Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 12:11 pm

দাতারা না থাকলেও আমরা চলতে পারব

নিজস্ব প্রতিবেদক: পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, আমাদের সব দাতাগোষ্ঠী যদি চলেও যায়, তাহলেও আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে নিতে পারব; আমাদের নিজস্ব সম্পদ দিয়েই চলতে পারব। তিনি বলেন, নানা নীতিমালার কথা বলে ডোনাররা আমাদের মাঝপথে নদীতে ভাসিয়ে দিয়ে চলে যান।

রাজধানীর মিরপুরে আন্ডারপ্রিভিলেজড চিলড্রেনস এডুকেশনাল (ইউসেপ) বাংলাদেশ আয়োজিত ‘মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও ইউসেপের গৌরবময় অভিযাত্রা’ অনুষ্ঠানে গতকাল মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

নিউজিল্যান্ডের সমাজকর্মী লিন্ডসে অ্যালান চেইনি ১৯৭২ সালে এ প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন। এটির মাধ্যমে দেশের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে শিক্ষাদান ও তাদের কারিগরি দক্ষতায় দক্ষ করে তোলার মাধ্যমে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নেয়া হয়।

সংস্থাটির কার্যক্রম এখন বাংলাদেশের ৮টি জেলায় ৫৩টি সাধারণ শিক্ষা ও ১০টি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলমান। এর মাধ্যমে বছরে প্রায় ৪৮ হাজার শিশু উপকৃত হয়। ইউসেপের কার্যক্রমে ইউকেএইড, অস্ট্রেলীয় সরকার, জার্মান করপোরেশন ও ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন এক সময় সহায়তা করলেও এখন বন্ধ করে দিয়েছে বলে জানান ইউসেপ বাংলাদেশের চেয়ারপারসন পারভীন মাহমুদ। ফলে ইউসেপ পরিচালনার জন্য মন্ত্রীর কাছে নতুন নতুন প্রকল্পের আবদার করেন পারভীন মাহমুদ।

দাতাগোষ্ঠী চলে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের শক্তি আছে আমরা আর সহায়তা চাই না। তবে কেউ যদি সম্মান দিয়ে আমাদের পাবলিককে সালাম দিয়ে কাজ করে, করুক। একটি কাজ শুরুর পর মাঝপথে ডোনারদের নীতি পরিবর্তন হয়। তখন তারা বলেন, আমাদের নীতি পরিবর্তন হয়ে গেছে, আমরা আর টাকা দেব না। ছয় বছর যাওয়ার পর মাঝপথে নদীতে ভাসিয়ে দিয়ে তাদের আর খোঁজ নেই। এগুলো আমাদের এড়াতে হবে।

তিনি আরও বলেন, তাদের (দাতাগোষ্ঠী) নীতিমালা তারা পরিবর্তন করতেই পারে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কখনও বলেন না যে, তার নীতিমালা পরিবর্তন করেছেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মানবিক। আমাদের দেশের দায়িত্বগুলো শেষ বিচারে আমাদেরকেই বইতে হবে। এটাই আমাদের মূল কথা। আমাদের নিজস্ব সম্পদ আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। আমাদের লাখ লাখ মানুষ কাজ করছে। কাজ করছে বলেই সম্পদ বেড়েছে। বক্তৃতা দিয়ে কোনো সম্পদ সৃষ্টি হয় না। সম্পদ সৃষ্টি করতে হলে কাজ করতে হবে, লোহা পেটাতে হবে অথবা নৌকা বাইতে হবে অথবা লাঙল টানতে হবে। লাখ লাখ মানুষ কাজ করছে বলেই সম্পদ সৃষ্টি হচ্ছে। এই সম্পদ আমাদের কাজে লাগাতে হবে। টেকনিক্যাল শিক্ষা কাজে লাগাতে হবে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী সুবিধাবঞ্চিত ও অবহেলিত মানুষের জন্য কাজ করছেন।

শিক্ষা প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে শিক্ষার ঘাটতি আছে। এই শিক্ষা দিয়ে বাকি পথ পাড়ি দেয়া যাবে না। দেশে সাক্ষরতার হারও সম্মানজনক না। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের প্রযুক্তিগত শিক্ষা নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ শুরু হয়ে গেছে। আমরা কৃষিপণ্য বিদেশে পাঠানোর জন্য কাজ করছি। মাছ, মাংস, ডিম ও দুধ বিদেশে পাঠাবো; কারণ আমাদের দক্ষ জনশক্তি আছে।

অনুষ্ঠানের সভাপতি ইউসেপ বাংলাদেশের চেয়ারপারসন পারভীন মাহমুদ উল্লেখ করেন, ইউসেপ বাংলাদেশ দীর্ঘ ৪৯ বছর ধরে বাংলাদেশে সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও যুবাদের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে ইউসেপ বাংলাদেশে কাজ করে যাচ্ছে।