তীব্র হচ্ছে চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধ

 

শেয়ার বিজ ডেস্ক: চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ আরও তীব্র হয়ে উঠছে। একের পর এক পণ্যের ওপর বাড়তি শুল্ক চাপিয়ে পরিস্থিতি জটিল করে তুলছে দুদেশ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থারও দ্বারস্থ হচ্ছে। খবর রয়টার্স, বিবিসি।

আগামী শুক্রবার পর্যন্ত অপেক্ষা করলেন না ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানির ওপর চীন ১২৮টি পণ্যের ওপর ৩০০ কোটি ডলারের  শুল্ক চাপানোর পর গত মঙ্গলবারই সে দেশের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দফার শাস্তিমূলক পদক্ষেপের ঘোষণা করেছে মার্কিন প্রশাসন। এ যাত্রায় তালিকায় প্রযুক্তি, পরিবহন ও চিকিৎসার পণ্যসহ এক হাজার ৩০০ পণ্য ও পরিষেবা রয়েছে। ২৫ শতাংশ শুল্কারোপ হলে আর্থিক মূল্য প্রায় পাঁচ হাজার কোটি ডলার ছাড়াবে।

যুক্তরাষ্ট্রের এ সর্বশেষ পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করেছে চীন।   পাল্টা পদক্ষেপে তারাও দ্বিতীয় দফায় সয়াবিন, গাড়ি, কেমিক্যাল, ভুট্টা বিমান ও যন্ত্রপাতিসহ ১০৬টি পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্কারোপের ঘোষণা দিয়েছে। এর আর্থিক মূল্যও পাঁচ হাজার কোটি ডলার।

শুল্ক আরোপের মাধ্যমে চীনকে বাধা দেওয়ার যে পথে ট্রাম্প প্রশাসন হাঁটছে, তা বেইজিংকে পাল্টা পদক্ষেপ নিতে এবং মার্কিন ভোক্তাদের চড়া দামে পণ্য কেনার পথে নিয়ে যাবে বলে আগেই সতর্ক করেছিলেন অর্থনীতিবিদরা।

গত মাসের প্রথমদিকে বিদেশ থেকে আমদানি করা ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্কের হার বাড়িয়েছিলেন ট্রাম্প। তার প্রতিক্রিয়ায় চলতি সপ্তাহে ১২৮টি মার্কিন পণ্যে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্কারোপের কথা ঘোষণা করে বেইজিং। বেইজিংয়ের ওই পাল্টা ব্যবস্থার পরপরই মেধাস্বত্ব লঙ্ঘনের শাস্তি হিসেবে দ্বিতীয় দফায় শুল্কারোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। চীনও পাল্টা জবাবে নতুন করে আরও কিছু পণ্যে শুল্কারোপের ঘোষণা দিল।  নতুন শুল্কারোপ কার্যকর হলে শুধু চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের শিল্প প্রতিষ্ঠানের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। বাড়তি শুল্কারোপে পণ্যের দাম বেড়ে গেলে সাধারণ ক্রেতাদেরই ক্ষতি হবে।

ট্রাম্প প্রশাসন ‘অ্যামেরিকা ফার্স্ট’ নীতি কার্যকর করতে এ যাবৎ দ্বিপক্ষীয় স্তরেই পদক্ষেপ নিয়ে এসেছে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা ডব্লিউটিওর নিয়মের পরোয়া না করেই ওয়াশিংটন একতরফা শাস্তিমূলক পদক্ষেপের ঘোষণা করে এসেছে। এবার চীনকে শায়েস্তা করতে সেই ডব্লিউটিওরই দ্বারস্থ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। চীনের বিরুদ্ধে মার্কিন মেধাস্বত্ব চুরির অভিযোগ আনা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ডব্লিউটিওর নিয়ম ভেঙে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিদেশি সংস্থাগুলোর মৌলিক পেটেন্ট বা স্বত্বের অধিকার অস্বীকার করছে চীন। ফলে লাইসেন্স চুক্তি শেষ হলে চীনা কোম্পানিগুলো অবাধে সেই স্বত্ব অমান্য করে। তাছাড়া বিদেশি প্রযুক্তি আমদানির ক্ষেত্রেও চীনের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ এনেছে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা আচরণের বিরুদ্ধে বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার দ্বারস্থ হতে চলেছে চীনও। দেশটি মনে করিয়ে দিয়েছে, বাণিজ্য সংক্রান্ত বিরোধ ডাব্লিইউটিওর মঞ্চেই নিষ্পত্তি হওয়া উচিত। ডাব্লিইউটিওর নিয়ম ভেঙে একতরফা শুল্ক চাপানো কোনো সমাধান হতে পারে না।

চীন ও যুক্তরাষ্ট্র এ বেড়ে চলা সংঘাতের ফলে বিশ্বের পুঁজিবাজারেও অস্থিরতার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। ডব্লিইউটিওর কাঠামোর বাইরে এমন বাণিজ্য যুদ্ধের পরিণাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে, এমন আশঙ্কা জোরালো হচ্ছে।

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০