নিজস্ব প্রতিবেদক: নির্বাচনকালীন সরকারের দাবি জানানো রাজনৈতিক দলগুলোকে ক্ষমতাসীন সরকারের কাছে তাদের দাবি তুলে ধরার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। সিইসি বলেন, ‘আপনারা যেসব কথা বলেছেন, অনেক দল এ কথাগুলো বলেছে। আপনাদের নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকার, নির্বাচনকালীন সরকার, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব আছে। বিভিন্ন দল থেকেও এসেছে। এগুলো নিয়ে আমাদের তরফ থেকে কিছু করার থাকলে… এগুলো পলিটিক্যাল বিষয়। আপনাদের দাবিগুলো সরকার জানবেন এবং আপনাদের দাবির চাপ বা প্রেসার কতটুকু- এগুলো সরকারকেও বুঝতে দেবেন। এগুলো পলিটিক্যাল ইস্যু, সাংবিধানিক সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে।’
গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির সঙ্গে সংলাপে ওই বিষয়ে ইসির এখতিয়ার না থাকার ইঙ্গিত দিয়ে তিনি এ কথা বলেন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের পঞ্চম দিনে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলোচনায় বসে ইসি। চেয়ারম্যান এম এ মুকিতের নেতৃত্বে কমিশনের কাছে ১৩ দফা সুপারিশ রাখে দলটি।
এসব প্রস্তাবে কয়েকটিকে ‘সমর্থনযোগ্য’ হিসেবে বর্ণনা করে আউয়াল বলেন, ‘সচেতনতার প্রয়োজন রয়েছে আপনাদের। আপনাদের সবলও হতে হবে, সরব হতে হবে। এখানে সবার মিলিত প্রয়াস হতে হবে। জাতীয় নির্বাচন কিন্তু হেলাফেলার জিনিস নয়। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি দল নির্বাচিত হবেন এবং তারা সরকার গঠন করবেন। … কাজেই আমরা মনে করি নির্বাচনটি হেলাফেলা নয়। সত্যি, জনপ্রতিনিধিত্বমূলক ও জনগণের সমর্থন নিয়ে সে সরকার গঠিত হওয়া উচিত। এ জন্য নিরপেক্ষ অবাধ নির্বাচন প্রয়োজন।’
নির্বাচনে ‘সামর্থ্য অনুযায়ী’ ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা বসানোর আশ্বাস দিয়ে সহিংসতা রোধেও ইসির পদক্ষেপের তুলে ধরেন তিনি।
সিইসি বলেন, ‘প্রত্যেকটি সংলাপে আমরা অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলো থেকে নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্রে সহিংসতা, অর্থশক্তি, পেশিশক্তিÑএই অভিযোগগুলো আমরা শুনেছি। প্রায় সব দলই এসব কথা বলেছে। পেশিশক্তি যাতে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, সেজন্য আপনাদের সহযোগিতা চাইব। নির্বাচন কমিশন একা করবে না। জেলা প্রশাসন, পুলিশ, বিজিবি, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এমনকি সেনাবাহিনীরও অংশগ্রহণ প্রয়োজন হতে পারে।’
নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ প্রত্যাশা করে তিনি বলেন, ‘যে প্রশ্নটা আপনারা করেছেনÑরাজনৈতিক দল যদি না আসে আমরা তাদের বাধ্য করতে পারব না, এটা আমরা বারবার বলেছি। বাধ্য করতে না পারলেও আমরা বারংবার তাদের অনুরোধ করে যাব।’
ইভিএম নিয়ে অনেকের সংশয় ও আস্থাহীনতার বিষয়ে ইসি ‘অবগত রয়েছে’ মন্তব্য করে হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা অন্ধভাবে ইভিএম নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। তবে এর যে কিছু ভালো দিক আছে আর মন্দ দিকটা যে আপনারা বলছেন সেটা আমরা উড়িয়ে দিচ্ছি না।’
সংলাপে জাতীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তাদের অংশ নেয়ার আহ্বান জানান সিইসি।