজে টাকা না পাঠিয়ে নির্ভরযোগ্য ব্যক্তির মাধ্যমে ওই টাকা পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয় ওই প্রতিবেদনে।

এরপর এই কারা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে দুদকের তলবে হাজির হলে ২০ অক্টোবর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওইদিনই দুদকের উপপরিচালক মো. সালাউদ্দিন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন বজলুর রশীদের বিরুদ্ধে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০