শেয়ার বিজ ডেস্ক: রাজতন্ত্র সংস্কারের দাবিতে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে স্থানীয় সময় রোববার বিক্ষোভ মিছিল করেছে কয়েক হাজার মানুষ। দেশটির আদালতের রায় উপেক্ষা করেই হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমে আসেন। এর আগে দেশটির আদালত সতর্ক করেছিল যে, ‘এ ধরনের দাবি রাজতন্ত্র উচ্ছেদের পরোক্ষ উদ্যোগ’। খবর: রয়টার্স।
বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ব্যাংককে কয়েক শত দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়। দাঙ্গা পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতির মধ্যেই বিক্ষোভকারীরা মিছিল করে এগিয়ে যায়। তাদের হাতে হাতে থাকা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ডে ‘নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্র নয়’ এবং ‘সংস্কার বিলুপ্তি নয়’ লেখা ছিল।
বিক্ষোভকারীরা মিছিল নিয়ে ব্যাংককের জার্মান দূতাবাসের সামনে উপস্থিত হওয়ার পর এক বিক্ষোভকারী একটি বিবৃতি পাঠ করেন, এতে বলা হয়, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাজার ক্ষমতা বৃদ্ধিতে থাইল্যান্ড গণতন্ত্র থেকে দূরে সরে গিয়ে নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্রে ফিরে যাচ্ছে। এ দেশ অবশ্যই এমন একটি পদ্ধতির মাধ্যমে শাসিত হবে যেখানে সবার সমান অধিকার থাকবে, এটি প্রতিষ্ঠার জন্যই এ লড়াই।’
গত বছরের অক্টোবরেও বিক্ষোভকারীরা মিছিল নিয়ে জার্মান দূতাবাসে গিয়েছিল। থাইল্যান্ডের রাজা মাহা ভাজিরালংকরন অধিকাংশ সময়ই জার্মানিতে থাকেন।
বিক্ষোভকারী পিয়াউয়িথ পলিসুয়ান (২৫) বলেন, ‘আপনারা (কর্তৃপক্ষ) শুধু নিজেদের ইচ্ছানুযায়ীই কাজ করতে চান আর বিরুদ্ধবাদীদের খারাপ মানুষ হিসেবে দেখেন, সমাজ যদি এভাবেই চলতে থাকে তাহলে আমরা সামনে এগোবো কী করে?
এ প্রতিবাদ থাইল্যান্ডে দীর্ঘদিন ধরে চলা নিষেধাজ্ঞাকে ভেঙে দিয়েছে। দেশটির আইন অনুযায়ী রাজতন্ত্রের অবমাননার দায়ে যে কারো সর্বোচ্চ ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। ‘থাই লইয়ার্স ফর হিউম্যান রাইটস’ গোষ্ঠীর রেকর্ড অনুযায়ী, গত বছর আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে ওই আইনের অধীনে অন্ততপক্ষে ১৫৭ জন শাস্তি পেয়েছেন।
গত বছর সাবেক অভ্যুত্থান নেতা, প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান-ওচাকে (৬৬) অপসারণের দাবিতে তরুণদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ শুরু হয়। কয়েক দশকের মধ্যে এ আন্দোলনটি দেশটির রাজতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে ওঠে।
গত সপ্তাহে দেয়া এক রায়ে দেশটির সাংবিধানিক আদালত বলেছে, গত বছরের আগস্টে আন্দোলনকারী তিন নেতার জানানো রাজতন্ত্র সংস্কারের আহ্বান অসাংবিধানিক এবং প্রতিষ্ঠানের পতন ঘটানোর ষড়যন্ত্র।