উন্নয়ন মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী

তিন বেলা পেট ভরে খেতে পারছি, এটাই উন্নয়ন

নিজস্ব প্রতিবেদক: পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, এখন আমরা ভালো খাই, ভালো পরি। আমরা তিন বেলা ভাত খাই। তিন বেলা পেট ভরে ভাত খেতে পারছি, এটাই উন্নয়ন। কারণ এই বুভুক্ষু জাতির ইতিহাসে তেমন কোনো উদাহরণ ছিল না যে, তারা সব বেলা পেট ভরে ভাত খেতে পারছে। তিনি আরও বলেন, এখন আমাদের প্রায় প্রতিটি ঘরে বিদ্যুতের আলো জ্বলছে। এ দেশের ৯৫-৯৬ শতাংশ ঘরে বিদ্যুৎ নিয়ে গেছি। এর চেয়ে বড় উন্নয়ন আর কী হতে পারে? এই একটি কাজের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন পরিমাণ পুণ্য অর্জন করেছেন যে, তার বেহেস্তে যাওয়ার অধিকার আছে, হক আছে।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে গতকাল এক উন্নয়ন মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। তবে মেলাটি আগামী ২০ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে বলে জানানো হয়েছে আয়োজকদের পক্ষ থেকে। পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) সাত দিনব্যাপী এ উন্নয়ন মেলার আয়োজন করেছে।

পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার। বক্তব্য রাখেন পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মইনুদ্দিন আবদুল্লাহ ও ডিএমডি জসিম উদ্দিন। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মেলার চার দিনে প্রায় তিন কোটি টাকার পণ্য বিক্রি হয়েছে ও ক্রয়াদেশ পাওয়া গেছে।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপ করা প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্য নয়। আমরা হস্তক্ষেপে বিশ্বাস করি না। প্রধানমন্ত্রী চান, সব সংস্থা যেন তাদের নিজস্ব আইনকানুন দ্বারা পরিচালিত হয়, যদিও ব্যাংকগুলো নিয়ে আমরা শঙ্কিত। নানা ধরনের বকাঝকার মধ্যে বাস করি। তারপরও চাই ব্যাংকগুলো যেন তাদের নিজস্ব বোর্ড, নিজস্ব চেয়ার ও নিজস্ব বিধিবিধান অনুযায়ী চলে। সকাল-বিকাল হস্তক্ষেপ করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়।

তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী গত ১০ বছরে একনেক সভায় (জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি) এক মিনিট দেরি করে আসেননি। যেদিন রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য প্রধানমন্ত্রী একনেকে আসতে পারবেন না, তার আগের দিন জানিয়ে দিয়েছেন, কিন্তু দেরি করেননি। এটা বলার দরকার আছে এ দেশে। কারণ প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি সভায় দেরি করে আসেন। এ থেকে আমাদের শেখার আছে।’ এই জাতিকে হীনম্মন্যতা থেকে বেরিয়ে আসারও আহ্বান জানান পরিকল্পনামন্ত্রী। তার বক্তব্য, ‘অনেক অনুষ্ঠানে যাই, যেখানে ঘরভর্তি বাঙালি। একটি লোকও নেই যে অন্য কোনো ভাষা জানেন। কিন্তু সেখানে সবকিছু ইংরেজিতে উপস্থাপন করা হয়। আবার মুখে বলা হয় বাংলা, কিন্তু কাগজ তৈরি করা হয় ইংরেজিতে। পুরো সেশনটাই ইংরেজিতে হয়। এতে যিনি বলছেন তারও কষ্ট হয়, আবার যিনি শুনছেন, তারও কষ্ট হয়। তার পরও এই কাজটা আমরা করে যাচ্ছি। এর কারণ, আমরা নিজেরা নিজেদের সম্মান দিচ্ছি না।’

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আমাদের উন্নয়ন হচ্ছে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ইনক্লুসিভ ইনডেক্সে বাংলাদেশ বিশ্বে ৩৪তম অবস্থানে, আর দক্ষিণ এশিয়ায় সবার ওপরে আছে। বৈষম্য দূর করে সবার জন্য উন্নয়ন করতে কাজ করছে সরকার। ডিজিটাল বাংলাদেশ শুধু একটি উন্নয়ন এজেন্ডা নয়, এটি অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন এজেন্ডা।

হাবিবুন নাহার বলেন, গ্রামবাংলা উন্নত করা না গেলে দেশ উন্নয়নে পিছিয়ে পড়বে। গ্রামে আজও কর্মসংস্থান কম। তাই পিকেএসএফের মতো কার্যক্রম আরও বেশি পরিচালনা করা প্রয়োজন। বিদেশে গিয়ে স্বনির্ভর হতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। দেশেই স্বনির্ভর হওয়ার অনেক সুযোগ রয়েছে।

খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, টেকসই উন্নয়ন করতে হলে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পরিবেশগত উন্নয়ন একসঙ্গেই করতে হবে। এছাড়া বহুমাত্রিক সমন্বিত উন্নয়ন করতে হবে। শুধু কোনো প্রকল্পকে সামনে আনলে হবে না, মানুষকেই সামনে আনতে হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০