Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 7:00 pm

তিন মামলায় ‘গোল্ডেন মনির’ ১৮ দিনের রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক: সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া দোকানের কর্মচারী থেকে হাজার কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে রাজধানীর বাড্ডা থানার তিন মামলায় ১৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

গতকাল ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দুই বিচারক পৃথক আদেশে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর মধ্যে অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের দুই মামলায় অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবুবকর ছিদ্দিকের আদালত মনিরের সাত দিন করে ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তবে দুটি মামলার বিষয়বস্তু একই হওয়ায় তাকে সাত দিনই রিমান্ডে থাকতে হবে বলেও আদেশ দেন আদালত।

অপরদিকে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ-উর-রহমান মাদক আইনের মামলায় চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তবে এ রিমান্ড আলাদাভাবে কার্যকর হবে।

রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু রিমান্ড আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন। আসামিপক্ষে আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী রিমান্ড বাতিলের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে গতকাল তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৩)। এদিন দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করে অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা বাড্ডা থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ইয়াসীন গাজী ও মাদক মামলার তদন্ত কর্মকর্তা একই থানার উপপরিদর্শক জানে আলম দুলাল সাত দিন করে মোট ২১ দিনের রিমান্ড চান।

গত শনিবার আটক করার পর র‌্যাব-৩ কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া গোল্ডেন মনিরকে বাড্ডা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

বাড্ডা থানার ওসি পারভেজ ইসলাম জানান, গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ও অস্ত্র আইনে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেছে র‌্যাব।

এর আগে শনিবার সকালে রাজধানীর বাড্ডা এলাকার নিজ বাসা থেকে গোল্ডেন মনিরকে আটক করা হয়। এ সময় তার বাসা থেকে ৬০০ ভরি সোনার গহনা, বিদেশি পিস্তল-গুলি, মদ, ১০ দেশের বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা ও নগদ এক কোটি ৯ লাখ টাকা জব্দ করা হয়।

এছাড়া তার বাড়ি থেকে অনুমোদনহীন দুটি বিলাসবহুল গাড়ি জব্দ করা হয়, যার প্রতিটির বাজারমূল্য প্রায় তিন কোটি টাকা। এছাড়া তার ‘অটো কার সিলেকশন’ নামে গাড়ির শোরুম থেকে আরও তিনটি অনুমোদনহীন বিলাসবহুল গাড়ি জব্দ করা হয়েছে।

র‌্যাব জানায়, ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় দুই শতাধিক প্লট ও ফ্ল্যাটের মালিক গোল্ডেন মনির। রাজউকের কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে জালিয়াতির মাধ্যমে অসংখ্য প্লট হাতিয়ে নেন তিনি। তবে প্রাথমিকভাবে ৩০টি প্লট ও ফ্ল্যাটের কথা স্বীকার করেছেন মনির।

একটি গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে এ অভিযান চালানো হয়। এর আগেও গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ও রাজউকের একটি মামলা রয়েছে। মনির মূলত একজন হুন্ডি ব্যবসায়ী ও স্বর্ণের চোরাকারবারি। এ থেকেই মনির পরিচিতি পান ‘গোল্ডেন মনির’ হিসেবে।