Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 4:39 pm

দরিদ্রদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার নির্মাণ করবে সরকার: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: সারা দেশে দরিদ্র মানুষের কাঁচা ও জীর্ণ-শীর্ণ শৌচাগার বদলে আধুনিক স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটারি শৌচাগার নির্মাণ করে দেবে সরকার। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রাথমিকভাবে ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হবে। বাংলাদেশ সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে দুর্যোগ-বিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলি (এসওডি), ২০১৯ বিষয়ে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) সদস্যদের অংশগ্রহণে আয়োজিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান এসব কথা বলেন। 

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গত বুধবার সংসদীয় কমিটির মিটিং হয়েছে। সেখানে একটি প্রকল্পের অনুমোদন নিয়েছি। আমরা দেখেছি ওয়াটার এইড, সাজেদা ফাউন্ডেশনসহ অনেক এনজিও স্যানিটেশন নিয়ে কাজ করে। কিন্তু ক্যাপাসিটি কম। আমরা সারা বাংলাদেশে দেখেছি লাখ লাখ পরিবারে টয়লেটগুলো জীর্ণ-শীর্ণ, কলাপাতা দিয়ে ঢাকা, পলিথিন দিয়ে ঢাকা, পুরনো শাড়ি দিয়ে ঘেরাও করা কাঁচা পায়খানা এখনও আছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি বাংলাদেশের যত পরিবার এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ টয়লেট ব্যবহার করে, আমরা সেই টয়লেটগুলো রিপ্লেস করে আধুনিক মানসম্মত স্যানিটারি টয়লেট তৈরি করে দেব। এজন্য প্রথম পর্যায়ে ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেব। এরপর সমগ্র বাংলাদেশে সব দরিদ্র-অতিদরিদ্র মানুষের যে টয়লেটগুলো আছে, সেগুলো স্বাস্থ্যসম্মত করে দেব।’

এনামুর রহমান বলেন, ‘এই টয়লেটের কারণে পানি ও মলবাহিত আমাশয়, কৃমিসহ অন্যান্য রোগ ছড়ায়। এটা যদি আমরা করে দিতে পারি, তাহলে পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধ করতে পারব এবং কৃমির কারণে যে পুষ্টিহীনতা সেটা প্রতিরোধ করে নতুন প্রজš§কে পুষ্টিবান হিসেবে গড়ে তুলতে পারব।’ তিনি বলেন, ‘লাওসে একটি কনফারেন্সের আলোচনায় এসেছে, পানিবাহিত রোগের কারণে মানুষ খর্বাকৃতি হয়। আমরা যদি এটা করতে পারি তাহলে মানুষের গ্রোথও ভালো হবে।’

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আগে আসলে কে টেন্ডার নেবে, লাভ করবে কীভাবে, সেটাই ছিল লক্ষ্য। এখন আমরা সেটা থেকে বেরিয়ে এসেছি। জনগণের কল্যাণের জন্য কোনটা লাগবে, সেটা নিয়ে আমরা কাজ করি। আমরা যেন সততা, নিষ্ঠা ও দেশপ্রেমে এই মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সফল হতে পারি। সেটা অনেকটা সফল হয়েছি, অনেক স্বচ্ছতা আসছে।’

উপকূলীয় এলাকায় জলাবদ্ধতার বিষয়ে এক সংবাদিক দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘উপকূল দিবসে অনেক দাবি আছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি বলেছেন, ডেল্টা প্ল্যানে যে ছয়টি হটস্পট আছে, তার মধ্যে একটা গুরুত্বপূর্ণ ও এক নম্বরে উপকূলীয় অঞ্চলে প্রতিবছর ঘূর্ণিঝড়ে বাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করে, জলাবদ্ধতা হয়, বোল্ডারগুলো ভেঙে যায়। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়নের কথা বলা আছে। ১০০ বছরের পরিকল্পনা হলেও প্রধানমন্ত্রী ১০ বছরের মধ্যে সমাধানের জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। আগামী ১০ বছরের মধ্যে এসব সমস্যার টেকসই ও স্থায়ী সমাধান হবে।’

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মহাসচিব মো. ফিরাজ সালাউদ্দিন, উপ-মহাসচিব মো. রফিকুল ইসলাম, ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) পরিচালক আহমাদুল হক এবং বিএসফআরএফের সভাপতি তপন বিশ্বাস কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন।