নিজস্ব প্রতিবেদক : শেয়ারদর বাড়ার পেছনে কোনো মূল্যসংবেদনশীল তথ্য নেই প্রকৌশল খাতের কোম্পানি আজিজ পাইপস লিমিটেডের। সম্প্রতি অস্বাভাবিক দর বাড়ার কারণ জানতে চাইলে কোম্পানিটি এমন তথ্য জানায়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সম্প্রতি কোম্পানিটির অস্বাভাবিক দর বাড়ার কারণ জানতে চেয়ে গত রোববার চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) নোটিস পাঠায়। জবাবে কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই শেয়ারদর বাড়ছে বলে জানায় কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।
কোম্পানিটির গত ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ধারাবাহিকভাবে শেয়ারদর বাড়ছে। ডিএসইতে ওইদিন কোম্পানির শেয়ারদর ছিল ১০৩ টাকা ৭০ পয়সা, গত ২০ ফেব্রুয়ারি লেনদেন হয় ১১৯ টাকা ৩০ পয়সায়। এ হিসাবে মাত্র চার কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়েছে ১৫ টাকা ৬০ পয়সা। আর এই দর বাড়াকে অস্বাভাবিক মনে করছে ডিএসই ও সিএসই।
এদিকে কোম্পানিটির সর্বশেষ প্রকাশিত চলতি হিসাববছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, টার্নওভার কমার পাশাপাশি বিক্রীত পণ্যের ব্যয় বেড়েছে; একইসঙ্গে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ থাকার কারণে চলতি হিসাববছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর, ২০২১) শেয়ারপ্রতি লোকসান বেড়েছে। চলতি হিসাববছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৬৬ পয়সা (লোকসান), যা আগের বছর একই সময়ে ছিল চার পয়সা। অর্থাৎ, আগের বছরের তুলনায় লোকসান বেড়েছে ৬২ পয়সা। আর প্রথম দুই প্রান্তিক বা ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর, ২০২১) ইপিএস হয়েছে এক টাকা ৯৯ পয়সা (লোকসান), যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১১ পয়সা। এছাড়া ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৭ টাকা ছয় পয়সা (লোকসান), যা ২০২১ সালের ৩০ জুন ছিল ১৫ টাকা ৯ পয়সা। আর প্রথম দুই প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ দাঁড়িয়েছে ৬৮ পয়সা (ঘাটতি); অথচ আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৬৪ পয়সা। দ্বিতীয় প্রান্তিকে নগদ অর্থপ্রবাহ কমার কারণ হিসেবে কোম্পানিটি জানিয়েছে, তাদের পাওনা অর্থ আদায় কম হয়েছে; ফলে নগদ অর্থপ্রবাহ কমেছে।
উল্লেখ্য, কোম্পানিটির দৈনন্দিন ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মূলধনের অভাব, ব্যাংক ঋণের জটিলতা, আর্থিক সংকট এবং ঋণের পাশাপাশি কাঁচামাল সংকট ও মজুতের অভাবে কারখানাটির উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।
কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ ৩০ জুন, ২০২১ সমাপ্ত হিসাববছরের আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে কোনো লভ্যাংশ না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৮২ পয়সা (লোকসান)। ৩০ জুন, ২০২১ তারিখে শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ১৫ টাকা ৯ পয়সা (লোকসান)। এছাড়া এই হিসাববছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ (এনওসিএফপিএস) হয়েছে ১৪ পয়সা।
কোম্পানিটি ১৯৮৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘বি’ ক্যাটেগরিতে লেনদেন হচ্ছে। ৫০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন পাঁচ কোটি ৩৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা। কোম্পানির মোট ৫৩ লাখ ৪৭ হাজার ১২৫ শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা বা পরিচালকদের কাছে ২৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কাছে ছয় দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে ৬৯ দশমিক ৩২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।