শরীফ আহমদ ইন্না : গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ স্ট্রবেরি। বর্ণ, গন্ধ ও পুষ্টিমানের জন্য এর কদর রয়েছে। মৃদু শীতপ্রধান অঞ্চলের ফল এটি। তবে আমাদের দেশের সব জায়গায় চাষ করা যায় এ ফল। গত কয়েক বছরে দেশে উচ্চ ফলনশীল জাতে পরিণত হয়েছে স্ট্রবেরি। হয়তো এসব কারণে সিরাজগঞ্জের চন্দ্রকোনা গ্রামের দম্পতি হাসান আলী ও রওশন আরা স্ট্রবেরি চাষের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
হাসান আলী জানান, স্ট্রবেরির নানাগুণ সম্পর্কে জেনে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার এক খামার থেকে কিছু চারা নিয়ে আসি। গত বছরের শেষদিকে বাড়ির পাশে ৫০ শতক জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করি। এর দেড় মাস পরে গাছে ফল আসতে শুরু করে। ফল আসা পর্যন্ত তার খরচ হয়েছিল প্রায় ৫০ হাজার টাকা। খরচ বাদ দিয়ে লাভ হয় দুই লাখ টাকা।
জমি ফেরত দিলে টাকা ফেরত পাওয়া যাবেÑএমন চুক্তিতে এ বছর তিনি চার লাখ টাকার বিনিময়ে চার বিঘা জমি বন্ধক নেন। এ চার বিঘা জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে দুই লাখ ১০ হাজার টাকা। স্বামী-স্ত্রীর পরিচর্যায় স্ট্রবেরিতে ভরে গেছে জমিটি। ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে স্ট্রবেরি বিক্রি শুরুও করেছেন তারা।
হাসান আলীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আমাদের দেশে ‘রাবেত্রি’ ও ‘আমেরিকা’এ দুই জাতের স্ট্রবেরি পাওয়া যায়। এর মধ্যে ‘রাবেত্রি’ জাতের স্ট্রবেরি তুলনামূলক বেশি সুস্বাদু। তবে উচিঙ্গা পোকা ও পিঁপড়া গাছের কিছুটা ক্ষতি করে। এছাড়া তেমন কোনো সমস্যা নেই। সরকারি সহায়তা পেলে তিনি আরও বেশি জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করতে পারবেন বলে জানান।
সিরাজগঞ্জের কয়েকজন কৃষি কর্মকর্তা জানান, সিরাজগঞ্জের মালঞ্চ গ্রামে পরীক্ষামূলক স্ট্রবেরি চাষ করা হচ্ছে। এছাড়া উল্লাপাড়ার একটি গ্রামেও এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আরো জানা যায়, এখানে স্ট্রবেরি সংরক্ষণ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেই। এ কারণে চাষিদের একটু সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। যথাযথ সংরক্ষণ ব্যবস্থা গড়ে তোলা উচিত বলে মনে করেন কৃষি কর্মকর্তারা। তাহলে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যান্য জেলা, এমনকি বিদেশেও স্ট্রবেরি রফতানি করা যেতে পারে।
সিরাজগঞ্জ