মো. আসাদুজ্জামান নূর: টানা চার দিন উত্থানের পর গতকাল দ্বিতীয় কর্মদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক সামান্য কমেছে। পাশাপাশি কিছুটা কমেছে লেনদেন। এদিন লেনদেন শুরু হয় ১৩ পয়েন্ট বেড়ে। পরে দিনভর উত্থান-পতনের মধ্যে বেলা শেষে এক দশমিক ৭৯ পয়েন্ট কমে শেষ হয় লেনদেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, টানা চার দিন বৃদ্ধির পর সামান্য পতন স্বাভাবিক দর সংশোধন প্রক্রিয়া। এ চার দিনে যারা মুনাফা করতে পেরেছেন তারা শেয়ার বিক্রি করেছেন। তাই সূচকের এ কমে যাওয়া একেবারে অপ্রত্যাশিত ছিল, এমন নয়।
তবে সংশোধনে সূচকের পতনের খুব বেশি সুযোগ নেই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা দুই শতাংশ নির্ধারণ করে দেয়ায়। গতকাল ১৬৭টি কোম্পানির দর বৃদ্ধির বিপরীতে ১৭৮টি কোম্পানির দরপতনের ভিড়ে ৩৩টি কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল।
ফলে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স এক দশমিক ৭৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ৭৬৩ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসইএস শূন্য দশমিক ৪৭ পয়েন্ট এবং ডিএস৩০ সূচক ২ দশমিক ৭ পয়েন্ট হ্রাস পেয়েছে। আগের কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে ভূমিকা রাখা বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর দর পতনেই সূচক সামান্য কমেছে।
এদিকে সূচকের পাশাপাশি কমেছে লেনদেন। এদিন হাতবদল হয়েছে ৯৮৬ কোটি ৫১ লাখ ২০ হাজার টাকার শেয়ার ও ইউনিট। রোববার এটি ছিল ৯৯৮ কোটি ৭৩ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। গত বৃহস্পতিবার ৯ কর্মদিবস পর লেনদেন এক হাজার ৬১ কোটি ২০ লাখ ৬৬ হাজার টাকা হয়েছিল।
লেনদেন সবচেয়ে বেশি হয়েছে বস্ত্র খাতে। মোট লেনদেনের ২৭ দশমিক ৪ শতাংশই ছিল খাতটির দখলে। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ফার্মা খাতের লেনদেন হয়েছে এর প্রায় অর্ধেক। খাতটিতে হাতবদল হয়েছে লেনদেনের ১০ দশমিক ৫ শতাংশ। এছাড়া প্রকৌশল ৯ দশমিক ৬ শতাংশ, বিবিধ ৮ দশমিক ৩ শতাংশ, আইটি ৮ দশমিক ২ শতাংশ ও ব্যাংক খাতে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। বাকি খাতের লেনদেন পাঁচ শতাংশের নিচে ছিল।
ব্যাংক ও সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি বিনিয়োগ বাড়ানোর ঘোষণা দেয়ার পরপর দুই দিন লেনদেন হলো এক হাজার কোটি টাকার নিচে, যদিও আগের দিন ৯ কর্মদিবস পরে লেনদেন হাজার কোটির ওপরে উঠে এসেছিল। এরপর সেখান থেকে লেনদেন কমে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে, বিনিয়োগ বাড়ানোর ঘোষণা এলেও শেয়ার কেনায় সতর্ক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো।
সোমবার খাতওয়ারি সবচেয়ে ভালো দিন গেছে জীবন বিমা খাতের। এই খাতের ১৩টি কোম্পানির মধ্যে ১২টিরই দর বেড়েছে। কমেছে একটির। ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৮টির, কমেছে কেবল একটির। বাকিগুলো দর ধরে রাখতে পেরেছে। সিমেন্ট খাতের সাতটির মধ্যে ছয়টি এবং কাগজ ও আনুষঙ্গিক খাতের ছয়টির মধ্যে চারটির দর বেড়েছে। ব্যাংক, ফার্মা, প্রকৌশল ও খাদ্য খাতে দেখা গেছে মিশ্র প্রবণতা। আগের দিন বস্ত্রের প্রায় সব কোম্পানির দর বাড়লেও এদিন কমেছে বেশিরভাগের।