Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 2:10 am

দক্ষ মানবসম্পদ গড়তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিখাতের মধ্যে যোগসূত্র দরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক: বৈশ্বিক চাহিদার সঙ্গে মিল রেখে দেশে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি খাতের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপনের ওপর অধিক গুরুত্বারোপ করেছেন বিশ্লেষকরা। তারা জানান, শিল্পের চাহিদা অনুযায়ী মানবসম্পদ উন্নয়ন না করা গেলে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সুফল থেকে বঞ্চিত হবে বাংলাদেশ। কঠিন হবে এসডিজিসহ ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন।

গতকাল শনিবার রাজধানীর হাটখোলায় এফবিসিসিআই ইনোভেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার (এফআইআরসি) আয়োজিত ‘পাবলিক-প্রাইভেট একাডেমিয়া ব্রিজিং ফর স্কিল ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন।

যৌথভাবে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং এফবিসিসিআই ইনোভেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার (এফআইআরসি)। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আখতার হোসেন।

দেশে দক্ষ জনশক্তির ঘাটতির চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, গ্র্যাজুয়েটরা উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করছে ঠিকই, কিন্তু তারা ইংরেজিতে ঠিকমতো কথা বলতে পারেন না। জ্ঞান এবং দক্ষতায় ঘাটতি থাকার কারণে তারা উদ্যোক্তা হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত হতে পারেন না। আবার সম্মানজনক মজুরিতে চাকরিও পান না। এ সময় দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে সরকার, বেসরকারি খাত এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সম্মিলিত প্রচেষ্টা জোরদারের আহŸান জানান তিনি।

সভার কো-চেয়ারম্যান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফআইআরসির চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, বর্তমানে সরকার দক্ষতা উন্নয়নের ওপর বিশেষ জোর দিয়েছে, কিন্তু কোন খাতে কী ধরনের দক্ষতার প্রয়োজন সেটি আমাদের জানা নেই। আমাদের প্রচুর বিবিএ/এমবিএ গ্র্যাজুয়েট রয়েছে কিন্তু বিশেষায়িত শিক্ষায় দক্ষ কর্মী নেই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি খাতের মধ্যে যোগসূত্র না থাকাই এর মূল কারণ।

জসিম উদ্দিন আরও বলেন, আমাদের শুধু শ্রমিক তৈরি করলে চলবে না। এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন, এসডিজি অর্জন এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশ গড়তে হলে দক্ষ ব্যবস্থাপক তৈরি করতে হবে। কারণ আগামীতে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে হলে আমাদের নেগোসিয়েশনের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। শিক্ষার্থী ও উদ্যোক্তারা যাতে উদ্ভাবন, উন্নয়ন এবং গবেষণার কাজ করার সুযোগ পায় এফবিসিসিআই ইনোভেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার সেই ক্ষেত্র তৈরি করে দেবে বলে জানান তিনি।

এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন, নিঃসন্দেহে দেশে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে, তবে সেখানে সমন্বয়ের ঘাটতি ছিল। এখন সময় এসেছে সমন্বিতভাবে অগ্রসর হওয়ার। এফবিসিসিআই ইনোভেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারকে বলব এফবিসিসিআই সদস্যভুক্ত যত সমিতি রয়েছে সবার সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের সমস্যা, সম্ভাবনা এবং সক্ষমতার তথ্য সংগ্রহ করুন। সেগুলো পর্যালোচনার ভিত্তিতে খাতভিত্তিক গবেষণা ও উদ্ভাবনে জোর দেন তিনি।

এফআইআরসির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, একজন শিক্ষার্থী কোন বিষয়ের ওপর দক্ষতা অর্জন করবে সেটি পঞ্চম শ্রেণি, নবম শ্রেণি এবং উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে নির্ধারণের পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে। এতে শিক্ষার্থীরা যেমন শিল্পের চাহিদা অনুযায়ী বিশেষায়িত শিক্ষায় দক্ষ হয়ে উঠবে, তেমনি শিল্পও তার কাক্সিক্ষত দক্ষ জনশক্তি পাবে।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেনÑএফবিসিসিআই ইনোভেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক, পরামর্শক, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক ও বর্তমান পরিচালক, সাধারণ পরিষদের সদস্য, শিক্ষাবিদ, প্রযুক্তিবিদ, সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী নেতারা।