তেলের দাম ভাড়া বাড়ানো ‘সাজানো খেলা’: মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক: জ্বালানি তেলের দাম ও পরিবহন ভাড়া বাড়ানো সরকারের ‘সাজানো খেলা’ বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল এক মানববন্ধনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকার পকেটকাটা সরকার। যাদের লোকে সবাই বলে পকেটমার। দিনে-রাতে পকেট কাটছে। এই পকেটমার সরকার জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে পকেট কাটছে।

তিনি বলেন, ‘এখন পকেট কাটছে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়িয়ে দিয়ে। দ্বিতীয়বার জনগণের পকেট কাটল বাসভাড়া বাড়িয়ে দিয়ে। এসব তাদের পাতানো খেলা, সাজানো খেলা।’

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমে গেলেও অতীতে কখনোই দাম কমায়নি সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে পেট্রোলিয়াম করপোরেশন। তখনও তাদের ৪৩ হাজার কোটি টাকা মুনাফা ছিল। উচ্চ দামেই তারা তেল বিক্রি করেছেন জনগণের কাছে।

তিনি বলেন, ‘আজকে যখন আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়তে শুরু করেছে, ওই সংস্থার লোকেরা বলছে যে, আরও কমপক্ষে ছয় মাস তারা দাম না বাড়িয়েই চলতে পারত। কিন্তু সেটা তারা করেনি। কেন? এই সরকারের চরিত্রই হচ্ছে লুটপাট। তারা একদিকে অর্থনীতিকে লুট করছে, জনগণের পকেট কাটছে আর নিজেদের পকেট ভারী করছে। আপনারা দেখেছেন, হাজার হাজার কোটি টাকা তারা পাচার করেছে।’

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপি ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের যৌথ উদ্যোগে এ মানববন্ধন হয়। ঢাকার দুই মহানগরের সহস্রাধিক নেতা-কর্মী এতে অংশ নিয়ে ভাড়া বৃদ্ধি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে সেøাগান দেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের মানুষের তো আপনার দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আপনারা পত্রিকায় দেখেছেন কিছুদিন আগেও করোনা শুরুর আগে, এদেশের দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ছিল দুই কোটি। এখন হয়েছে তিন কোটি ৪৮ লাখ। প্রতিদিন মানুষের গরিবি বাড়ছে, দারিদ্র্য বাড়ছে। এদিকে তাদের (সরকার) কোনো খেয়াল নেই। তারা যখন ২০০৮ সালে নির্বাচন করে, তখন জনগণকে কথা দিয়েছিল ১০ টাকা কেজিতে চাল খাওয়াবে। এখন চালের দাম ৬০-৭০ টাকা। সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, ‘তাদের জিজ্ঞেস করলে তারা বলে, উন্নয়ন দিচ্ছে। এমন উন্নয়ন দিচ্ছে আমরা নাকি দেখতে পাই না। সেই উন্নয়ন শুধু দেখেই যাবে, পিলার দেখছি, উড়াল সেতু দেখছি। আমাদের সাধারণ মানুষের কী হচ্ছে? তারা গরিব থেকে গরিব হচ্ছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে বিচার ব্যবস্থা কোন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে, প্রশাসন কোন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে, দেখেন। আজকেও খবরের কাগজে খবর আছে যে, আপিল শেষ হয় না, এখন পর্যন্ত একজনের আপিল বিভাগে শেষ হয়নি, রিভিউ পিটিশন দেখা হয়নি, রায় দেয়নি সুপ্রিম কোর্টে। তার আগেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার জন্য কাজ শুরু করে দিয়েছে। কয়েক দিন আগে দুজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়ে দেয়া হয়েছে আপিল বিভাগের রায় আসার আগেই। অর্থাৎ কোথাও কোনো জবাবদিহি নেই, কোথাও নিয়ম-শৃঙ্খলা নেই। সম্পূর্ণ নৈরাজ্যকর একটা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে এই সরকার।’

ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান যৌথ সভাপতিত্বে ও উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, খায়রুল কবির খোকন, নাজিম উদ্দিন আলম, মীর সরফত আলী সপু, মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু, হেলেন জেরিন খান, সেলিমুজ্জামান সেলিম, আমিরুজ্জামান শিমুল, অঙ্গসংগঠনের সাইফুল আলম নীরব, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, ফজলুল রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামলসহ দুই মহানগরের নেতারা বক্তব্য দেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০