শেয়ার বিজ ডেস্ক:তুরস্কে গত মাসে আবাসন খাতের অর্থাৎ বাড়ি বিক্রি উল্লেখজনকভাবে কমেছে। বার্ষিক ভিত্তিতে অর্থাৎ গত বছরের সাপেক্ষে এ সময়ে বাড়ি বিক্রি ৩৫ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে। দেশটির কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। খবর: ডেইলি সাবাহ।
গত এপ্রিলে তুরস্কে মোট ৮৫ হাজার ৬৫২টি বাড়ি বিক্রি হয়েছে। বিষয়টি জানিয়েছে তার্কিশ স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউট (তুর্কস্ট্যাট)।
পরিসংখ্যানের তথ্যে দেখা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে বাড়ি বিক্রির হার কমছে। এ সময়ের মধ্যে বাড়ির বিক্রির পরিমাণ কমেছে ১৮ দশমিক ৬ শতাংশ, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে কম।
জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত মোট বাড়ি বিক্রি হয়েছে ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৮৬৭টি।
গত মাসে সবচেয়ে বেশি বাড়ি বিক্রি হয়েছে ইস্তাম্বুলে। এ শহরে ১৩ হাজার ৯৪৪টি বাড়ি বিক্রি হয়েছে, যা মোট বিক্রির ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ।
এর পরের অবস্থান আঙ্কারার। এ শহরের ১০ হাজার বাড়ি বিক্রি হয়েছে, শতাংশে হিসাবে যা ১১ দশমিক ৭ শতাংশ। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ইজমির। এখানে ৪ হাজার ৯৬০টি বা ৫ দশমিক ৮ শতাংশ বাড়ি বিক্রি হয়েছে।
বিপরীত চিত্রে দেখা গেছে, কম বাড়ি বিক্রির তালিকায় রয়েছে যথাক্রমে আরাধাহান ও হাক্কারি। এ দুই শহরের অবস্থান দেশটির পূর্বাঞ্চলে। এ দুই শহরের মাত্র ২২টি বাড়ি বিক্রি হয়েছে। এর বাইরে বেবুর্টে ৫৩টি বাড়ি বিক্রি হয়েছে।
গত এপ্রিলে ডে ৮৫ হাজার ৬৫২টি বাড়ি বিক্রি হয়েছে তার মধ্যে ২ হাজার ৫৫৭টি বাড়ি কিনেছেন বিদেশিরা। এ হিসেবে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় গত মাসে বিদেশিদের বাড়ি কেনার হার কমেছে। গত বছরের তুলনায় তুরস্কে বিদেশিদের বাড়ি কেনার হার কমেছে ৬০ দশমিক ৩ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে অর্থাৎ গত এপ্রিলে তাদের মোট বাড়ি কেনার হার ৩ শতাংশ।
প্রদেশগুলোর মধ্যে ভূমধ্যসাগরীয় প্রদেশ আনতালিয়ায় বিদেশিরা সবচেয়ে বেশি বাড়ি কিনেছেন। এখানের ১ হাজার ২৪টি বাড়ি কিনেছেন তারা। পরের অবস্থানে রয়েছে ইস্তাম্বুল। এখানে ৭৯২টি বাড়ি কিনেছেন বিদেশিরা। তৃতীয় স্থানে রয়েছে মারসিন প্রদেশ, বিদেশিদের কাছে ১৮৬টি বাড়ি বিক্রি হয়েছে।
২০২২ সালের তুলনায় জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে বিদেশিদের কাছে বাড়ি বিক্রির পরিমাণ কমেছে ৩৫ দশমিক ১ শতাংশ (মোট ১৩ হাজার ৪৮৩টি)।
এপ্রিলে তুরস্কে সবচেয়ে বেশি বাড়ির মালিক হয়েছেন রাশিয়ার নাগরিকরা। তারা মোট ৮১৭টি বাড়ি কিনেছেন। তাদের পরে রয়েছেন ইরানের নাগরিকরা, মোট ৩৭৭টি বাড়ি কিনেছেন তারা। এরপর রয়েছেন যথাক্রমে ইউক্রেন ও ইরাকে নাগরিকরা। তারা যথাক্রমে ১৩৬টি ও ১২৪টি বাড়ি কিনেছেন। গত বছরের আগস্টের পরিসংখ্যানেও বিদেশি নাগরিকদের মধ্যে শীর্ষে ছিলেন রুশরা। তাদের পরে ছিলেন ইরানি ও ইরাকিরা।
এপ্রিলে বাড়ি কেনার জন্য বন্ধকি ঋণের পরিমাণও কমেছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এপ্রিলে বন্ধকি ঋণের পরিমাণ কমেছে ৩২ শতাংশ। এ সময়ে বন্ধকি ঋণ করে মোট ২১ হাজার ৭৬৯টি বাড়ি কেনা হয়েছে। দেশটির মোট বাড়ি বিক্রির ২৫ দশমিক ৪ শতাংশ বন্ধকি ঋণের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়ে থাকে।
এদিকে সম্প্রতি আধুনিক তুরস্কের ১০০ বছরের ইতিহাসে অন্যতম তাৎপর্যপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশটিতে ২০ বছর ধরে ক্ষমতায় রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান আর ক্ষমতায় থাকতে পারবেন কি না, তা এ নির্বাচনে নির্ধারিত হবে। কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পেলে নির্বাচন দ্বিতীয় দফায় গড়াবে। সে ক্ষেত্রে ২৮ মে দ্বিতীয় দফার ভোট হবে। চলতি মাসের বাড়ি বিক্রিতে এ নির্বাচনের প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।