Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 5:33 pm

তীব্র জ্বরে কী খাবেন

ঋতু পরিবর্তন, কভিড, ডেঙ্গু ও টাইফয়েডের কারণে বর্তমানে জ্বর শিশু থেকে বৃদ্ধ, কারও যেন রেহাই নেই। যে জ্বরই হোক, চিকিৎসার পাশাপাশি সঠিক পুষ্টি বজায় রাখার জন্য পথ্য ব্যবস্থাপনা খুবই জরুরি।

প্রতি ডিগ্রি অতিরিক্ত তাপমাত্রার জন্য বিপাকক্রিয়া ৭ শতাংশ বেড়ে যায়। ফলে শরীরে প্রয়োজনীয় শক্তির চাহিদাও বাড়ে। এ সময় দরকার পুষ্টিকর ও সহজপাচ্য খাবার। এ সময় এমন খাবার খেতে হবে, যা উচ্চ ক্যালরির পাশাপাশি মুখে রুচি ফিরিয়ে আনবে। জ্বরের সময় দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিক অবস্থায় আনা ও হজমক্ষমতাকে সহজ করার জন্য তরল খাবারে প্রাধান্য দিতে হয়। যেমন-

ফলের রস ঘরে তৈরি ভিটামিন সি-যুক্ত তাজা ফলের রস যেমন কমলা, মাল্টা, জাম্বুরা, সবুজ আপেলের জুস ও আনারসের রস (চিনি ছাড়া) দ্রুত জ্বরের সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করে। প্রোটিন ও ক্যালরি সরবরাহ করার ক্ষেত্রে চিকেন স্যুপের কোনো বিকল্প নেই। জ্বরে অনেক সময় বমি, ডায়রিয়ার মতো লক্ষণ থাকে, সে ক্ষেত্রে এই স্যুপ ইলেকট্রোলাইট ব্যালান্স করতে সাহায্য করে। স্যুপের সঙ্গে সবজি মেশাতে পারলে তা থেকে পাওয়া যায় প্রচুর ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। চিকেন-ভেজিটেবল স্যুপ জ্বর-পরবর্তী দুর্বলতা কমাতেও সাহায্য করে। এ সময় মসলা চা, আদা চা, যেকোনো হারবাল চা খুবই উপকারী। কারণ, এগুলোর আছে অ্যান্টিভাইরাল ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল কার্যকারিতা। চায়ের সঙ্গে লেবু, মধু, তুলসীপাতা, পুদিনাপাতা ও লং মিশিয়ে খেলে তা খুব সহজেই সর্দি-কাশি কমিয়ে রুচি ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।

জ্বরের সময় দেহে পানিশূন্যতা ও ইলেকট্রোলাইটের অসমতা তৈরি হয়। তা পূরণে ডাবের পানির বিকল্প নেই। পাতলা সুজি দুধ দিয়ে পাতলা সুজি বা সাগু-দুধ দিয়ে পাতলা করে রান্না করা সুজি বা সাগু খেতে সহজ, হজমে সহায়ক ও ক্যালরিসম্পন্ন খাবার। মধ্যকালীন খাবারের সময়গুলোতে দিলে রোগী যথেষ্ট শক্তি পাবে। জাউ ভাত জ্বরের সময় বেশ উপকারী। এটি সহজপাচ্য ও সহজে খাওয়া যায়। জাউ ভাতের সঙ্গে পাতলা পেঁপে-মুরগির ঝোল দিলে ভালো।

ডিম সেদ্ধ ডিম জ্বরের সময় প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে। বিভিন্ন সবজি ও মুরগি দিয়ে রান্না করা পাতলা খিচুড়ি খুব সহজেই ক্যালরি, প্রোটিন, ভিটামিন এবং মিনারেলের চাহিদা পূরণ করে দুর্বলতা দূর করে।

সতর্কতা: জ্বরের সময় ভাজাপোড়া, শক্ত বা কাঁচা খাবার, বাইরের খাবার, দুধ চা, কোমল পানীয় প্রভৃতি না খাওয়াই ভালো।

ফাহমিদা হাশেম

জ্যেষ্ঠ পুষ্টিবিদ

ল্যাবএইড ওয়েলনেস সেন্টার, ঢাকা