দারিদ্র্যসীমার ওপরে উঠতে ২৩ হাজার টাকা মজুরি প্রয়োজন: সিসিসি

শেয়ার বিজ ডেস্ক: পোশাকশ্রমিকদের দারিদ্র্যসীমার ওপরে উঠতে মাসে ন্যূনতম ২৩ হাজার টাকা মজুরি প্রয়োজন বলে মনে করে ক্লিন ক্লথস ক্যাম্পেইন (সিসিসি)। ইউরোপভিত্তিক এই শ্রমিক অধিকার জোট বলেছে, সেটা না করে শ্রমিকদের মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা চূড়ান্ত করার মধ্য দিয়ে শ্রমিকদের আবারও পাঁচ বছরের জন্য বেঁচে থাকার সংগ্রামের দিকে ঠেলে দেয়া হলো।

এক বিবৃতিতে ক্লিন ক্লথস ক্যাম্পেইন জানিয়েছে, বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের শ্রম আইন ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার আইন অনুসারে এই ন্যূনতম মজুরির দাবি করা হয়েছিল। অন্যদিকে মালিকপক্ষের যে প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হলো, তার এ ধরনের ভিত্তি নেই।

এতে বলা হয়, শ্রমিকেরা ইতোমধ্যে ওভারটাইমের ওপর নির্ভর করে সংসার চালাচ্ছেন। সেই সঙ্গে ঋণ করে বা একবেলা না খেয়ে তাদের জীবন ধারণ করতে হচ্ছে। শ্রমিকদের মজুরি দারিদ্র্যসীমার নিচে হওয়ায় তারা কখনও কখনও সন্তানদের কাজে যেতে বাধ্য করেন।

ক্লিন ক্লথস ক্যাম্পেইন মনে করছে, বাংলাদেশে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে। সেটা আবার হয়েছে শ্রমিকদের কয়েক সপ্তাহ টানা আন্দোলন-সংগ্রামের পর।

বাংলাদেশের কারখানামালিকেরা দাবি করেন, তাদের পক্ষে ১২ হাজার ৫০০ টাকার ওপরে ন্যূনতম মজুরি দেয়া সম্ভব নয়। এমনকি এই মজুরি দিতে হলে বেশ কিছু সাবকন্ট্রাক্টর ব্যবসা ছেড়ে দিতে বাধ্য হবে, এমন কথাও বলছেন মালিকেরা। মূলত ক্রেতা কোম্পানি পোশাকের দাম নির্ধারণে মূল ভূমিকা পালন করে। নীতিগতভাবে তাদের এমন মূল্য দেয়া উচিত, যাতে কারখানামালিকেরা শ্রমিকদের মৌলিক চাহিদা মেটানোর মতো মজুরি দিতে পারেন। তা সত্ত্বেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলো পোশাকের যে দাম দেয়, তা দিয়ে শ্রমিকদের পক্ষে মৌলিক প্রয়োজন মেটানো সম্ভব নয়।

ক্লিন ক্লথস ক্যাম্পেইন বলছে, তারা আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের প্রতি কয়েকবার ২৩ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি দেয়ার মতো মূল্য দেয়ার যে আহ্বান জানিয়েছিল, তাতে কেবল একটি ব্র্যান্ড সাড়া দিয়েছিল। কেবল পাটাগোনিয়া ২৩ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরির দাবিতে প্রত্যক্ষভাবে সমর্থন দিয়েছিল। কিন্তু তারা যে পোশাকের দাম বাড়াবে, সেই অঙ্গীকার করেনি। অন্যান্য ব্র্যান্ড খুব ভাসা-ভাসাভাবে সে কথা বলেছে বা মূল্য বৃদ্ধির কথা বলেছে।

বাংলাদেশ থেকে যেসব ব্র্যান্ড পণ্য সংগ্রহ করে যেমনÑ এইচঅ্যান্ডএম, নেক্সট, সিঅ্যান্ডএ এবং এমঅ্যান্ডএস দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিকদের মৌলিক চাহিদা মেটানোর মতো মজুরি দিতে অঙ্গীকারবদ্ধ। কিন্তু দেখা গেছে, যখন সেই সময় এসেছে, অর্থাৎ শ্রমিকদের মৌলিক চাহিদা মেটানোর মতো মজুরির প্রসঙ্গে এসেছে, তখন তারা নিজেদের কথা রাখতে পারেনি। ক্লিন ক্লথস ক্যাম্পেইন মনে করছে, এতে বোঝা যায়, তাদের অঙ্গীকার ফাঁপা।

তবে এখনও নতুন মজুরি বাস্তবায়ন করা হয়নি। ক্রেতারা চাইলে এ সময় নিজেদের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে এগিয়ে আসতে পারেন। অর্থাৎ শ্রমিকদের ২৩ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি নিশ্চিত করতে পারে তারা। ক্লিন ক্লথস ক্যাম্পেইন মনে করে, ২৩ হাজার টাকাও মৌলিক চাহিদা মেটানোর মতো মজুরি নয়; বরং তা দিয়ে কোনোমতে আয়-ব্যয়ের হিসাব মেটানো যায়।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০