নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ভুল তথ্য পাঠিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক। শুধু তা-ই নয়, নির্ধারিত সময় অতিক্রম হলে তথ্য পাঠানোর জন্য চিঠি দিয়ে ব্যাখ্যা তলব করা হয় ব্যাংক বরাবর। তারপরও তথ্য পাঠাতে ছলচাতুরীর আশ্রয় নিয়েছে জনতা। এ কারণে ব্যাংকটিকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক।
এই জরিমানা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য ২০২২ সালের ১৩ মার্চ কেন্দ্রীয় ব্যাংক বরাবর আবেদনও করে জনতা। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৪২০তম বোর্ড সভায় এই আবেদন নাকচ করে দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে সেই টাকা জনতা ব্যাংকের প্রধান শাখা থেকে কেটে নেয়া বা আদায়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
সম্প্রতি ব্যবসায়িক অদক্ষতা ঢাকতে ৩৭৭ কোটি টাকা লোকসান গোপন করে জনতা ব্যাংক। এতে ব্যাখ্যা তলব করা হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে। তবে জনতা ব্যাংক যে জবাব দিয়েছে তাতে লোকসান গোপন করার কারণ উল্লেখ করতে পারেনি। এর কারণেই ব্যাংকটিকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, দুর্বল ট্রেজারি ব্যবস্থাপনার কারণে গত বছর প্রথম নয় মাসে ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগ পুনর্মূল্যায়নের ফলে ব্যাংকটি ক্ষতিতে পড়ে, কিন্তু পরবর্তীকালে নিয়ম ভঙ্গ করে একে পরিচালন ব্যয় হিসেবে উপস্থাপন করে।
ব্যাংকিং বিধিমালা অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো এই পুনর্মূল্যায়নের ক্ষতি পরিচালন ব্যয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে পারে না। বরং এ ধরনের বিনিয়োগজনিত লাভ বা ক্ষতি রূপে তাদের আয় হিসেবে দেখাতে হবে।
এই আর্থিক কারচুপি চিহ্নিত করে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি ব্যালেন্স শিটে অ্যাকাউন্টিং এন্ট্রি প্রবিধান লঙ্ঘনের জন্য সম্প্রতি জনতা ব্যাংককে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়। জবাবে জনতা ব্যাংকও বিষয়টি স্বীকার করেছে। তারা জানায় পরিচালন ব্যয় হিসেবে দেখানো ক্ষতির অঙ্কটি আসলে পরিচালন ব্যয় নয়। এ কারণে ব্যাংটিকে জরিমানা করা হয়েছে।