নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে ভোজ্যতেলের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য তেলবীজ উৎপাদন বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমদানিনির্ভরতা কমানো এবং অনাবাদি জমি কাজে লাগাতে এমন নির্দেশ দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, উৎপাদন বাড়াতে সরকারের পক্ষ থেকে যা করণীয়, তাই করা হবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনে গবেষণা বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দও দিতে হবে।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক গতকাল এ নির্দেশ দেন তিনি। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান এসব কথা জানান।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, পরিকল্পনা বিভাগের সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তীসহ পরিকল্পনা কমিশনের অন্য সদস্যরা।
পরিকল্পনামন্ত্রী আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভোজ্যতেলের আমদানি কমাতে হলে সয়াবিন ও সূর্যমুখীর চাষ আরও বাড়াতে হবে। বিশেষ করে ফেনী ও নোয়াখালী অঞ্চলে সয়াবিন ও সূর্যমুখীর চাষ বাড়ানো প্রয়োজন। সাম্প্রতিক সময়ে ভোজ্যতেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আজকের (গতকাল) একনেক সভায় আলোচনা হয়েছে। তখন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভোজ্যতেলের সংকট কমাতে হলে দেশে উৎপাদন বাড়ানোর বিকল্প নেই।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, ফেনী ও নোয়াখালী অঞ্চলে বাদাম ভালো হয়। সেখানে তেলবীজ উৎপাদনের কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। ভোজ্যতেলের আমদানি কমাতে সয়াবিন, সূর্যমূখী ও সরষের উৎপাদন বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে এ বিষয়ে গবেষণার কথাও বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। ৪৩৯ কোটি টাকা ব্যয়-সংবলিত বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বীজ বর্ধন খামার স্থাপন প্রকল্প অনুমোদনের সময় প্রধানমন্ত্রী এসব নির্দেশনা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপের কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে। এজন্য একনেক সভার শুরুতে সবাই সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি আরও জানান, পল্লি অঞ্চলের সড়কগুলোয় অনেক সেতু ও কালভার্ট রাখার নির্দেশও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, যাতে প্লাবন ভূমিতে পানি সহজেই চলাচল করতে পারে। সেইসঙ্গে ব্রিজ নির্মাণের সময় উঁচু করে তৈরি করতে হবে, যাতে নৌকা চলাচলে কোনোরকম বাধার সৃষ্টি না হয়। এটি করা না হলে পরে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও হুশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। পরিকল্পনামন্ত্রী আরও জানান, রেলে নিচের দিকে লোকবল নিয়োগের ক্ষেত্রে ৪০-৫০ শতাংশ কর্মরতদের সন্তানদের নিয়োগ দেয়ার বিষয়টিও বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, এটা আবহমানকাল থেকে চলে আসছে। এ পদ্ধতি বহাল রাখতে হবে। এছাড়া সৈয়দপুর ও পাহাড়তলীর রেল কারখানা দুটি আরও সক্ষম করার নির্দেশনাও দিয়েছেন শেখ হাসিনা। সেইসঙ্গে বৃক্ষরোপণের ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।