লেনদেন ও সূচক হ্রাস

দরপতনের শীর্ষে রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলো

মো. আসাদুজ্জামান নূর: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল মূল্য সূচকের বড় পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। টাকার অঙ্কেও লেনদেন কমেছে। আর এ দরপতনের শীর্ষে ছিল রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলো। অথচ আগের দিন সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধির তালিকায় এ কোম্পানিগুলোর প্রাধান্য ছিল।

লেনদেন চিত্রে দেখা গেছে, সূচক কমাতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখা শীর্ষ ১০টির মধ্যে ছয়টিই রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি, যেগুলোর দর গত কয়েক দিন ধরে টানা বাড়ছিল। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সাতটি, প্রকৌশল খাতের চারটি, খাদ্য ও বিবিধ খাতে দুটি করে এবং ব্যাংক, আর্থিক ও টেলিকমিউনিকেশন খাতের একটি করে কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত। এর প্রতিটিই দর হারিয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি দর হারিয়ে সার্কিট ব্রেকার স্পর্শ করেছে।

দুই দিনে ১১৫ পয়েন্ট সূচক বেড়ে ৭ ডিসেম্বরের পর প্রথমবারের মতো সাত হাজার পয়েন্ট ছাড়িয়ে গেলেও সেটি আবার নিচে নেমে গেছে। কমেছে লেনদেনও। আগের দিন দুই হাজার কোটি টাকার বেশি হাতবদল হলেও গতকাল কোনো রকমে দেড় হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ৯৭৬ কোটি ৮৮ লাখ ৫৩ হাজার টাকা।

লেনদেনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত। ১২ দশমিক ৮৬ শতাংশ লেনদেন হয়েছে এ খাতে। তবে ব্যাপক দরপতন দেখা গেছে। ৯১ শতাংশ কোম্পানির দরপতনের বিপরীতে একটি করে কোম্পানির দরবৃদ্ধি ও অপরিবর্তিত থাকতে দেখা গেছে।

১২ দশমিক ৮৫ শতাংশ লেনদেন করে দ্বিতীয় স্থানে ছিল বিবিধ খাত। এ খাতে ৭৬ শতাংশ দরপতনের বিপরীতে বাকি কোম্পানিগুলোর দরবৃদ্ধি দেখা গেছে। এ দুটি খাত ছাড়া আর কোনো খাতের লেনদেন ১০ শতাংশ ছাড়ায়নি।

লেনদেনে এরপর রয়েছে প্রকৌশল খাতে আট দশমিক ২২ শতাংশ, ওষুধ ও রসায়ন খাতে ছয় দশমিক ৯৬ শতাংশ, বস্ত্র খাতে ছয় দশমিক ৮৫ শতাংশ, ট্যানারি খাতে ছয় দশমিক ৬৮ শতাংশ, ব্যাংক খাতে ছয় দশমিক ১৬ শতাংশ, টেলিযোগাযোগ খাতে ছয় দশমিক ১৫ শতাংশ ও জীবন বিমা খাতে পাঁচ দশমিক ০৯ শতাংশ। এর মধ্যে বস্ত্র ও টেলিযোগাযোগ খাতে দরবৃদ্ধি দেখা গেছে। বাকি খাতগুলোর লেনদেন ছিল ছয় শতাংশের নিচে।

দিন শেষে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে মাত্র ৮৮টি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। গত মঙ্গলবার বেড়েছিল ১৮৯টি কোম্পানির। বিপরীতে দর কমেছে ২৪৩টি কোম্পানির। ফলে সিংহভাগ কোম্পানির দরপতনের কারণে ডিএসইর সব সূচক কমেছে। প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ৫৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ছয় হাজার ৯৯৬ পয়েন্টে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএস৩০ সূচক ১৯ পয়েন্ট ও ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক এক পয়েন্ট কমেছে।

সূচক পতনে প্রধান ভূমিকায় ছিল বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি পাওয়ার গ্রিড। কোম্পানিটির ছয় দশমিক ৩৭ শতাংশ দরপতনে সূচক কমেছে ৯ দশমিক ছয় পয়েন্ট। এ তালিকায় শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে সরকারি কোম্পানি ছিল আরও পাঁটি। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবির শেয়ারদর দুই দশমিক ৮৩ শতাংশ কমায় সূচক আট দশমিক ৫৯ পয়েন্ট, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্ল কোম্পানির দর ছয় দশমিক ০২ শতাংশ কমায় সূচক ছয় দশমিক ৫৮ পয়েন্ট, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের দর ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ কমায় সূচক পাঁচ দশমিক ৪১ পয়েন্ট, তিতাস গ্যাসের দর তিন দশমিক ৬৩ শতাংশ কমায় সূচক চার দশমিক ৯৭ পয়েন্ট ও ডেসকোর দর সাত দশমিক ৬৯ শতাংশ কমায় সূচক কমেছে তিন দশমিক ৯৯ পয়েন্ট।

অন্যান্য কোম্পানির মধ্যে লাফার্জহোলসিম সিমেন্ট ৯ দশমিক ০৭ পয়েন্ট, বেক্সিমকো ৭ দশমিক ০৯, ইউনাইটেড পাওয়ার ৬ দশমিক ১৫ পয়েন্ট ও বেক্সিমকো ফার্মা ৪ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট সূচক কমিয়েছে। অর্থাৎ এ ১০টি কোম্পানির কারণেই সূচক কমেছে ৬৫ দশমিক ৭১ পয়েন্ট, যার মধ্যে সরকারি ছয় কোম্পানি কমিয়েছে ৩৫ দশমিক ০৫ পয়েন্ট।

বিপরীতে রবি, গ্রামীণফোন, আরএকে সিরামিকস, বিকন ফার্মা, এসআইবিএল, ফরচুন সুজ, ইবিএল, লিনডে বিডি, আল-আরাফাহ্ ব্যাংক ও লাভেলো আইসক্রিম সূচকে যোগ করেছে ৮০ দশমিক ০২ পয়েন্ট।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০