Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 5:25 am

তথ্য-প্রযুক্তি খাতের কোম্পানিগুলোকে বাজারে আনতে হবে

দেশে প্রযুক্তি খাতের অনেক ভালো কোম্পানি রয়েছে। প্রায় ৩২ দেশে সফটওয়্যারসহ অন্যান্য পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। ২০১৪-১৫ সালে ৩০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার, ২০১৭ সালে ৮০০ মিলিয়ন ডলার এবং ২০১৮ সালে প্রায় এক বিলিয়ন ডলার মূল্যের সফটওয়্যারসহ অন্যান্য পণ্য রপ্তানি হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে সরকার এ খাতে পাঁচ বিলিয়ন সফটওয়্যার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। আমাদের প্রযুক্তি খাতের পণ্যের বাজার ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে। তাই এ খাতের ভালো মানের কোম্পানি বাজারে আনতে হবে। এতে একদিকে বাজার সম্প্রসারিত হবে, অন্যদিকে বাজারে প্রযুক্তি পণ্যও বৃদ্ধি পাবে। বস্ত্র খাতের পরবর্তী অর্থনৈতিক উন্নয়নে এ খাত বড় অবদান রাখবে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। খুজিস্তা নূর-ই-নাহারীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কোম্পানি আইন বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার এমএ মাসুম এবং মাল্টি ব্যান্ড ইনফোটেক লিমিডেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসউদ করিম চৌধুরী। 

ব্যারিস্টার এমএ মাসুম বলেন, পুঁজিবাজার ছাড়া দেশে বড় বিনিয়োগ সম্ভব নয়। আবার ভালো পণ্য ছাড়া বাজার স্থিতিশীল রাখাও সম্ভব নয়। কিন্তু ভালো মানের কোম্পানি বাজারে আসছে না। এসব কোম্পানি বাজারে না আসার অনেক কারণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম বাজারে অন্তর্ভুক্ত হতে অনেক সময় লাগে। কিন্তু বিশ্বের অনেক পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা কোনো কোম্পানি আনতে সর্বোচ্চ ৩০ দিনে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। অথচ আমাদের বাজারে তার বিপরীত চিত্র দেখা যায়। এখানে অনেক সময় ব্যয় হয়। আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে, যেসব কোম্পানি বাজারে অন্তর্ভুক্ত, তাদের চেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা পায় যারা বাজারে অন্তর্ভুক্ত নয়। এ বিষয়টিও বিবেচনায় আনতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের যে কোনো পুঁজিবাজারে সমস্যা দেখা দিলে ৩০ শতাংশের বেশি মিউচুয়াল ফান্ড ভারসাম্য রক্ষা করে। কিন্তু আমাদের দেশের মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর ভূমিকা খুবই নগণ্য। দুঃখের বিষয়, বাজারে তাদের তিন শতাংশেরও কম ভূমিকা রয়েছে। আবার শোনা যাচ্ছে, এসব ফান্ডের ম্যানেজাররা ইচ্ছামতো বাজারে অন্তর্ভুক্ত ইক্যুইটি পণ্যের বাইরেও বিনিয়োগ করে। এ বিষয়টি নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। যার ফলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা অনেক কমে গেছে। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বিনিয়োগকারীদের অধিকার রয়েছে ইচ্ছামতো বিনিয়োগের। এতে যদি পরিবর্তন আসে, তাহলে দেখা যাবে ভবিষ্যতে যেসব মিউচুয়াল ফান্ড আসবে, তারা সতর্ক হয়ে যাবে। চাইলেই ইচ্ছামত বিনিয়োগ করা যাবে না। 

মাসউদ করিম চৌধুরী বলেন, দেশে প্রযুক্তি খাতের ভালো ভালো কোম্পানি রয়েছে। প্রায় ৩২ দেশে সফটওয়্যারসহ অন্যান্য পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। ২০১৪-১৫ সালে ৩০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার, ২০১৭ সালে ৮০০ মিলিয়ন ডলার এবং ২০১৮ সালে প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের সফটওয়্যারসহ অন্যান্য পণ্য রপ্তানি হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে সরকার এ খাতে পাঁচ বিলিয়ন মূল্যের সফটওয়্যার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। আমাদের প্রযুক্তি খাতের পণ্যের বাজার ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে। তাই এ খাতের ভালো মানের কোম্পানি বাজারে আনতে হবে। এতে একদিকে বাজার সম্প্রসারিত হবে, অন্যদিকে বাজারে আইটি পণ্য বৃদ্ধি পাবে। এ খাতের গুটিকয়েক কোম্পানি বাজারে রয়েছে। এটি বস্ত্র খাতের পরবর্তী অর্থনীতির উন্নয়নে অবদান রাখবে। বর্তমানে বস্ত্র খাত থেকে দেশের মোট রপ্তানির ৮৩ থেকে ৮৪ শতাংশ রাজস্ব আসছে। এটি দেশের জন্য সুখকর নয়। কারণ, কোনো কারণে যদি বস্ত্র খাতে সমস্যা দেখা দেয়, তার বিপরীতে দ্বিতীয়  কোনো খাত নেই যে খাতের ওপর ভরসা করা যায়। আবার আমরা কৃষিপণ্যও রপ্তানি করছি; কিন্তু সেটি আশানুরূপ নয়। তাই এখন সময় এসেছে সরকারের এ বিষয়গুলো বিবেচনার এবং প্রযুক্তি খাতের আরও উন্নয়নে কাজ করার।

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ