নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের পুঁজিবাজার গতকাল মঙ্গলবার সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। অর্থনীতি ও রাজনীতি নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে সপ্তাহের তৃতীয় কর্মদিবসে সূচক বাড়ল।
এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাধারণ সূচক ১৭ পয়েন্ট বাড়লেও লেনদেন আগের দিনের তুলনায় ৫৩ পয়েন্ট কমে আবার নেমেছে ৪০০ কোটি টাকার নিচে। ডিএসইতে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১০৬টির শেয়ারের কোনো ক্রেতাই ছিল না। বাকি কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১১ কোম্পানির ১টি, ১৮ কোম্পানির ২ থেকে ১০টি শেয়ার, ৩০টি কোম্পানির ১১ থেকে ১০০টি শেয়ার, ৪০টি কোম্পানির ১১০ থেকে এক হাজারটি শেয়ার হাতবদল হয়েছে। এই ৯৯টি কোম্পানির কেবল ১৭ হাজার ৫১৭টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে সারা দিনে। আরও ৩৮টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৩০ থেকে সর্বোচ্চ ১০ হাজারটি। এসব কোম্পানি মিলিয়ে লেনদেন হয়েছে ১ লাখ ৫৬ হাজার ২৯৮টি।
ডিএসইতে ২৮৩টি কোম্পানি হাতবদল হলেও বলার মতো লেনদেন হয়েছে কেবল ৮৩টির। এগুলোর এক লাখের বেশি শেয়ার হাতবদল হয়েছে। আর ১০ হাজারের বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে সব মিলিয়ে ১৪২টি কোম্পানির। যেসব কোম্পানির কমপক্ষে এক লাখ শেয়ার হাতবদল হয়েছে, সেগুলোর আরও লাখ লাখ শেয়ার বিক্রির জন্য বসানো ছিল। কিন্তু ক্রেতা ছিল না।
সব মিলিয়ে এদিন দর বেড়েছে ১২৪টি কোম্পানির, বিপরীতে দর
হারিয়েছে ১৮টি। সবচেয়ে বেশি ১৪১টি কোম্পানি আগের দিনের দরে ফ্লোর প্রাইসে হাতবদল হয়েছে।
গতকালও দর পতনের তুলনায় দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির সংখ্যা অনেক বেশি হলেও ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা কোম্পানির সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। মূলত ফ্লোর প্রাইস বা বেঁধে দেয়া সর্বনি¤œ দরে হাজার হাজার বিনিয়োগকারী প্রতিদিনই কোটি কোটি শেয়ার বিক্রির ঘরে বসিয়ে রাখছেন, কিন্তু ক্রেতার দেখা মিলছে না। তাদের সবার টাকা আটকে গেছে। মার্জিন ঋণ নিয়ে শেয়ার কিনেছিলেন যেসব বিনিয়োগকারী, তারা এক বছরের বেশি সময় ধরে শেয়ার বিক্রি করতে পারছেন না, কিন্তু ঋণের সুদ ঠিকই বহন করতে হচ্ছে।
শেয়ারদর বৃদ্ধির এই দিনে লেনদেন কমে গেছে। দিনভর হাতবদল হয়েছে ৩৭২ কোটি ৪০ লাখ ৩৪ হাজার টাকা, যা আগের দিন ছিল ৪২৬ কোটি ১০ লাখ ১২ হাজার টাকা। পুঁজিবাজারে দুটি বা তিনটি কোম্পানিতে এর চেয়ে বেশি লেনদেন দেখা গেছে। তবে যে লেনদেন হয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাহিদা থাকা ২০টি কোম্পানিতেই লেনদেন হয়েছে ১৭১ কোটি টাকার বেশি।
বড় মূলধনি কোম্পানি লাফার্জের শেয়ারদরে ১ দশমিক ২৯ শতাংশ বৃদ্ধির কারণে সূচকে যোগ হয়েছে ২ দশমিক ৩০ পয়েন্ট, সি পার্লের দর ৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ১ দশমিক ৯২ পয়েন্ট।
আগের তিন কর্মদিবসে টানা দর কমে ফ্লোর প্রাইসের দিকে আসতে থাকা সাধারণ বিমা খাতের কোম্পানিগুলোই ছিল দর বৃদ্ধির শীর্ষে। সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া ১০টি কোম্পানির মধ্যে পাঁচটিই আর সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পাওয়া ২০টি কোম্পানির মধ্যে ১২টিই এক খাতের। এর মধ্যে সাধারণ বিমার তিনটি কোম্পানির শেয়ারদর ৯ শতাংশের বেশি, একটি করে কোম্পানির যথাক্রমে ৮, ৬ ও ৫ শতাংশের বেশি, আটটি কোম্পানি চার শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি, ১৪টি কোম্পানির তিন শতাংশের বেশি, সাতটি কোম্পানির দর বেড়েছে ২ শতাংশের বেশি। এই খাতের ৪২টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৪১টির, একটি ছিল আগের দিনের দরে। লেনদেনেও সাধারণ বিমা খাতের প্রাধান্য দেখা গেছে। মোট লেনদেনের প্রায় ৩০ শতাংশই হয়েছে সাধারণ বিমা খাতে।
খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের কোম্পানিগুলোর বেশ ভালো করেছে। ২১টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১০টির, দর হারিয়েছে পাঁচটি, চারটি আগের দিনের দরে আর দুটির লেনদেন হয়নি। মোট লেনদেনের ১৫ শতাংশের বেশি ছিল এই খাতে।
অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক ও লেনদেন দুটোই বেড়েছে। সিএসইতে ৬৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।