Print Date & Time : 24 June 2025 Tuesday 12:37 pm

তারেক ও জোবাইদার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

নিজস্ব প্রতিবেদক: চার মামলায় সাজার রায় মাথায় নিয়ে ‘পালিয়ে থাকা’ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার স্ত্রী জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। ঘোষিত আয়ের বাইরে সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় অভিযোগপত্র গ্রহণ করে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. আছাদুজ্জামান গতকাল মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।

তাদের গ্রেপ্তার করা গেল কি না, সে বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী বছরের ৫ জানুয়ারি তারিখ রেখেছেন বিচারক। দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, তারা দুজনেই এ মামলায় পলাতক। তারা দেশের বাইরে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান, তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান ও শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে কাফরুল থানায় এ মামলা করে দুদক। সেখানে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন এবং মিথ্যা তথ্য দেয়ার অভিযোগ আনা হয়। মামলায় তারেক রহমানকে সহায়তা ও তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয় জোবাইদা ও তার মায়ের বিরুদ্ধে।

এর মধ্যে ২০০৮ সালের ৩১ মার্চ এ মামলায় অভিযোগপত্র দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন। তারেকের শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানু মারা যাওয়ায় পরে তাকে এ মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়।

এ মামলার বৈধতা প্রশ্নে তিনটি রিট করেছিলেন আসামিরা; হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুলও দিয়েছিলেন। দীর্ঘ বিরতির পর সেই রুলের ওপর শুনানি করে গত ২৬ জুন তা খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে এ মামলার নথিপত্র ঢাকার মহানগর বিশেষ জজ আদালতে পাঠাতে এবং জজ আদালতে দ্রুত এ মামলার নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত।

ওই আদেশের ফলে দীর্ঘ ১৪ বছর পর মামলাটি বিচারের পথ খোলে। পাশাপাশি তারেক-জোবাইদাকে ‘পলাতক’ বিবেচনা করে, তাদের পক্ষে কোনো আইনজীবী এ মামলা পরিচালনা করতে পারবে না বলে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চের রায়ে জানানো হয়।

এর আগে আপিল বিভাগ গত ১ জুন এ মামলায় জোবাইদা রহমানকে পলাতক ঘোষণা করে সিদ্ধান্ত দেন, আত্মসমর্পণ না করা পর্যন্ত জোবাইদার পক্ষে আদালতে কোনো আবেদন করা হলে তার ওপর শুনানি করা ‘আইনসম্মত হবে না’।

নৌবাহিনীর সাবেক প্রধান মাহবুব আলী খানের মেয়ে জোবাইদা ১৯৯৫ সালে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে যোগ দিয়েছিলেন। তার দুই বছর আগে তারেকের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।

খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক ২০০৮ সালে কারামুক্তির পর স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে যান। ছুটি নিয়ে যাওয়ার পর আর কর্মস্থলে না ফেরায় ২০১৪ সালে জোবাইদাকে বরখাস্ত করে সরকার। তারা এখন সেখানেই থাকেন।

বিদেশে থেকেই বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তারেক; তার মা খালেদা জিয়া ২০১৮ সালে দুর্নীতির মামলায় দণ্ড নিয়ে কারাগারে যাওয়ার পর থেকে তিনিই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। এর মধ্যেই চারটি মামলায় তার বিরুদ্ধে সাজার রায় এসেছে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে দুই বছর, অর্থ পাচারের দায়ে সাত বছর, জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছর এবং একুশে আগস্টের গ্রেনেড মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মাথায় নিয়ে বিদেশে পালিয়ে আছেন তারেক।