তিস্তা ব্যারাজে ঝুঁকিপূর্ণ যান চলাচল বন্ধ হোক

তিস্তা ব্যারাজের ওপর দিয়ে মাত্রাতিরিক্ত ওজনের যান চলাচলের যে অভিযোগ গত মঙ্গলবারের শেয়ার বিজের প্রতিবেদনে এসেছে, তা উদ্বেগজনক। এতে স্থাপনাটির আয়ুই শুধু কমে আসবে না, বড় ধরনের বিপদও ঘটতে পারে যে কোনো সময়। এ ধরনের স্থাপনার ভার সহ্যের ক্ষমতা কতটুকু, তা নির্ধারণ করে দেওয়া হয় শুরুতেই। অবাক করার মতো বিষয়, এ ব্যারাজের ওপর দিয়ে যান চলাচলে নাকি আগে সে রকম কোনো বিধিনিষেধ ছিল না। ২০ টনের বেশি ওজনের যান চলাচল করতে পারবে না এ নিয়ম কর্তৃপক্ষ চালু করেছে অনেক পরে। ওই এলাকার যোগাযোগব্যবস্থা ও কৃষিক্ষেত্রে ব্যারাজটির গুরুত্ব অনেক। আমরা মনে করি, নির্ধারিত সময় পর্যন্ত এর সুবিধা পেতে তার ওপর দিয়ে মাত্রাতিরিক্ত ওজনের যান চলাচল বন্ধ করা দরকার। নির্দেশনা অমান্য করে প্রতিনিয়ত ব্যারাজের ওপর দিয়ে যারা ওই ধরনের যান পরিচালনা করছেন, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পে মাত্রাতিরিক্ত ওজনের যান নিয়ন্ত্রণে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) পদক্ষেপ নিয়েছে এরই মধ্যে। তবে কোনো কোনো কর্মকর্তা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ায় নাকি এ ধরনের যান চলাচল শতভাগ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে না। এতে বিভিন্ন স্থানে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যারাজটির সম্ভাব্য ঝুঁকি কমানো কঠিন হবে। কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা থাকলে সেখানে দায়িত্বরতদের মধ্যে কে অবৈধ সুবিধা নিয়ে মাত্রাতিরিক্তি ওজনের যান চলাচলের সুযোগ দিচ্ছেন, সেটা বের করা সম্ভব। তাদের চিহ্নিত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হলে অন্যরাও বিরত থাকবেন এমন কর্মকাণ্ড থেকে। বস্তুত ওজন স্টেশন না থাকলে দায়িত্বরতরা আন্তরিক হলেও ওই ধরনের যান চলাচল ঠেকাতে পারবেন না। ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে এখন যেমন অনেকে যানবাহন চালাচ্ছেন, তাতে সে প্রবণতা বরং বাড়তে পারে। এজন্য সেটি স্থাপনের পাশাপাশি কর্তৃপক্ষের তদারকিও জোরদার করা প্রয়োজন।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় প্রশাসন এ ব্যাপারে সজাগ। তবে পাউবো কর্মকর্তা ও স্থানীয় নেতাদের প্রভাবে নির্দেশনা উপেক্ষিত হচ্ছে কোনো কোনো সময়। প্রশ্ন হলো, স্থাপনাটি দেখভালের দায়িত্ব যাদের, তারা যদি জেনেবুঝেও মাত্রাতিরিক্ত ওজনের যান চলাচলের সুযোগ করে দেন বা সে বিষয়ে উদাসীন থাকেন, তাহলে ব্যারাজটিকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করবে কে? সংশ্লিষ্টরা কিসের জোরে স্থানীয় প্রশাসনের ওপর বাড়াবাড়ির সুযোগ পাচ্ছেন সেটাও খতিয়ে দেখা দরকার। আমরা চাইবো, তিস্তা ব্যারাজ রক্ষার স্বার্থেই সার্বিক বিষয়ে নজর দেবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। মনে রাখতে হবে, এমন একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের আর্থিক ব্যয় অনেক। যথেচ্ছ ব্যবহারের মাধ্যমে এটাকে যদি নষ্ট করে ফেলি, তাহলে ক্ষতি হবে দেশের। এতে স্থানীয় জনজীবনে যে দুর্ভোগ বাড়বে সেটাও সহসা কমানো যাবে না। তিস্তা ব্যারাজ ব্যবহারে সংশ্লিষ্ট সবার সচেতনতা দরকার।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০