তিন কারণে মাধ্যমিকে রেকর্ড পাস: শিক্ষামন্ত্রী

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) এবং সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এবার পাস করেছে ৯৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ শিক্ষার্থী, যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ। কভিড মহামারিকালে পরীক্ষার ফলাফলে এ রেকর্ডের পেছনে তিনটি কারণ খুঁজে পাওয়ার কথা বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

গতকাল বৃহস্পতিবার ফল প্রকাশের পর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, মহামারির কারণে এবার শুধু তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ের পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। সেই পরীক্ষা হয়েছে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের ওপর। প্রশ্নপত্রে বিকল্প ছিল অনেক বেশি। এসব কারণেই হয়তো আমাদের শিক্ষার্থীরা অনেক বেশি ভালো করেছে, তুলনামূলকভাবে অন্য সময়ের চেয়ে।

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর স্কুলের গণ্ডি পেরোনো এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে, যা উত্তীর্ণের মোট সংখ্যার আট দশমিক ১৮ শতাংশ। এ হিসেবে এবার পাসের হার বেড়েছে ১০ দশমিক ৭১ শতাংশ পয়েন্ট। আর পূর্ণাঙ্গ জিপিএ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ৪৭ হাজার ৪৪২ জন। গত বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেছিল ৮২ দশমিক ৮৭ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছিল এক লাখ ৩৫ হাজার ৮৯৮ জন। জিপিএ-৫ এ শীর্ষে ঢাকা বোর্ড, পাসের হারে শীর্ষে ময়মনসিংহ বোর্ড। মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা দুই লাখের বেশি বাড়ায় তুলনামূলকভাবে জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের মোট সংখ্যাও বেড়েছে বলে মনে করছেন শিক্ষামন্ত্রী। আর ছয় দশমিক ৪২ শতাংশ শিক্ষার্থীর অকৃতকার্য হওয়ার পেছনে মহামারির মধ্যে ‘বাড়তি’ মানসিক চাপকে বড় কারণ হিসাবে দেখিয়েছেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘পরীক্ষায় পাসের হার বেড়েছে, সেটা ভালো। আবার এই সময়ে মানসিক চাপের মধ্য দিয়েও আমাদের পরীক্ষার্থীরা গিয়েছে, পারিবারিক থেকে শুরু করে নানা ধরনের সমস্যা ছিল। কভিডের কারণে বাড়তি অনেক চাপ ছিল, অনেক ট্রমার মধ্য দিয়েও গিয়েছে, ঘনিষ্ঠ আত্মীয় স্বজন বা পরিবারের কাউকে হারিয়েছে তারা। এই রকম অনেক অবস্থা ছিল, সেগুলোকেও আমাদের বিবেচনায় নেয়ার প্রয়োজন আছে।

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘অনেকের অনেক ধরনের প্রতিবন্ধকতা থাকে, অনেকের প্রতিবন্ধিতা থাকে, অনেকের অনেক সমস্যা থাকে। কেউ পরীক্ষার সময় অসুস্থ হয়ে যায়, কেউ পরীক্ষার সময় হঠাৎ করে ভয় পেয়ে যায়, অনেক রকম কারণে হতে পারে।

‘আমরাও আমাদের জীবনে অনেক দূর পার করে এসেছি, আমাদের জীবনেও সব সময় এক রকম হয় না। এমনকি ভালো পড়াশোনা করেছে, প্রস্তুতি ছিল, তারপরেও অনেক সময় পরীক্ষা ভালো হয় না। এটি ঘটে।’

মহামারির মধ্যে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে তিনটি করে নির্বাচিত বিষয়ের পরীক্ষা হয়েছে। বাকি আবশ্যিক বিষয়গুলোর মূল্যায়নে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে পরীক্ষার্থীদের জেএসসি-জেডেসির ফলাফল, যেটাকে বলা হচ্ছে ‘সাবজেক্ট ম্যাপিং।’ সব মিলিয়েই এবারের পরীক্ষা ফল ঘোষণা করা হয়েছে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘যেগুলো নৈর্বাচনিক বিষয়, সেগুলোর তো পরীক্ষা হয়েছে। যেগুলো আবশ্যিক বিষয়, যেমন ধরুন বাংলা বা ইংরেজিতে সরাসরি জেএসসি-জেডেসিতে যে নম্বরগুলো পেয়েছে, সেগুলো নেয়া হয়েছে।

মাধ্যমিকে শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রেখেছে মেয়েরা এসএসসিতে ভালো ফলে এবারও এগিয়ে বিজ্ঞান বিভাগ  ‘চতুর্থ বিষয়ের ক্ষেত্রে, যে তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ের পরীক্ষা হয়েছে, সেগুলো ছাড়া চতুর্থ বিষয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ জেএসসি বা জেডিসি পর্যায়ের আবশ্যিক বিষয় থেকে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।’

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে মন্ত্রী বলেন, ‘যেমন ধরুন, যার চতুর্থ বিষয় উচ্চতর গণিত ছিল, তারতো জেএসসি-জেডিসিতে উচ্চতর গণিত বলে কিছু ছিল না। সে জেএসসি-জেডেসিতে গণিতে যা পেয়েছে সেই নম্বরটি থেকে আমরা এখানে নম্বর নিয়ে এসেছি।

‘আবার, যে চতুর্থ বিষয় জীববিজ্ঞান, তার জেএসসি-জেডিসির বিজ্ঞানের নম্বরটি সেটাকে আমরা নিয়ে এসেছি। সাবজেক্ট ম্যাপিং এভাবে হয়েছে।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০