নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর বনানীর টিঅ্যান্ডটি বস্তিতে গতকাল ভোররাতে আগুন লেগে দুই শতাধিক ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। পরে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার চেষ্টায় দমকলকর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরের ডিউটি অফিসার রাসেল শিকদার জানান, ওই বস্তিতে রাত সাড়ে ৩টার দিকে আগুন লাগে। মুহূর্তেই তা আশেপাশের ঘরগুলোয় ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ২২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে সকাল ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। কীভাবে এ আগুনের সূত্রপাত হয়েছে, তা জানা যায়নি। তবে গ্যাস লিকেজ অথবা ইলেকট্রিক শর্টসার্কিট থেকে আগুন লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভোরের আলো ফুটতেই গৃহহীন মানুষ পুড়ে যাওয়া ঘরগুলোয় কিছু টিকে আছে কি না, খোঁজ নিতে শুরু করে। ক্ষতিগ্রস্তদের একজন মালেক বলেন, ‘কিছুই নেই। সব কয়লা।’ আগুনে হতাহত হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যদি গভীর রাতে আগুন লাগত, তবে কেউ বাঁচত না।’
পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া ধ্বংসস্তূপের মধ্যে নিজের অবশিষ্ট কিছু খোঁজার চেষ্টা করা মাইমুনা বেগম বলেন, ‘কষ্টের টাকা জমাইয়া ঘরের সবকিছু কিনছিলাম। ঘরে কিছু ক্যাশ টাকাও আছিল। ঘুমের মধ্যেই আগুন আগুন চিল্লানি শুইনা কোনোমতে জানডা লইয়া বাইর হইছি। পরনের কাপড়ডা ছাড়া ঘরের কিছু বাইর করতে পারি নাই। সব পুইড়া ছাই হইয়া গেছে।’
পিকআপচালক বাবু মিয়া বলেন, ‘মানুষের চিৎকার শুইনা ঘুম ভাঙছে। এর মইধ্যেই দেখি ঘরের পেছনে আগুন। বউ-পোলাপাইন নিয়া কোনোরকম দৌড়াইয়া বাইর হইছি। এহন আছে বলতে খালি জানডাই। আর কিছু নাই, সব পুইড়া গ্যাছে।’
বেলা ১১টার দিকে বনানীর টিঅ্যান্ডটি বস্তি পরিদর্শনে যান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। এ সময় বনানীর এ বস্তিতে বারবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার জন্য সরকারের মহলবিশেষকে দায়ী করে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ এবং পুনর্বাসনের দাবি জানান তাবিথ।
তাবিথ আউয়াল বলেন, ‘আমি কথা দিয়েছিলাম ঢাকাবাসীর সঙ্গে থাকব। আমি নগরবাসীর সুখে-দুঃখে, দাবি আদায়ে সবসময় পাশে আছি, থাকব।’
তিনি বলেন, ‘আমি বরাবরই সরকারি একটি মহল দ্বারা অবৈধ গ্যাস ও বিদ্যুৎসংযোগের কথা বলে আসছি। আশা করছি, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ অগ্নিদুর্ঘটনার কারণ জানা যাবে।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেনÑবিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জয়নাল আবদিন ফারুক, বিএনপি সমর্থিত স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মিজানুর রহমান, ফারুক হোসেনসহ নেতাকর্মীরা।
