তিন কোম্পানিতে ন্যাশনাল ফিডের অস্বচ্ছ লেনদেন

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিবিধ খাতের কোম্পানি ন্যাশনাল ফিড মিল লিমিটেডের ব্যবসায়িক লেনদেনে অস্বচ্ছতার প্রমাণ মিলেছে। ন্যাশনাল ইলেকট্রোড অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস, কর্ণপুর এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ এবং ন্যাশনাল হ্যাচারি লিমিটেড এই তিন কোম্পানিকে কোনো বিবেচনা ছাড়াই পাঁচ কোটি ৬০ লাখ ২৫ হাজার ৩৬২ টাকা দিয়েছে ন্যাশনাল ফিড মিল লিমিটেড। কোনো বিবেচনা ছাড়াই লেনদেন করার জন্য কোম্পানিটির নিরীক্ষক আপত্তি জানিয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে প্রকাশিত কোম্পানির নিরীক্ষকের প্রতিবেদনের মাধ্যমে এ তথ্য জানা গেছে।

কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে প্রকাশিত অগ্রিম, জমা এবং অগ্রিম পরিশোধ হিসেবে ছয় কোটি ৯৭ লাখ ৬১ হাজার ৯৪২ টাকা দেখানো হয়েছে এর মধ্যে ২২ লাখ ৫৪ হাজার ৩১০ টাকা কোনো ব্যবসায়িক লেনদেন ও বিবেচনা ছাড়াই ন্যাশনাল ইলেকট্রোড অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস লিমিটেডকে দিয়েছে ন্যাশনাল ফিড মিল।

কর্ণপুর এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কাছে এক কোটি ৩৬ লাখ ৬৪ হাজার ৯৭৫ টাকা, এর মধ্যে ৬৮ লাখ ৯ হাজার ২৪২ টাকার বিক্রয়জনিত পাওনা আর বাকি ৬৮ লাখ ৫৫ হাজার ৭৩৩ টাকা কোনো বিবেচনা ছাড়াই দিয়েছে ন্যাশনাল ফিড। এবং ন্যাশনাল হ্যাচারি লিমিটেডের কাছে পাঁচ কোটি ৩৮ লাখ ৪২ হাজার ৬৫৭ টাকা, এর মধ্যে ৬৯ লাখ ২৭ হাজার ৩৩৮ টাকা বিক্রয়জনিত পাওনা এবং বাকি চার কোটি ৬৯ লাখ ১৫ হাজার ৩১৯ টাকা কোনো বিবেচনা ছাড়াই দেওয়া হয়েছে।

এদিকে সম্প্রতি কোম্পানিটির প্রথম (জুলাই-সেপ্টেম্বর, ২০২০) প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। আলোচিত সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২৭ পয়সা, আগের বছর একই সময় ছিল ১৩ পয়সা। আর ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ১৩ টাকা ১৬ পয়সা, যা ২০২০ সালের ৩০ জুন তারিখে ১২ টাকা ৭৬ পয়সা। এই প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে দুই পয়সা অথচ আগের বছর একই সময় ছিল পাঁচ পয়সা।

কোম্পানিটি ২০১৫ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘বি’ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে। কোম্পানির ২০০ কোটি অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ৮৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট আট কোটি ৫৫ লাখ ৮৯ হাজার ৭৭৪টি শেয়ার রয়েছে। এর মধ্যে উদ্যোক্তা বা পরিচালকদের কাছে ৩০ দশমিক ৪০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক ২৭ দশমিক ৫২ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৪২ দশমিক শূন্য আট শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

এদিকে গতকাল ডিএসইতে কোম্পানির শেয়ারদর শূন্য দশমিক ৫৭ শতাংশ বা ১০ পয়সা কমে প্রতিটি সর্বশেষ ১৭ টাকা ৪০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দরও ছিল ১৭ টাকা ৪০ পয়সা। ওইদিন কোম্পানিটির ২০ লাখ ২৮ হাজার ৯২৯টি শেয়ার মোট ৬৭২ বার হাতবদল হয়। যার বাজারদর তিন কোটি ৫৩ লাখ ২০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। ওইদিন শেয়ারদর সর্বনি¤œ ১৭ টাকা ২০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ১৭ টাকা ৮০ পয়সায় হাতবদল হয়। গত এক বছরে কোম্পানির শেয়ারদর সাত টাকা ৩০ পয়সা থেকে ২০ টাকা ৪০ পয়সায় ওঠানামা করে।

২০২০ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দুই শতাংশ নগদ (উদ্যোক্তা ব্যতীত) ও আট শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে কোম্পানিটি। আলোচিত সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ১৭ পয়সা, আর ২০২০ সালের ৩০ জুন শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ১২ টাকা ৭৬ পয়সা। ওই সময় শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ছয় পয়সা। ঘোষিত লভ্যাংশ বিনিয়োগকারীদের অনুমোদনের জন্য আগামী ১৫ ডিসেম্বর সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০