তরীতে জ্বলে শিক্ষার প্রদীপ

 

আরিফুল ইসলাম ও নিশাত ফারজানা: আর্থিক অসচ্ছলতা ও সচেতনতার অভাবে অনেক শিশু শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। সুবিধাবঞ্চিত এমন শিশুদের শিক্ষাদানে চেষ্টা করছে ‘তরী’। এটি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এ সংগঠনের মাধ্যমে জাবির শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছায় শিশুদের শিক্ষা দিয়ে থাকে।

শিক্ষাবঞ্চিত শিশুকে শিক্ষার আলোয় পৌঁছে দেওয়া তরীর মূল লক্ষ্য। এ সংগঠনের যাত্রা প্রায় সতেরো বছর আগে, ১৯৯৯ সালে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯তম ব্যাচের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থীর হাতে গড়ে ওঠে এ সংগঠন। সংগঠনের হয়ে স্বেচ্ছায় কাজ করে যাচ্ছেন বিভাগের সাকিব ইসলাম, রেখা আকতার, রায়হান করিম, রোহিত রায়, শাহিদা খাতুনসহ আরও অনেকে। সার্বিক কার্যক্রম দেখভাল করেন ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র শফিকুল ইসলাম সাকিব, তৃতীয় বর্ষের রায়হান এইচ মিল্টন, দ্বিতীয় বর্ষের জাকিউল বারী।

শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিয়ে মানসিক আত্মতৃপ্তি পান স্বেচ্ছাসেবীরা। মানবতাবোধ থেকেই তারা শিক্ষাদান করে যাচ্ছেন। কোনো ধরনের আর্থিক স্বার্থ নয় বরং পুরোপুরি মানবসেবার মনোভাব নিয়েই তারা শিক্ষার তরী বেয়ে যাচ্ছেন নিরন্তর।

জাবি ক্যাম্পাসের আশপাশের এলাকা থেকে অনেক শিশু-কিশোর তরীতে পড়ালেখার জন্য আসে। তাদের অধিকাংশের শিক্ষাজীবন শুরু হয়েছে এখানে। বর্তমানে প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে তরীতে। সপ্তাহে তিন দিন তারা এখানে পড়তে আসে। প্রতিটি বিষয় যতœসহকারে বোঝানোর চেষ্টা করেন তরীর সদস্যরা।

তবে এখানে শিক্ষকসংকট রয়েছে। পাশাপাশি উপবৃত্তির ব্যবস্থা না থাকায় অনেক শিশু আর পড়তে আসে না। আগে ইউনিসেফ ও নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তিন ধাপে প্রায় ১০০ শিশু-কিশোরকে উপবৃত্তি দেওয়া হয়। এমন সহায়তা পেলে ভবিষ্যতে তরীতে পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বাড়বে বলে আশাবাদী স্বেচ্ছাসেবকরা।

প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও তরী তার শিক্ষার প্রদীপ জ্বেলে রেখেছে। তরীর যাত্রী হয়ে আজকের শিশুরাও একদিন সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবে। নিজেদের ভরণপোষণ মিটিয়ে তরীর হাল ধরবে, এমন আশা রাখেন সংশ্লিষ্টরা।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০