নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসইর মূল্য সূচক উত্থানের মধ্য দিয়ে গতকাল লেনদেন শেষ হয়। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ডিএসইর সূচক কমেছিল ১৯ পয়েন্ট। সোমবার কমেছিল ৪৯ পয়েন্ট। গত মঙ্গলবার কমেছে ৪৫ পয়েন্ট। গতকাল বুধবার লেনদেনের একপর্যায়ে সূচক ২২ পয়েন্টের বেশি পড়ে যায়। তারপর তা কভার করে ওপরে ওঠার উঁকিঝুঁকি দিতে থাকে। লেনদেনের বেশিরভাগ সময়ই সূচক পজিটিভ মুডেই ছিল। দুপুর ১টার দিকে সূচক ২০ পয়েন্টের বেশি ইতিবাচক হয়। তবে গতকাল শেষ পর্যন্ত সূচক ছয় পয়েন্ট যোগ হয়েছে।
পুঁজিবাজারে দুর্বল কোম্পানির শেয়ারের অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির প্রবণতা লক্ষ করা গেছে। সবচেয়ে বেশি দর বাড়া এমন ছয়টি কোম্পানির মধ্যে চারটিই লোকসানি কোম্পানি, যেগুলো গত এক যুগেও লভ্যাংশ দিতে
পারেনি বিনিয়োগকারীদের। সবচেয়ে বেশি ৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ বেড়েছে লোকসানে ডুবে থাকা মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজের দর। আগের দিন দর ছিল ৩০ টাকা ১০ পয়সা। সেটি বেড়ে হয়েছে ৩৩ টাকা ১০ পয়সা।
সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ দর বেড়েছে আরেক লোকসানি ইমাম বাটনের দর। সর্বশেষ ২০১০ সালে ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেয়া কোম্পানিটি টানা ১১ বছর লোকসান দিয়েছে। এবারও তৃতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত শেয়ারপ্রতি ৫১ পয়সা লোকসানে থাকা কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ আছে পাঁচ টাকা ৮১ পয়সা। আর এক দিনেই দর বেড়েছে ১০ টাকা ৬০ পয়সা। তিন মাসে কোম্পানিটির দর ৩৪ টাকা ৩০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১১৭ টাকা ৩০ পয়সা।
সর্বোচ্চ দর বেড়েছে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক লিমিটেডের। কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ সম্প্রতি পুনর্গঠিত হয়েছে। শেয়ারটির দর বেড়েছে চার টাকা ৮ পয়সা বা ৯ দশমিক ৮৫ শতাংশ। সর্বশেষ ৫৩ টাকা ৫ পয়সা দরে লেনদেন হয় প্রতিটি শেয়ার।
মেঘনা গ্রুপের লোকসানি আরেক কোম্পানি মেঘনা কনডেন্সড মিল্কের দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ। দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলো হলোÑআলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি, ফাইন ফুডস লিমিটেড, ইনটেক লিমিটেড, মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, আইসিবি এএমসিএল ফার্স্ট অগ্রণী ব্যাংক মিউচুয়াল ফান্ড, সাফকো স্পিনিংস মিলস লিমিটেড ও সোনারগাঁও টেক্সটাইল লিমিটেড।
গতকাল প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬ দশমিক ১৪ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ০৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ৩১৭ দশমিক ৮০ পয়েন্টে।
ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ্ সূচক ২ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ১৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৩৮১ দশমিক ৪৭ পয়েন্টে। তবে ডিএসই-৩০ সূচক ১ দশমিক ৪৬ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ০৬ শতাংশ কমেছে।
ডিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৬৯৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকার, যা আগের কার্যদিবস থেকে ৩১ কোটি ৫১ লাখ টাকা কম। আগের কার্যদিবস লেনদেন হয়েছিল ৭২৫ কোটি ৮৮ লাখ টাকার।
ডিএসইতে ৩৮২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৯৩টির বা ৫০ দশমিক ৫২ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। দর কমেছে ১২৩টির বা ৩২ দশমিক ২০ শতাংশের এবং ৬৬টির বা ১৭ দশমিক ২৮ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১১ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ০৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৬০২ দশমিক ৫২ পয়েন্টে।
এদিন সিএসইতে হাতবদল হওয়া ২৭৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ারদর বেড়েছে ১১২টির, কমেছে ১২২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৩টির দর। আজ সিএসইতে ৩৮ কোটি ২৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।