তরুণীকে বিবস্ত্র করে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ২, খণ্ডিত মাথা উদ্ধার

প্রতিনিধি, খুলনা: খুলনার ফুলতলায় ধর্ষণের পর হত্যা করা তরুণী মুসলিমার পরিচয় নিশ্চিতের পর তার খণ্ডিত মাথা উদ্ধার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। সেই সঙ্গে এ ঘটনায় জড়িত দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার সোহেল ও রিয়াজ নামের দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়।

পরে আজ শনিবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে ফুলতলার যুগ্নিপাশায় একটি নির্মাণাধীন ভবনের বাথরুম থেকে তার মাথা উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব-৬ এর পরিচালক লে. কর্ণেল মুহাম্মদ মোসতাক আহমদের নেতৃত্বে এ উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হয়।

অভিযানের পর ঘটনাস্থলথেকে তাৎক্ষণিক প্রেস ব্রিফিংয়ে র‌্যাব পরিচালক বলেন, হত্যাকাণ্ডের তিনদিন আগে রিয়াজের সঙ্গে মুসলিমার পরিচয় হয়। এরপর তারা এক সঙ্গে দেখা করার জন্য মনস্থির করে। এজন্য রিয়াজ তার সঙ্গে সোহেলকে রাখে।

ঘটনার দিন রাত ৮ বা ৯টার দিকে মেয়েটিকে এই নির্মাণাধিন ভবনে নিয়ে এসে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে তাকে ২ ঘণ্টা ধরে পাশবিক নির্যাতন করা হয়। পরে মেয়েটিকে বাড়ি পৌঁছে দেয়ার কথা বলে রাস্তায় নিয়ে যায় গ্রেপ্তারকৃতরা। পরে পথে পেছন দিক থেকে গলা মোচর দিয়ে চেপে ধরলে মেয়েটি মাটিতে পরে যায়। তখন মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলা ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে টেনে ধরে রাখে রিয়াজ ও সোহেল।

বিষয়টি অন্যখাতে প্রবাহিত করার জন্য গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় তারা। পরে ওই দুই যুবক তরুণীর মরদেহ কাঁধে করে নিয়ে ওই বাড়িতে রাখে। এসময় তারা মরদেহকে বিবস্ত্র করে ফের পাশবিক নির্যাতন করে। পরে নিজেদের বাড়ি থেকে বটি এনে মেয়েটির মাথা বিচ্ছিন্ন করে তরুণীর পরনের কাপড় দিয়ে সেই মাথা ঢকে রেখে ওই বাড়ির বাথরুমে লুকিয়ে রাখে। আর মৃতদেহ পাশের একটি ধান ক্ষেতে ফেলে দিয়ে নিজেদের বাড়িতে চলে যায়।

র‌্যাব পরিচালক আরও জানান,  ঘটনার পরদিন বুধবার (২৬ জানুয়ারি) সকালে ফুলতলার উত্তরডিহি এলাকার ধান ক্ষেত থেকে মুসলিমার মাথাবিহীন বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে মরদেহের আঙ্গুলের ছাপের মাধমে পরিচয় শনাক্ত করা হয়। এরপর মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার ২৭ জানুয়ারি দাফন করা হয়।

ঘটনার পর মুসলিমার বোন আকলিমা খাতুন বাদী হয়ে ফুলতলা থানায় অজ্ঞাত ৫/৬ ব্যক্তিকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা (নং-১৩) করেছেন। এজারে তিনি প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে মোবাইলে ডেকে নিয়ে মুসলিমাকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।

র‌্যাব পরিচালক বলেন, ঘটনার পর কললিস্টের সূত্র ধরে অভিযানে নামে র‌্যাব। পরে ফরিদপুর থেকে রিয়াজকে ও ফুলতলা এলাকা থেকে সোহেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী নিহত তরুণীর কাটা মাথা ও হত্যার কাজে ব্যবহৃত বটি উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রিয়াজ এর আগেও প্রতারণার মাধ্যমে অনেক মেয়ের সম্ভ্রম নষ্ট করার বিষয়ে স্বীকার করে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০