দক্ষিণ চীন সাগরে উত্তেজনা কমাতে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের আলোচনা

দক্ষিণ চীন সাগরের কৌশলগত পুরো সমুদ্রপথের ওপর মালিকানা দাবি করে আসছে চীন। এতে আপত্তি জানিয়ে আসছে ফিলিপাইন, ব্রুনেই, মালয়েশিয়া, তাইওয়ান ও ভিয়েতনাম। এই পথে বছরে তিন লাখ কোটি ডলারের পণ্য পরিবহন হয়ে থাকে।

শেয়ার বিজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সালিভান এবং চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বেইজিংয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো বৈঠক করেছেন। বৈঠকে যে সব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে সম্ভাব্য বৈঠক এবং দক্ষিণ চীন সাগরে উত্তেজনা। খবর: ভয়েস অব আমেরিকা।

উভয় পক্ষই বলেছে, আলোচনা অকপট, বাস্তব এবং গঠনমূলক হয়েছে। রাষ্ট্র পরিচালিত সিনহুয়া নিউজ এজেন্সি ওয়াংকে উদ্ধৃত করে বলেছে, চীন-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক সঠিক পথে রাখার উপায় দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের দিক-নির্দেশনার ওপর নির্ভর করছে।
হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে নেতা পর্যায়ের ফোনালাপের পরিকল্পনা নিয়ে দুজনের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। সিনহুয়া জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর মধ্যকার সম্ভাব্য বৈঠক নিয়েও দুজন আলোচনা করেছেন।
বৈঠকের চীনা বর্ণনা অনুসারে, সালিভান এবং ওয়াং দুই দেশের সামরিক যোগাযোগের গুরুত্ব এবং তাদের সামরিক থিয়েটার কমান্ডারদের মধ্যে উপযুক্ত সময়ে ভিডিও কল করার গুরুত্ব নিয়েও আলোচনা করেছেন।
তাইওয়ান প্রণালীতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার পাশাপাশি ওয়াং এবং সালিভান দক্ষিণ চীন সাগরের বিরোধ নিয়েও আলোচনা করেছেন। ওয়াং ফিলিপাইনকে সমর্থন করার বিষয়ে ওয়াশিংটনকে সতর্ক করেছেন।
সিসিটিভিতে বলা হয়েছে, চীনে সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখন্ডতা ক্ষুণ্ণ করার জন্য দ্বিপক্ষীয় চুক্তিগুলোকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করা যুক্তরাষ্ট্রের উচিত হবে না এবং ফিলিপাইনের বিধি লঙ্ঘনের কর্মকাণ্ডকে সমর্থন বা ক্ষমা করা উচিত নয়।
হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সালিভান দক্ষিণ চীন সাগরে ফিলিপাইনের বৈধ সামুদ্রিক অভিযানের বিরুদ্ধে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের অস্থিতিশীল পদক্ষেপের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
দক্ষিণ চীন সাগরে ফিলিপাইনের বেশ কয়েকটি জাহাজের সঙ্গে চীনের জাহাজের সংঘর্ষ হয়েছে, যা ওয়াশিংটনকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ম্যানিলার পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি রয়েছে। মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় কমান্ডের প্রধান অ্যাডমিরাল স্যামুয়েল পাপারো বলেন, দক্ষিণ চীন সাগরে ফিলিপাইনের জাহাজগুলোকে পাহারা দেয়ার বিষয়ে আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী প্রস্তুত।
গত জুনে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জাপান ও ফিলিপাইনের নৌবাহিনীর অংশগ্রহণে দক্ষিণ চীন সাগরে দুই দিনের সামরিক মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। দক্ষিণ চীন সাগরে ফিলিপাইনের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে এ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহরের ওয়েবসাইটে এ কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, অবাধ নৌযান চলাচল নিশ্চিতে সমুদ্রপথে সহযোগিতামূলক কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে আয়োজন করা হয় এই মহড়ার।
এ মহড়ার মধ্য দিয়ে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা জোরদারে এই চার দেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত হয়েছে। মহড়ায় চারটি যুদ্ধজাহাজ অংশ নিয়েছে। সশস্ত্র বাহিনীগুলোর মধ্যে সমন্বয় বাড়াতে এতে বিভিন্ন ধরনের অনুশীলন চালানো হয়।
এর আগে এপ্রিলে জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথ নৌ মহড়ায় অংশ নেয় ফিলিপাইন। দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসী আচরণের অভিযোগ এনে এসব দেশের প্রতি ঝুঁকছে ম্যানিলা।
দক্ষিণ চীন সাগরের কৌশলগত পুরো সমুদ্রপথের ওপর মালিকানা দাবি করে আসছে চীন। এতে আপত্তি জানিয়ে আসছে ফিলিপাইন, ব্রুনেই, মালয়েশিয়া, তাইওয়ান ও ভিয়েতনাম। এই পথে বছরে তিন লাখ কোটি ডলারের পণ্য পরিবহন হয়ে থাকে।
ক্যাপশন: চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই (ডানে) এবং হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সালিভান চীনের বেইজিং-এর ইয়ানকি হ্রদে আলোচনার আগে ছবির জন্য পোজ দিচ্ছেন

সিএনএন

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০