শেয়ার বিজ ডেস্ক : দক্ষিণ কোরিয়ায় থাকা চারটি কারখানার মধ্যে একটি কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কিন গাড়িনির্মাতা প্রতিষ্ঠান জেনারেল মোটরস (জিএম)। বাকিগুলোর বিষয়ে এক সপ্তাহের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নেবে প্রতিষ্ঠানটি। এশিয়াতে থাকা লোকসানি কারখানাগুলো বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ওই কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সাম্প্রতিক সময়ে অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও বিশেষ করে থাইল্যান্ডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে জিএম। খবর রয়টার্স।
বিশ্বের অন্যতম বড় গাড়িনির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি বলছে, বাকি কারখানাগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে খরচ কমিয়ে কারখানাগুলোকে লোকসানের হাত থেকে বাঁচানো যায় কি না, তা খতিয়ে দেখবে তারা। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সরকার ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলাপ করার কথা জানিয়েছে জেনারেল মোটরস। কর্মীদের জন্য নির্ধারিত হয়েছে স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়ার কর্মসূচি। প্রতিষ্ঠানের প্রেসিডেন্ট ড্যান আম্মান বলেন, ‘সময় কম। সবাইকে দ্রুত কাজ করতে হবে।’
দক্ষিণ কোরিয়ার বন্ধ করে দেওয়া কারখানাটি সিউলের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। কারখানাটিতে দুই হাজার লোকবল কর্মরত ছিল। গত বছর থেকে কারখানাটি তার সর্বোচ্চ উৎপাদন ক্ষমতার মাত্র ২০ শতাংশ ব্যবহার করতে পেরেছে। জিএমের বাকি তিনটি কারখানা ২০১৭ সালে চার লাখ ৮৫ হাজার ৪০৩টি গাড়ি গাড়ি তৈরি করেছে। কোরিয়াতে উৎপাদিত গাড়ির অর্ধেকই অন্য দেশে রফতানি করে জিএম।
জেনারেল মোটরসের এই সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন। তার ঘোষিত প্রধান অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ছিল অধিক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে কাজের নিশ্চয়তা বিধান। এ নিয়ে বিরোধী দলের নেতারা সরকারের সমালোচনা করেছে। তাদের বক্তব্য, জিএমকে কারখানা বন্ধ করতে দিয়ে সরকার তাদের কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। এতে জীবিকা হারাবে অনেক শ্রমিক। সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত জিএমের নিজস্ব। এমনকি জিএমকে সাহায্য করবার প্রস্তাবও দিয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়া।
দক্ষিণ কোরিয়া দীর্ঘদিন জিএমের কাছে কম খরচে উৎপাদনের জন্য পছন্দের জায়গা ছিল। তাদের বার্ষিক উৎপাদনের সর্বোচ্চ এক-পঞ্চমাংশ একসময় উৎপাদিত হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। কিন্তু বাড়তে থাকা মজুরি, পড়তে থাকা সিডান গাড়ির চাহিদা এবং চীনে করা নতুন বিনিয়োগের প্রভাবে আবেদন কমে যায় দক্ষিণ কোরিয়ার কারখানার। জিএমের মতে, চীনের হিসাব বাদ দিলে ২০১৬ সালে এশিয়ার কারখানাগুলোতে তাদের এক দশমিক আট বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে।