শেয়ার বিজ ডেস্ক: তুরস্ক ও সিরিয়ায় বিপর্যয়কর ভূমিকম্পের এক সপ্তাহ পরও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। উদ্ধারকাজ যতই এগিয়ে যাচ্ছে মৃতের সংখ্যা ততই বাড়ছে। গতকাল পর্যন্ত তুরস্ক ও সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা অন্তত ৩৪ হাজার ১৭৯ জনে দাঁড়িয়েছে। তুরস্কের জরুরি সমন্বয় কেন্দ্র এসএকেওএম জানিয়েছে, তুরস্কের ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত এলাকাগুলোতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৯ হাজার ৬০৫ জন হয়েছে। আর তুরস্কের প্রতিবেশী সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার ৫৭৪ জনে দাঁড়িয়েছে। খবর: সিএনএন।
সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩ হাজার ১৬০ জন হয়েছে বলে ওই অঞ্চলের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। সিরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা এসএএনএ জানিয়েছে, সরকার নিয়ন্ত্রিত অংশে মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৪১৪ জন। গত সোমবার তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর গাজিয়ানতেপের কাছে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে তুরস্কের অন্তত ১০টি প্রদেশ ও দক্ষিণের প্রতিবেশী সিরিয়ার উত্তরাঞ্চল লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। একই দিন পরে কাছাকাছি ৭ দশমিক ৫ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্পে পরিস্থিতি অকল্পনীয় হয়ে দাঁড়ায়।
ভূমিকম্পের পর থেকে হাজার হাজার মানুষের মৃতের পাশাপাশি আহত প্রায় লাখের কাছে পৌঁছে গেছে। শুধু তুরস্কেই ছয় হাজারের ওপর ভবন ধসে পড়েছে। ভূমিকম্পের তাণ্ডব থেকে বেঁচে গিয়েও বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছে।
ভূমিকম্পের ছয় দিন পেরিয়ে যাওয়ার পর রোববার তুরস্কে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ১০ বছর বয়সী এক বালিকাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে এ ধরনের বেশি কিছু সাফল্য উদ্ধারকর্মীদের উজ্জীবিত করে রেখেছে। ভূমিকম্পের পর এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও জীবিতদের খোঁজে তল্লাশি চালিয়ে যাওয়া অব্যাহত রেখেছেন তারা। তবে সময় যত পেরোচ্ছে, ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে বেশি মানুষকে জীবিত উদ্ধারের আশাও ততই ফিকে হয়ে আসছে। তুরস্কে ভূমিকম্পে ধসে পড়া ভবনগুলোর নির্মাণকাজ নিয়ে ওঠা প্রশ্নের মুখে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে ভবনগুলো ভেঙে পড়ার জন্য দায়ী সন্দেহে ১১৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। ভবনগুলোর ঠিকাদারদেরসহ অন্তত ১২ জনকে এরই মধ্যে কাস্টডিতে নিয়েছে তুরস্কের পুলিশ। আরও অনেককেই গ্রেপ্তার করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলের কিছু এলাকায় দেখা দেয়া অস্থিরতা ভয়াবহ ভূমিকম্প পরবর্তী চলমান উদ্ধার প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করছে বলে জানিয়েছে তিনটি উদ্ধারকারী দল।