এ এম আরিফ: ব্যাংকের চাকরিতে আছে মোটা অঙ্কের বেতন। সরকারি চাকরিতে আছে, জীবনভর নিশ্চয়তা। এনজিওতে মানবসেবা, বহুমুখী কেম্পানিতে নানা দেশ ভ্রমণ। এখান থেকে কোনটাকে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নেব?
‘আমি আইনে পড়ি, আমি ব্যাংকের লিগ্যাল অ্যাডভাইজার হতে চাই, কীভাবে শুরু করবো’? ‘আমি সাংবাদিকতায় পড়ি, এনজিওতে কাজ করার ইচ্ছে আমার’। ‘আমি আইটিতে পড়ি, জাপানে মাস্টার্স ও পিএইচডি করতে চাই। কিন্তু স্বপ্নের সোনার হরিণটার নাগাল পাবো কীভাবে’?
ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে আয়োজিত হয়ে গেলো ‘ন্যাশনাল লিডার্স সামিট-২০১৭’। সেখানে এভাবেই নিজেদের স্বপ্নগুলো ভাগ করে নিচ্ছিলেন নানা সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যারিয়ার ক্লাবের উদ্যোগে এ সামিটের আয়োজন করা হয়।
সম্মেলনের মূল অনুষ্ঠানে ছিল ছয়টি পর্বে বিভক্ত। পাঁচটি প্যানেল ডিসকাশন ও একটি লাইভ ইন্টারভিউও ছিল। প্যানেল ডিসকাশনগুলো সাজানো হয় ব্যাংক, সরকারি সংস্থা, এনজিও, উদ্যোক্তা ও মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির কর্মকর্তাদের নিয়ে। প্যানেল ডিসকাশনগেুলোতে অংশগ্রহণ করেন স্ব-স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত দেশি তরুণরা।
আমন্ত্রিত অতিথিরা তাদের সফলতার গল্প শোনানোর পাশাপাশি কাজের সুবিধা, সম্ভাবনা ও এসব ক্ষেত্রে কীভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়া যায় তার দিক নির্দেশনা দেন। সবশেষে অনুষ্ঠিত হয় সরাসরি প্রশ্নপর্ব ও উত্তর প্রদান।
ব্যাংকারদের আলোচনা পর্বে অংশ নেন সিটি ব্যাংক লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ আবদুল ওয়াদুদ ও ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের নির্বাহী সহ-সভাপতি মোহাম্মদ তৌফিক এলাহী। তারা ব্যাংকে চাকরির ধরন, ব্যস্ততা, ক্যারিয়ারের নিশ্চয়তা ও সুবিধাগুলো তুলে ধরেন।
পরের পর্বে সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম ও কাস্টমসের সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল আহাদ। তারা সরকারি চাকরির ধরন, অবস্থা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ নিয়ে কথা বলেন। এ পর্বে একজন শিক্ষার্থী প্রশ্ন করেন, সরকারি চাকরি করতে হলে সুপারিশের প্রয়োজন পড়ে। এর বাস্তবতা কতটুকু? তাদের উত্তর ছিল, ‘যোগ্যতা থাকলে একাই সব করা যায়, কারো সুপারিশের প্রয়োজন হয় না।’
আলোচনা পর্বে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল, তিন তরুণ উদ্যোক্তার সঙ্গে সময় কাটানো। তারা হলেন- ঢাকা টোস্টমাস্টার্স ক্লাবের সভাপতি মোরশেদ হায়দার, চালডাল ডটকমের সহ-প্রতিষ্ঠাতা জিয়া আশরাফ ও ড্রাইভারবিডি ডটকমের সিইও লুতফি চৌধুরী। উদ্যোক্তারা তাদের প্রতিষ্ঠিত হওয়ার গল্প শোনান। কীভাবে শুরু করেছিলেন। কী রকম বাধা এসেছিল। কীভাবে সবকিছু অতিক্রম করে সফলতার খোঁজ পেলেন, এসব নিয়েই ছিল পর্বটি।
শেষের পর্বটি ছিল ইন্টারভিউ বোর্ড নিয়ে। এ পর্বে বক্তারা অলোচনা করেন, কীভাবে ভাইভা বোর্ডের ভীতি দূর করা যায়। ভাইভা বোর্ড নিয়ে মজার মজার সব অভিজ্ঞতার খবরও উঠে এসেছে বক্তাদের স্মৃতিচারণায়।
শিক্ষার্থী