দাম কমেছে মাছের বাড়তি ডিম-মুরগির

নিজস্ব প্রতিবেদক: সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে মাছের দাম। মাছের ভিন্নতা ও আকারভেদে কেজিতে ১০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে। অন্যদিকে বাড়তি রয়েছে ডিম ও মুরগির বাজার। ডিমে ডজনপ্রতি ১০-২০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি রয়েছে। কেজিতে ১০-৩০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের মুরগি। অন্যদিকে অপরিবর্তিত রয়েছে শাকসবজি, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, চাল, ডাল ও ভোজ্য তেলের দাম। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব চিত্র উঠে আসে।

বর্তমানে এসব বাজারে আকারভেদে প্রতিকেজি পটোল বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫৫ টাকায়, ঝিঙ্গা-চিচিঙ্গা-ধুন্দুল ৪০-৬০, কাঁকরোল ৬০-৭০, করলা ও উচ্ছে ৬০-৭০, কচুর ছড়া ৫০-৬০, পেঁপে ৪০-৬০, ঢেঁড়স ৪০-৫০, কচুর লতি ৫০-৬০, বেগুন ৪০-৮০, কাঁচামরিচ ৫০-৬০, মিষ্টিকুমড়া ৩০ ও আলু ৩০ টাকায়। তবে দাম কমেছে টমেটো ও ধনেপাতার। কেজিতে ১০ টাকা কমে বর্তমানে প্রতিকেজি টমেটো (প্রকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪৫ টাকা কেজিদরে। কেজিতে ৫০ টাকা পর্যন্ত কমেছে ধনেপাতার দাম। বর্তমানে প্রতিকেজি ধনেপাতা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়।

দাম অপরিবর্তিত রয়েছে কলা, বড় কচু, লেবু, পুদিনা পাতা, লাউ ও জালি কুমড়ার দাম। বাজারে প্রতি আঁটি (মোড়া) কচুর শাক বিক্রি হচ্ছে ১০-১২ টাকায়, লালশাক ১২-১৫, মুলা ১২-১৫, পালংশাক ১৫, লাউ ও কুমড়াশাক ৩০-৪০ ও পুঁইশাক ১৫-২০ টাকায়। অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। এসব বাজারে প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৮০-৬০০ টাকা, মহিষের মাংস ৬০০ টাকা, খাসির মাংস ৮০০ টাকা ও বকরির মাংস ৭৫০ টাকা কেজিদরে।

গরু-খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও বেড়েছে মুরগির বাজার। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০-৩০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি রয়েছে। কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বর্তমানে প্রতিকেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৬৫ টাকায়, কেজিতে ২০-৩০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি লেয়ার ২৪০-২৫০ টাকায় এবং সাদা লেয়ার ২০০-২১০ টাকায়। কেজিতে ২০-৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে প্রতিকেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৭০-২৯০ এবং প্রতিকেজি দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়।

দাম বাড়তি রয়েছে ডিমের বাজারে। বর্তমানে প্রতি ডজন লাল ডিম (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ১০০-১০৫ টাকায়, দেশি মুরগির ডিম ১৫০-১৬০, সোনালি মুরগির ডিম ১৩০ ও হাঁসের ডিম ১২০-১২৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। দাম কমেছে মাছের বাজারে। এসব বাজারে কেজিতে ২০-৫০ টাকা পর্যন্ত দাম কমে বর্তমানে প্রতিকেজি কাচকি মাছ ৩৫০-৪০০ টাকা, মলা ৩৮০-৪০০ টাকা, ছোট পুঁটি (তাজা) ৪৫০-৫৫০ টাকা, ছোট পুঁটি ২৮০-৩৫০ টাকা, টেংরা মাছ (তাজা) ৬৫০-৭৫০ টাকা ও দেশি টেংরা ৪৫০-৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কেজিতে ১০-৩০ টাকা বেড়ে দাম কমে প্রতিকেজি শিং (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৫০০ টাকায়, পাবদা ৩০০-৫০০, চিংড়ি (গলদা) ৪০০-৬৫০, বাগদা ৫০০-৯৫০, হরিণা ৩৫০-৫০০, দেশি চিংড়ি ৩০০-৫০০, রুই (আকারভেদে) ২৫০-৩৫০, মৃগেল ১৮০-৩০০, পাঙ্গাশ ১৩০-২০০, তেলাপিয়া ১৩০-১৮০, কৈ ১৬০-১৮০ ও কাতলা ২০০-৩২০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে। তবে অপরিবর্তিত আছে ইলিশের বাজার। বর্তমানে এসব বাজারে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে এক হাজার ৫০, ৭৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৭৫০-৮০০ ও ছোট ইলিশ আকারভেদে ৩৮০-৪৫০ টাকা কেজি দরে। এসব বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০, প্রতিকেজি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০, প্রতিকেজি আদা বিক্রি হচ্ছে (মানভেদে) ১৪০-১৫০ টাকা কেজি দরে।

অপরিবর্তিত আছে ভোজ্যতেলের বাজার। বাজারে খোলা সয়াবিন (লাল) বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৯৫-১০৫ টাকা প্রতি লিটার ও খোলা (সাদা) সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা প্রতি লিটার। খোলা সরিষার তেল বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা প্রতি লিটার। বর্তমানে প্রতি কেজি মিনিকেট (নতুন) চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৫৮ টাকায়, মিনিকেট পুরান ৬০, বাসমতী ৬০-৬২, আটাশ চাল ৪৪, সিদ্ধ চাল ৪০, পাইজাম ৪০ ও পোলাও চার ১০০-১০৫ টাকায়। প্রতিকেজি ডাবলি ডাল বিক্রি হচ্ছে ৪৫, অ্যাংকর ৫০, দেশি মসুর ডাল ১২০ ও মসুর (মোটা) ৮০ টাকায়।

বাজারে ডিম-মুরগির বাড়তি দাম নিয়ে ক্রেতার মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। মাহবুব আলম নামে শান্তিনগর বাজারের এক ক্রেতা বাংলানিউজকে বলেন, নিন্ম ও মধ্য আয়ের মানুষের মাংসের ভরসা ফার্মের মুরগি ও ডিমের ওপর। কিন্তু এক মাস ধরে এর দাম কমছে না। বাজেটে মুরগির উদ্যোক্তাদের নানা সুবিধার কথা বলা হয়েছে। এর পরও ডিম ও মুরগির বাজারে দাম কমছে না। এটা দুঃখজনক।

মাহবুব নামে খিলগাঁও বাজারের এক ক্রেতা বলেন, এখন বাজারে সবজির কোনো ঘাটতি নেই, কিন্তু দাম বেশি। গত সপ্তাহে দেখলাম বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে, আজও একই দামে বিত্রি হচ্ছে। অথচ সিজন নয় এ রকম অনেক সবজি বাজারে আছে। বেশি মুনাফার আশায় ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামতো দাম রাখছেন। মুরগির দাম বাড়ার বিষয়ে বোরহান নামে খিলগাঁও বাজারের এক মুরগি বিক্রেতা বলেন, পাইকারি বাজারে মুরগির সরবরাহ বেশি থাকলে দামও কমে যায়, কিন্তু এখন মুরগির সংকট রয়েছে কাপ্তান বাজারে। এ পাইকারি বাজার থেকে রাজধানীতে মুরগি সরবরাহ করা হয়। এ কারণে সেখানে দাম বাড়তি থাকায় খুচরাতেও বেড়েছে দাম।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০