শেয়ার বিজ ডেস্ক: ২০১৯ সালের মধ্যে রাশিয়াকে টপকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় জ্বালানি তেল উৎপাদনকারী দেশ হবে যুক্তরাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার (আইইএ) নির্বাহী পরিচালক ফাতিহ বিরল গতকাল মঙ্গলবার এ মন্তব্য করেন। খবর রয়টার্স।
ফাতিহ বিরল বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের শেল অয়েলের উৎপাদন ক্রমাগত বাড়ছে। চলতি বছর না হলেও আগামী বছর জ্বালানি তেল উৎপাদনে শীর্ষ অবস্থানে থাকা রাশিয়াকে ছাড়িয়ে যাবে দেশটি।
১৯৭০ সালের পর গত বছরই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রে গড়ে প্রতিদিন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উৎপাদন ১০ হাজার ব্যারেল ছাড়িয়েছে। শীর্ষ তেল রফতানিকারক দেশ সৌদি আরবের তুলনায়ও এটি ছিল বেশি।
যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্য প্রশাসন জানিয়েছে, ২০১৮ সালের শেষের দিকে প্রতিদিন ব্যারেলপ্রতি উৎপাদন ১১ মিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে। বর্তমানে শীর্ষ উৎপাদনকারী দেশ রাশিয়া। তারা প্রতিদিন গড়ে ১১ মিলিয়ন ব্যারেলের কম উৎপাদন করে।
পরিশোধিত জ্বালানি তেল উৎপাদনে বহু বছর একচ্ছত্র আধিপত্যে ছিল সৌদি আরব। ২০১৬ সালের শেষের দিকে দেশটিকে টপকে শীর্ষস্থান দখল করেছে রাশিয়া।
ওই বছরের ডিসেম্বরে রাশিয়া প্রতিদিন গড়ে ১০ দশমিক ৪৯ মিলিয়ন ব্যারেল তেল উত্তোলন করছে। একই সময় সৌদি আরব উত্তোলন করেছে গড়ে ১০ দশমিক ৪৬ মিলিয়ন ব্যারেল। যদিও এর আগের মাসে নভেম্বরে সৌদি আরবে গড়ে প্রতিদিন ১০ দশমিক ৭২ মিলিয়ন ব্যারেল তেল উত্তোলন করা হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রে তেল উৎপাদন এমন সময়ে বাড়ছে, যখন রাশিয়াসহ মধ্যপ্রচ্যের বড় রফতানিকারক দেশগুলো তেলের দরপতন ঠেকাতে উৎপাদন কমিয়ে আনতে চেষ্টা করছে।
২০১৪ সালের শেষ সময় থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দরপতন শুরু হয়। ক্রমাগত দরপতন ঠেকাতে ওপেকভুক্ত দেশগুলো পণ্যটির সম্মিলিত উত্তোলন কমিয়ে আনতে চুক্তি স্বাক্ষর করে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, স্বাক্ষরকারী দেশগুলো চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ছয় মাসের জন্য অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের সম্মিলিত দৈনিক উৎপাদন ১৮ লাখ ব্যারেল কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দেয়। এর মাধ্যমে বৈশ্বিক জ্বালানি তেলের মজুদ পাঁচ বছরের গড়ের সমপর্যায়ে আসবে বলেও আশা করা হয়। রাশিয়াসহ ওপেকবহির্ভূত ১০টি দেশ এ চুক্তি মেনে পণ্যটির উত্তোলন কমাতে রাজি হয়।
তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চুক্তির শর্ত বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে এর মেয়াদ আগামী বছরের প্রথম প্রান্তিক (জানুয়ারি-মার্চ) পর্যন্ত বাড়ানো হয়। কিন্তু লক্ষ্য পূরণ না হওয়ায় গত ৩০ নভেম্বর ওপেক সভায় আবারও ৯ মাসের জন্য অর্থাৎ ২০১৮ সালের শেষ সময় পর্যন্ত উত্তোলন হ্রাস চুক্তি মেয়াদ বাড়ানো হয়।
উৎপাদনের পাশাপাশি রফতানিতেও এগিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও দ্রুতবর্ধনশীল অঞ্চল এশিয়ায় চোখ তাদের। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে তেলের আমদানি প্রতিদিন চার মিলিয়ন ব্যারেলের নিচে নেমে এসেছে। ২০০৫ সালেও দেশটি প্রতিদিন গড়ে রেকর্ড ১২ দশমিক পাঁচ মিলিয়ন ব্যারেল তেল উৎপাদন করেছিল।