নিজস্ব প্রতিবেদক: টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে তাপমাত্রা ও বিদ্যুৎ চাহিদা বেশ কম ছিল। এতে মোটামুটি চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে সরকার। শহরাঞ্চলে লোডশেডিং ছিলই না। গ্রামেও তা ছিল সহনীয় পর্যায়ে। তবে গতকাল তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। অথচ জ্বালানি বিশেষত গ্যাস ও ফার্নেস অয়েল না পাওয়ায় চাহিদা অনুপাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়নি। এতে লোডশেডিং প্রায় হাজার মেগাওয়াট বেড়ে গেছে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) তথ্যমতে, বুধবার দিবাগত রাত ১২টা থেকেই (১৭ আগস্ট) লোডশেডিং হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে গেছে। ওই সময় লোডশেডিং হয় এক হাজার ১২০ মেগাওয়াট। রাত ১টায় তা আরও বেড়ে দাঁড়ায় এক হাজার ১৬০ মেগাওয়াট ও ২টায় এক হাজার ১৭০ মেগাওয়াট। এরপর তা কিছুটা কমলেও পাঁচশ থেকে ৯০০ মেগাওয়াটের মধ্যেই ছিল। বেলা ১২টায় তা আবার হাজার মেগাওয়াট ছাড়ায়।
সে সময় লোডশেডিং হয় এক হাজার ৪২ মেগাওয়াট। দুপুর ১টায় লোডশেডিং বেড়ে হয় এক হাজার ১৫২ মেগাওয়াট, ২টায় এক হাজার ৩২১ মেগাওয়াট এবং বেলা ৩টায় এক হাজার ৬৪৮ মেগাওয়াট। অথচ এক দিন আগে ১৫ আগস্ট দিবাগত রাত (১৬ আগস্ট) ১২টায় লোডশেডিং ছিল ৩৭৫ মেগাওয়াট, ১টায় ৩১২ মেগাওয়াট ও ২টায় ২৯৫ মেগাওয়াট। একইভাবে ১৬ আগস্ট দুপুর ১টায় ৪৩৩ মেগাওয়াট, ২টায় ৪৪২ মেগাওয়াট এবং বেলা ৩টায় লোডশেডিং হয় ৬৯৭ মেগাওয়াট।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, তেল ও গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রগুলোয় গতকাল বিদ্যুৎ উৎপাদন বেশি কমেছে। এর মধ্যে ১৬ আগস্ট রাত ১২টায় বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় ১৩ হাজার ৩৮৭ মেগাওয়াট ও বেলা ৩টায় ১২ হাজার ৪৭০ মেগাওয়াট। আর ১৭ আগস্ট রাত ১২টায় উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১২ হাজার ৪৭৭ মেগাওয়াট ও বেলা ৩টায় ১১ হাজার ৯২৪ মেগাওয়াট। অর্থাৎ গড়ে ৫০০ থেকে এক হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত উৎপাদন কম হয়েছে। যদিও এ সময় চাহিদা বেড়ে গেছে।
পিডিবির তথ্য বলছে, ১৬ আগস্ট ফার্নেস অয়েলচালিত কেন্দ্রগুলো থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ এক হাজার ৮১৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। যদিও গতকাল বেলা ৩টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ উৎপাদন হয় এক হাজার ৭১৬ মেগাওয়াট। আবার গতকাল গ্যাসচালিত কেন্দ্রে বেলা ৩টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ ছয় হাজার ২৪১ মেগাওয়াট উৎপাদন হয়। তবে ১৬ আগস্ট এ কেন্দ্রগুলোয় বেলা ৩টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ উৎপাদন হয়েছিল ছয় হাজার ৫৩১ মেগাওয়াট।
প্রসঙ্গত, গতকাল গ্যাস সংকটে ১৬টি ও ফার্নেস অয়েল সংকটে ৪৬টি কেন্দ্র পুরোপুরি বা আংশিক বন্ধ ছিল।