ত্বকে কালো দাগ

শরীরে নানা ধরনের দাগ পড়ে, যার বেশিরভাগ এমনিতেই চলে যায়। আবার কিছু দাগ আছে, যেগুলো চিকিৎসার প্রয়োজন। কিছু দাগ আবার জটিল কোনো রোগের পূর্বাভাস হিসেবে দেখা হয়। অ্যাকানথোসিস নাইগ্রিক্যানস ত্বকের এমনই এক ধরনের দাগ। এতে ঘাড়, গলা, বগল, কুঁচকি, হাতের তালু, পায়ের তলার রেখা এবং কখনও কখনও হাতের আঙুলের পেছনের দিক অনেক কালো ও মোটা হয়ে যায়। কারও কারও নাভি, কপালেও এটা দেখা দেয়। কিছু কিছু মানুষের মুখের ভেতরে জিহ্বায় এ দাগের দেখা মেলে। অনেকের আবার হাঁটুর পেছনে, কনুইয়ের সামনের ভাগে, স্তনের নিচে চামড়ার ওপরে, পায়ুপথে হয়ে থাকে।

ধরন বুঝে এটা দুই রকম হয়। যেমন বিনাইন ও মেলিগন্যান্ট। এই সমস্যার পেছনে সবচেয়ে বেশি দায়ী শরীরের অস্বাভাবিক ওজন। অনেক সময় পারিবারিক সূত্র ধরে, জিনগত কারণে এটা হতে পারে। কিছু ওষুধের ব্যবহার যেমন নিকোটিনামাইড, কোর্টিকোস্টেরয়েড, ইনজেকশন ইনসুলিন, জন্মনিরোধক বড়ি, বিভিন্ন হরমোন থেরাপি ইত্যাদি কারণে এই রোগ দেখা দেয়। তবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, কখনও ক্যানসারের প্রাথমিক উপসর্গ হিসেবে এটি দেখা দেয়; বিশেষ করে পাকস্থলীর ক্যানসার, মূত্রনালির ক্যানসার, স্তন ক্যানসার, ডিম্বাশয় ক্যানসার, এমনকি ফুসফুসের ক্যানসারও হতে পারে। এ ছাড়া থাইরয়েড হরমোনের সমস্যা, কুশিং সিনড্রোম বা স্টেরয়েড আধিক্য, পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম রোগের প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে অ্যাকানথোসিস নাইগ্রিক্যানস হয়। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স, টাইপ-২ ডায়াবেটিস মেলিটাস। এমনকি কম বয়সী ছেলেমেয়ের মধ্যেও এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। যারা এ সমস্যায় ভোগে, তাদের ভবিষ্যতে ডায়াবেটিস ও অন্যান্য মেটাবলিক রোগের ঝুঁকি বেশি।

চিকিৎসা: যাদের ওজন বেশি, তাদের অবশ্যই ওজন কমানোর চেষ্টা করতে হবে। কোনো হরমোনজনিত ভারসাম্যহীনতা আছে কি না, তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে। এ ছাড়া কিছু মলম, যেমন ট্রেটিনোইন, ২০ শতাংশ ইউরিয়া, ভিটামিন ডি, স্যালিসাইলিক অ্যাসিড ক্রিম অনেকের ভালো কাজ করে। যাদের মলমে একেবারেই কাজ করে না, তাদের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে আধুনিক কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে।

ডা. জাহেদ পারভেজ

সহকারী অধ্যাপক, চর্ম ও যৌনরোগ বিভাগ

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০