দর ফেসভ্যালুর নিচে নামলে কোম্পানিকে ওই শেয়ার কিনতে হবে

এখন অনেক শেয়ারের দর ফেসভ্যালুর নিচে। এ বিষয়ে একটি আইন করা উচিত, যাতে কোনো শেয়ারের দর ফেসভ্যালুর নিচে নামতে না পারে। শেয়ারদর ফেসভ্যালুর নিচে নামলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি বাধ্য থাকবে ওই শেয়ার কিনে নিতে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। খুজিস্তা নূর-ই-নাহারীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বালি সিকিউরিটিজ লিমিটেডের পরিচালক সৈয়দ সিরাজউদ্দৌলা এবং ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) প্রেসিডেন্ট সাইফ ইসলাম দিলাল।

সৈয়দ সিরাজ-উদ-দৌলা বলেন, ক্রমান্বয়ে বাজার খারাপ হওয়ায় আস্থা হারাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে সূচকেও। ফলে বাজারে বড় ধরনের অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। বিনিয়োগকারীরা নিঃস্ব হচ্ছেন। তাই তাদের ডিএসইর সামনে বিক্ষোভ করতে দেখা যাচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে সরকার, বিএসইসি, ডিএসইসি ও আইসিবির পক্ষ থেকে কোনো ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না। আবার পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত মিউচুয়াল ফান্ডগুলো তেমন একটা ভূমিকা রাখতে পারছে না। বাইরের দেশে মিউচুয়াল ফান্ডগুলো সে দেশের পুঁজিবাজারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কিন্তু আমাদের দেশের পুঁজিবাজারের মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। বিশ্বের কোনো পুঁজিবাজারে এমন চিত্র দেখা যায় না।

 তিনি আরও বলেন, এখন অনেক শেয়ারের দর ফেসভ্যালুর নিচে।  এ বিষয়ে একটি নিয়ম করা উচিত, যাতে কোনো শেয়ারের দর নামতে না পারে। এখন সময় এসেছে বিএসইসি ও ডিএসই’র এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার। কেননা, একটি শেয়ারের দর ১০ টাকার নিচে নেমে যাচ্ছে। আবার কিছুদিন আগে অন্য একটি কোম্পানি ৪০ টাকায় বাজারে আসছে। এখন আবার ওই কোম্পানির  শেয়ারদর ২০ টাকায় নেমে এসেছে। কথা হচ্ছে, ৪০ টাকার নিচে কীভাবে শেয়ারদর নেমে আসে। এ বিষয়ে নিয়ম থাকা উচিত, যে দরে বাজারে কোম্পানি আসবে এবং যারা আনবেÑতাদের একটি নিশ্চয়তা দেওয়া যেন যে দরে আসবে, সে দরের নিচে নামতে না পারে। এ নিশ্চয়তা দেওয়া গেলে বিনিয়োগকারীরা বাজারে আসবেন। এখন বাজারে কোনো নিয়ম-কানুন নেই; তাই ইচ্ছামত কোম্পানি আসছে এবং টাকা নিয়ে চলে যাচ্ছে। ফলে বিনিয়োগকারীরা নিঃস্ব হচ্ছেন। যাদের কাছে এখন টাকা আছে, তারাও বিনিয়োগ করতে ভয় পাচ্ছেন।

সাইফ ইসলাম দিলাল বলেন, পুঁজিবাজারে এ পর্যন্ত অনেক সংস্কার হয়েছে। দেশের পুঁজিবাজার আন্তর্জাতিক মানের হয়েছে; কিন্তু সেভাবে কী বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে পেরেছে? আবার বিনিয়োগকারীদের সেকেন্ডারি মার্কেটের চেয়ে প্রাইমারি মার্কেটের প্রতি ঝোঁক বেশি। কারণ, প্রাইমারি মার্কেটে অল্প সময়ে লাভবান হওয়া যায়। তারা মনে করেন, সেকেন্ডারি মার্কেটে ঝুঁকি বেশি এবং এখানে টিকে থাকা সম্ভব নয়। গত দুবছরে আইপিওর মাধ্যমে যে কোম্পানিগুলো আসছে, তারাও মানসম্মত নয়। কার স্বার্থে এসব কোম্পানি বাজারে আসার অনুমোদন পেল বা কীভাবে এলো, কেনইবা নিয়ন্ত্রক সংস্থা অনুমোদন দিল? আবার অনেক ভালো কোম্পানি দীর্ঘদিন ধরে আবেদন করেও বাজারে আসতে পারছে না। যদি এসব বিষয়ে কোনো জবাবদিহি না থাকে, তাহলে বাজার ভালো হওয়ার লক্ষণ কম।

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০