Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 10:28 am

তিন দশকেও সংস্কার হয়নি সোনাপুর-আলোকদিয়া সেতু

কামরুল হাসান নিরব, ফেনী: ফেনী সদর উপজেলার কালিদহ ইউনিয়ন ও কাজিরবাগ ইউনিয়নের সংযোগ সড়ক কচুয়া খালে দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে সেতুটি দাঁড়িয়ে আছে পরিত্যক্ত অবস্থায়। তিন দশকেও সেতুটির সংস্করণে কোনো উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। পরিত্যক্ত ঘোষণার পরও সেতু সংস্কার বা পুনর্নির্মাণের কোনো বাজেট ঘোষণা হয়নি। ফলে ভারী যানচলাচলে কোনো পরিস্থিতি নেই। রীতিমতো ঝুঁকি নিয়ে ছোট যানবাহন চলাচল করছে। পার্শ্ববর্তী সোনাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থীসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষের পারাপারের একমাত্র মাধ্যম এ সেতু। এ অবস্থায় কচুয়া খালের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা পরিত্যক্ত সেতুটি পুনর্নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৪ সালে ফেনীর প্রথম জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান কচুয়া খালের ওপর আলোকদিয়া-সোনাপুর সংযোগ সেতুটি উদ্বোধন করেন। সেতুটি উদ্বোধনের ফলে দুই ইউনিয়নের মানুষের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ শুরু হয়। এতে কাজীরবাগ ইউনিয়নের সোনাপুর, শ্রীপুর, রুহিতিয়া, অশ্বদিয়াসহ আশপাশের এলাকার মানুষ আলোকদিয়া সড়ক ব্যবহার করে ফেনী শহরে যাতায়াত করে। ৮ ফুট গ্রন্থ ও ৩০ ফুট দৈর্ঘ্যরে এ সেতু ১৯৮৮ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে উত্তরাংশ হেলে যায়। পরে ১৯৯০-৯১ সালের বন্যায় সেতুটির পিলারের ওপর বসানো গার্ডার কিছুটা সরে যায়। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এ সময় সেতুর ওপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।

এদিকে সেতুটিতে ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণার পরও বিকল্প সড়ক না থাকায় আশপাশের এলাকার বিভিন্ন গ্রামীণ পরিবহন নিয়মিত চলাচল করে আসছে। দীর্ঘ ৩১ বছর সেতুটি পুনর্নির্মাণ না হওয়ায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়েছে।

সেতুটি ভেঙে পড়লে দুর্ভোগের মাত্রা চরমে উঠবে। ফেনী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) সূত্র জানায়, সম্প্রতি ফেনী সদর উপজেলার কচুয়া খালের ওপর আলোকদিয়া-সোনাপুর সংযোগ সেতুটির পুনর্নির্মাণের জন্য প্রকল্প পরিচালক পরিদর্শন করেন। সেখানে সেতু নির্মাণ করতে হলে সয়েল টেস্টসহ আরও কিছু প্রাথমিক প্রক্রিয়া রয়েছে চলমানÑপ্রক্রিয়া শেষে প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণ করে সেতু নির্মাণে টেন্ডার আহ্বান করা হবে। এর আগে ২০০৯ সাল ওই স্থানে ৩৮-৪০ লাখ টাকা বরাদ্দে কালভার্ট নির্মাণে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু খালের পানির স্রোত বেশি হওয়ায় ঠিকাদার কাজ করেননি।

সর্বশেষ কার্যাদেশপ্রাপ্ত ঠিকাদার গিয়াস উদ্দিন মোল্লা বলেন, ফেনী পৌরসভার বর্জ্যে বিষাক্ত কচুয়া খালের ওপর সংযোগ সেতু নির্মাণে প্রধান অন্তরায় পানির স্রোত। সেতুর দুই পাশে বাঁধ নির্মাণে পানি আটকানোর পেছনে প্রচুর টাকা খরচ করতে হবে। এছাড়া পশ্চিম দিকের পানি মোটা পাইপের মাধ্যমে বাঁধের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত করার ব্যবস্থা করতে অনেক টাকার প্রয়োজন। এখানে গতানুগতিক কালভার্টের বরাদে কাজ করা সম্ভব নয় বলেই আমরা কাজটি সোনাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মঞ্জুরুল আলম কচি জানান, সেতুটির সংস্কার অথবা পুনর্নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে।

এ ব্যাপারে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ হাসান আলী জানান, আলোকদিয়া-সোনাপুর সংযোগস্থলে কচুয়া খালের ওপর কালভার্ট নির্মাণে একাধিকবার টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে, কিন্তু খালের পানির স্রোত বেশি হওয়ায় এখানে ঠিকাদাররা কালভার্ট নির্মাণ করতে পারেননি। কচুয়া খালের ওপর আবারও সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। শিগগিরই প্রাথমিক কার্যক্রম শেষ করে সেতু নির্মাণে টেন্ডার আহ্বান করা হবে।