তহবিল ও ডলার সংকটে আদানির বিল বকেয়া পড়েছে ৫ মাসের!

বিশেষ প্রতিনিধি: পরীক্ষামূলকভাবে আদানির বিদ্যুৎ আসা শুরু হয় মার্চে। প্রায় এক মাস পর ৬ এপ্রিল থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করে ভারতের এ কোম্পানিটি। তবে দ্বিতীয় ইউনিট চালুর পর জুলাই থেকে নিয়মিত এক হাজার ৩৫০ থেকে এক হাজার ৪২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে আদানি। যদিও আদানিকে শুধু পরীক্ষামূলক সময়ের ১৭ মিলিয়ন ডলার বিল পরিশোধ করা হয়েছে। এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত বিল বকেয়া পড়েছে কোম্পানিটির।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) তথ্যমতে, পুরোদ্যমে উৎপাদন শুরুর পর আদানির প্রতি ইউনিটের বিদ্যুতের দাম পড়ছে প্রায় ১১ টাকা। এর মধ্যে জ্বালানি বিল প্রায় সাত টাকা ও ক্যাপাসিটি চার্জ চার টাকার কিছু বেশি। এ হিসাবে দৈনিক গড়ে এক হাজার ৩৮৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য আদানিকে শুধু জ্বালানি বিল দিতে হবে ৬২ মিলিয়ন ডলার। এর সঙ্গে ক্যাপাসিটি চার্জ যুক্ত হলে এক মাসের বিল পড়বে গড়ে ৯৫ মিলিয়ন ডলার। এ হিসাবে জুলাই ও আগস্টের বিলই প্রায় ১৭০ মিলিয়ন ডলার।

এর আগে এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত আদানির একটি ইউনিট চালু ছিল। ওই সময়ের শুধু জ্বালানি বিলের পরিমাণ প্রায় ১২৫ মিলিয়ন ডলার। এর সঙ্গে ক্যাপাসিটি চার্জ যুক্ত হয়ে তিন মাসের বিল বকেয়া ছিল প্রায় ২১০ মিলিয়ন ডলার। এ হিসাবে এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৩৮০ মিলিয়ন ডলার বিল বকেয়া পড়েছে। এর মধ্যে জুলাই পর্যন্ত ৩১০ মিলিয়ন ডলার বিল ছাড়ার জন্য পিডিবিকে চিঠি দিয়েছে আদানি।

সূত্র জানায়, পিডিবি এপ্রিলের সম্পূর্ণ ও মে মাসের আংশিক বিল বাবদ ৯২ মিলিয়ন ডলারের এলসি খোলার জন্য স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়াকে গত ৫ সেপ্টেম্বর চিঠি দিয়েছে। এলসি খোলা হলে একাধিক কিস্তিতে এ বিল পরিশোধ করা হবে। এর আগে ২৫ ও ২৬ জুলাই মার্চের পরীক্ষামূলক সময়ের বিদ্যুৎ বিল আদানিকে পরিশোধ করা হয়।

জানতে চাইলে পিডিবির একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ করার শর্তে বলেন, পিডিবির বর্তমানে বড় ধরনের তহবিল সংকট রয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছর ঘাটতি পূরণে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি চাওয়া হয়েছিল। তবে এর মধ্যে মাত্র সাত হাজার ৩০০ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। গতকাল পর্যন্ত আগের অর্থবছরের ভর্তুকি চাহিদার ১০ হাজার কোটি টাকা ছাড় করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এতে বড় ধরনের তহবিল সংকটে পড়েছে পিডিবি।

তারা আরও বলেন, তহবিল পেলেও ব্যাংকগুলোতে ডলার সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। চাহিদামতো ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। এজন্য আদানির বিল

পরিশোধে এলসি খোলার জন্য স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়াকে চিঠি দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় ডলার সরবরাহ নিশ্চিত করা হলে আদানিকে ৯২ মিলিয়ন ডলার বিল দেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, ভারতের ঝাড়খণ্ডের গড্ডায় নির্মিত আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রটির সক্ষমতা এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট। তবে চুক্তি অনুযায়ী কেন্দ্রটি থেকে সর্বোচ্চ এক হাজার ৪৫৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০