দামি শেয়ারের দর আরও বাড়াচ্ছে আইসিবি

আইসিবি একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। যার পুঁজিবাজার স্থিতিশীলকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার কথা। বাজারকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য বিশেষ কিছু দায়িত্ব রয়েছে আইসিবির। প্রথম কাজ হচ্ছে, এদের নিজস্ব পোর্টফোলিওতে বিনিয়োগ করা অর্থাৎ বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করা। যাতে করে সমগ্র পুঁজিবাজারের একটা উন্নয়ন ঘটে। কিন্তু তারা এটা না করে যদি নির্দিষ্ট গুটিকয়েক কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে সেসব শেয়ারের দর অনেক বাড়িয়ে দিচ্ছে। ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের পক্ষে সেসব শেয়ার কেনা সম্ভব হচ্ছে না। এতে সার্বিকভাবে বাজারের কোনো উন্নয়ন হচ্ছে না। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী, পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক এম শাহজাহান মিনা এবং মাইডাস ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সিইও মোহাম্মদ হাফিজ উদ্দিন।
ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, দেশের রাজনৈতিক অবস্থা পুঁজিবাজারকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে বলে আমার মনে হয় না। তবে এবার রাজনৈতিক পরিস্থিতি অন্যরকম। নির্বাচনকে ঘিরে দেশে অস্থিরতা ঘটবে কি না সেটাও নিশ্চিত না। সে শঙ্কা অতিক্রম করে মোটামুটি সব দলই নির্বাচনমুখী হয়েছে। সুতরাং অস্থিরতার যে আশঙ্কা ছিল সেটি অনেক কমে গেছে। হয়ত এর কিছু প্রভাব পুঁজিবাজারে পড়েছে তাই বিনিয়োগ কিছুটা বেড়েছে। যারা দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করবে তারা একটু নিরাপদে রয়েছে। কয়েকদিন ধরে পুঁজিবাজার কিছুটা স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। তবে স্বল্প মূলধনি কোম্পানির শেয়ার নিয়ে যে ম্যানুপুলেশন হচ্ছে সেটি কতটুকু কমেছে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
এখানে আরেকটি বিষয় হচ্ছে, বিএসইসি সম্পর্কে অনেক অভিযোগ রয়েছে আর অভিযোগ থাকাটাই স্বাভাবিক। তবে ঢালাওভাবে অভিযোগ করা ঠিক হবে না। তবে যে অভিযোগ মারাত্মক এবং যেটি পুঁজিবাজারের জন্য ক্ষতিকর সেটি বিএসইসিকে অনুসন্ধান করে জবাবদিহিতায় আনা উচিত। শুধু বিএসইসি নয় এটি অর্থ মন্ত্রণালয়ও দেখতে পারে এবং তাদের দেখা উচিত। এখন কথা হচ্ছে, একটি প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার অভাবে মানুষের মধ্যে আস্থার ঘাটতি দেখা দেয় সেখানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব কী কারণে তা ক্ষতিয়ে দেখা উচিত। কিন্ত এখানে হতাশার বিষয়, অনুসন্ধানে কি পেল সেটাই জানা যায় না।
২০১০ সালে যখন পুঁজিবাজারে শেয়ারের দাম দ্রুতগতিতে বেড়েছিল। তখন মার্চেন্ট ব্যাংক এবং ব্রোকারেজ হাউজগুলো দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ করেছিল মার্জিন ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে। তখন মার্জিন ঋণ যদিও দশমিক পাঁচ শতাংশে দেওয়ার নিয়ম ছিল কিন্তু সেটি অতিক্রম করে ২০০ শতাংশ পর্যন্ত মার্জিন ঋণ দেওয়া হয়েছিল। ২০১০ সালের শেষের দিকে পুঁজিবাজারে যখন ধস নামে তখন বেশিরভাগ মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজগুলোর নেগেটিভ ইকুইটি ছিল। সে ধকল এখনও সামলিয়ে উঠতে পারেনি। এর রেশ এখনও রয়েছে পুঁজিবাজারে।
অধ্যাপক এম শাহজাহান মিনা বলেন, আইসিবি একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান, যেটি পুঁজিবাজারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর কাজ হচ্ছে, পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীল অবস্থায় রাখা। বাজারকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য বিশেষ কিছু দায়িত্ব রয়েছে। প্রথম কাজ হচ্ছে, এদের নিজস্ব পোর্টফোলিওতে বিনিয়োগ অর্থাৎ বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করা। যাতে করে সমগ্র পুঁজিবাজারে একটা উন্নয়ন ঘটে।
মোহাম্মদ হাফিজ উদ্দিন বলেন, বর্তমানে পুঁজিবাজারে বেশিরভাগ স্বল্প মূলধনি কোম্পানি শেয়ারের দাম বেড়ে চলেছে, অন্যদিকে মৌলভিত্তির কোম্পানির শেয়ার বিশেষ করে ব্যাংক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং ওষুধ খাতের শেয়ারের কোনো তেমন টার্নওভার দেখা যাচ্ছে না।

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০