নিজস্ব প্রতিবেদক: টানা তিন কার্যদিবস বন্ধ থাকার পর গতকাল বুধবার দেশের পুঁজিবাজারে সীমিত আকারে লেনদেন হয়েছে। এদিন ক্রেতা সংকটে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সবকটি সূচকের পতন হয়েছে। লেনদেন দেড় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন হয়েছে। দাম কমার তালিকায় স্থান পেয়েছে সাড়ে তিন শতাধিক প্রতিষ্ঠান।
গত সপ্তাহে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সারা দেশে বিক্ষোভ ও সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন স্থানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গত শুক্রবার রাতে ১২ টা থেকে সারাদেশে কারফিউ জারি করে সরকার। গত রোববার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলেও গতকাল বুধবার থেকে সীমিত পরিসরে খুলে দেওয়া হয়েছে সরকারি-বেসরকারি অফিস। সীমিত পরিসরে চালু হয় ব্যাংকিং কার্যক্রম। ব্যাংক খোলায় পুঁজিবাজারেও লেনদেন চালু করা হয়েছে। তবে পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে বেলা ১১টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত।
গতকাল নির্ধারিত সময় বেলা ১১ টাতেই পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয়। তবে লেনদেনের শুরুতেই বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম কমার তালিকায় চলে যায়। এতে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাজারে ক্রেতা সংকট বাড়তে থাকে। বিপরীতে বাড়তে থাকে বিক্রির চাপ। ফলে একের পর এক প্রতিষ্ঠানের ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য হয়ে পড়ে। এতে লেনদেনের সময় গাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে সূচকের পতনের মাত্রা।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বৃদ্ধি হয় মাত্র ২০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের। বিপরীতে দাম কমে ৩৫৫টি প্রতিষ্ঠানের। আর ১৫টির দাম অপরিবর্তিত ছিল। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ৯৫ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৩৫০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৬৯ পয়েন্টে পৌঁছায়। বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩৭ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯০৮ পয়েন্টে নেমে গেছে। সূচকের বড় পতনের পাশাপাশি দেখা দেয় লেনদেন খরা। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১৫৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৭১ কোটি ৫২ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ২১২ কোটি ১৫ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে ২০২৩ সালের ২ জানুয়ারির পর ডিএসইতে সব থেকে কম লেনদেন হলো।
এদিকে, ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে লিবরা ইনফিউশনের শেয়ারের। কোম্পানিটির ৫ কোটি ২৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্র্যাক ব্যাংকের ৪ কোটি ৫২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। ৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে ছিল গ্রামীণফোন।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় ছিলÑঅগ্নি সিস্টেমস, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, রংপুর ফাউন্ড্রি, ওরিয়ন ফার্মা, মিডল্যান্ড ব্যাংক, বিচ হ্যাচারি এবং জেমিনি সি ফুড।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই কমেছে ২০৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হওয়া ১৪২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২৬টির এবং ১০টির দাম অপরিবর্তিত ছিল। লেনদেন হয়েছে ২ কোটি ৫১ লাখ টাকা।