নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানী ছাড়া দেশের সবখানেই অসনীয় লোডশেডিং চলছে। বিশেষত গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিংয়ের মাত্রা বেড়েই চলেছে। দিনে-রাতে কখনোই লোডশেডিং থেকে মুক্তি পাচ্ছে না মানুষ। সকালে লোডশেডিং কিছুটা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর মাত্রা বাড়তে থাকে। তবে গত কয়েকদিন ধরে মধ্যরাতে বিশেষত ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ লোডশেডিং হচ্ছে। এতে মানুষকে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহের তথ্য পর্যালোচনা করে এ চিত্র পাওয়া গেছে। এতে দেখা যায়, এপ্রিলের শুরু থেকে অসহনীয় লোডশেডিং শুরু হয়েছে। এর মধ্যে রাত ১২টায় সর্বোচ্চ লোডশেডিং হচ্ছে, যা চলছে ৩টা বা ৪টা পর্যন্ত। এমনকি সরকারি ঘোষণা থাকলেও সাহরির সময়ও লোডশেডিং থেকে মুক্তি পাচ্ছে না মানুষ। সারাদিন গড়ে হাজার মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং হচ্ছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবারও লোডশেডিং থেকে মুক্তি মিলছে না।
পিডিবির তথ্যমতে, গতকাল রাত ১২টায় লোডশেডিং হয় এক হাজার ৭৫২ মেগাওয়াট। এ সময় বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৪ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট। রাত ১টায় চাহিদা কিছুটা কমে দাঁড়ায় ১৪ হাজার ১০০ মেগাওয়াট। সে সময় লোডশেডিং হয়েছে এক হাজার ৬৩৬ মেগাওয়াট। রাত ২টায় চাহিদা একই থাকলেও উৎপাদন কিছুটা বাড়ায় লোডশেডিং কমে দাঁড়ায় এক হাজার ৫৩৭ মেগাওয়াট। রাত ৩টায় চাহিদা আবার বেড়ে হয় ১৪ হাজার ২০০ মেগাওয়াট। সে সময় লোডশেডিং হয় এক হাজার ৫৬১ মেগাওয়াট।
রাত ৪টায় লোডশেডিং হয় এক হাজার ৩৩৫ মেগাওয়াট। এরপর কিছুটা উঠানামা করলেও সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত কখনোই এক হাজার ১০০ মেগাওয়াটের কম লোডশেডিং হয়নি। এর মধ্যে সকাল ৭টায় সর্বনিম্ন এক হাজার ১৩০ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়। আর বেলা ৩টায় তা এক হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যায়। তবে এরপর আবারও লোডশেডিং কিছুটা কমে।
এর আগে ৫ এপ্রিল শুক্রবারও একই ধরনের চিত্র ছিল। ওই দিন রাত ১২টায় চলতি বছরের সর্বোচ্চ এক হাজার ৮৯০ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়েছে। রাত ১টায় এক হাজার ৬৪৬ মেগাওয়াট, ২টায় এক হাজার ৬৩৪ মেগাওয়াট ও ৩টায় এক হাজার ৩৭৮ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়। তবে সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় শুক্রবার দিনে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ কিছুটা কম ছিল। ওই দিন সকাল ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত হাজার মেগাওয়াটের নিচে ছিল লোডশেডিং। তবে রাত ১১টায় তা এক লাফে দেড় হাজার মেগাওয়াট ছাড়ায়।
পিডিবির তথ্যমতে, ৪ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) রাত ১২টায় এক হাজার ৫৫০ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়। ওই দিন রাত ১টায় এক হাজার ৫২৬ মেগাওয়াট, ২টায় এক হাজার ৩৫৪ মেগাওয়াট ও ৩টায় এক হাজার ৩৭৮ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়। ওই দিন শুধু সকাল ৮টায় ও সন্ধ্যা ৭টা থেকে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত লোডশেডিং হাজার মেগাওয়াটের নিচে নামে। তবে দুপুর ৩টায় তা দেড় হাজার মেগাওয়াট ছাড়ায়।
একই ধরনের চিত্র ছিল ৩ এপ্রিল বুধবার। ওই দিন রাত ১২টায় এক হাজার ৮২৬ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়। এছাড়া রাত ১টায় এক হাজার ৬৪৫ মেগাওয়াট, ২টায় এক হাজার ৪৩৬ মেগাওয়াট ও ৩টায় এক হাজার ২৫৫ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়।
যদিও ২ এপ্রিল দিনে বেশি লোডশেডিং হয়েছে। ওই দিন দুপুর ৩টায় সর্বোচ্চ লোডশেডিং হয় এক হাজার ৭৩২ মেগাওয়াট। তবে ১ এপ্রিল সারাদিনই লোডশেডিং হাজার মেগাওয়াটের নিচেই ছিল। ওই দিন রাত ১১টায় তা হাজার মেগাওয়াট ছাড়ায়।