Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 12:48 am

তামাক নিয়ন্ত্রণে বিদ্যমান আইন যুগোপযোগী করা আবশ্যক

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোটের সচিবালয়ের সভাকক্ষে গতকাল ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫-এর সংশোধন’ বিষয়ক একটি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোটের আয়োজনে সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জোটের সমন্বয়কারী সাইফুদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এইড ফাউন্ডেশনের প্রকল্প পরিচালক শাগুফতা সুলতানা। বিশেষজ্ঞ আলোচক ছিলেন প্রত্যাশা মাদকবিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ, স্কোপের নির্বাহী পরিচালক কাজী এনায়েত হোসেন। গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ৭১ টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি সুশান্ত সিনহা, বাংলাদেশ পোস্টের সিনিয়র রিপোর্টার আমিনুর রহমান রনি, মর্নিং গ্লোরি পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হিসান খতিব, প্রজন্মের আলোর সম্পাদক মো. আব্দুর রহমান রিজভী, সমকাল ও দ্য নিউ ন্যাশনের বরগুনা প্রতিনিধি এমএ মতিন আকন্দ, দৈনিক সুপ্রভাতের নিজস্ব প্রতিনিধি মো. নাসির উদ্দিন অনিকসহ আরও কয়েকজন গণমাধ্যম প্রতিনিধি। এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোটের সদস্য সংগঠন সিয়ামের নির্বাহী পরিচালক মাসুম বিল্লাহ, ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চের প্রকল্প কর্মকর্তা ইব্রাহীম খলিল প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্টের হেড অব প্রোগ্রাম সৈয়দা অনন্যা রহমান।

বক্তারা বলেন, তামাক ব্যবহারের মাত্রাকে যদি এখনই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না হয় তাহলে অদূর ভবিষ্যতে তামাকজনিত রোগের চিকিৎসা ব্যয় সরকারের একার পক্ষে বহন করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়বে। ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইনটি সংশোধনের মাধ্যমে যুগোপযোগী করা বর্তমানে সময়ের দাবি। বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছে। প্রস্তাবিত খসড়া অনুসারে, তামাক পণ্য খুচরা বিক্রি, ই-সিগারেট, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক কার্যক্রম, ভ্রাম্যমাণ দোকানের মাধ্যমে তামাক পণ্য বিক্রয় এবং বিনোদন মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচার নিষিদ্ধ, তামাকজাত পণ্য বিক্রয়ে বাধ্যতামূলকভাবে লাইসেন্স গ্রহণ, স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজিং ইত্যাদি বিষয়গুলো অবশ্যই গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। এর পাশাপাশি ধূমপানমুক্ত স্থানে তামাক পণ্য বিক্রয় নিষিদ্ধ এবং ‘এফসিটিসির আর্টিক্যাল ৫.৩ অনুসারে তামাক কোম্পানির প্রভাব থেকে নীতি সুরক্ষা’ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের বিধান আইনে থাকা জরুরি। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি যুগোপযোগী না করা গেলে তামাক নিয়ন্ত্রণে কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হবে না। শুধু জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন নয়, প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যয় অনুসারে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে আইনটিকে শক্তিশালী করার বিকল্প নেই। আইনের সংশোধন জনস্বাস্থ্য উন্নয়নের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যয় অনুসারে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার অঙ্গীকার বাস্তবায়ন বাংলাদেশকে আরও একধাপ এগিয়ে দেবে। বক্তারা তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটির খসড়া, বিধিমালা প্রণয়ন ও প্রবর্তনে গণমাধ্যমকর্মীদের অবদানের কথা তুলে ধরেন এবং বর্তমান আইনটি সংশোধনেও গণমাধ্যমের আন্তরিক সহায়তা প্রত্যাশা করেন।

বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোটের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়ে বর্তমান ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইনটি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবনা এবং বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোটের সুপারিশ অনুযায়ী সংশোধনের মাধ্যমে যুগোপযোগী ও শক্তিশালী করা; তামাক কোম্পানি থেকে সরকারের শেয়ার প্রত্যাহারে পদক্ষেপ নেয়া; কোম্পানির প্রভাব থেকে জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে সহায়ক নীতিগুলো সুরক্ষায় এফসিটির আর্টিক্যাল ৫.৩ অনুসারে সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন ও কোড অব কন্ডাক্ট প্রণয়ন; তামাক নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বাংলাদেশে বিদ্যমান আইন ও নীতিগুলো যুগোপযোগী করা এবং শিল্প উন্নয়ন পুরস্কারের মতো রাষ্ট্রীয় পুরস্কার প্রদানের ক্ষেত্রে তামাক উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোকে অযোগ্য ঘোষণা করা।