দীর্ঘমেয়াদে অবস্থান নিতে বিনিয়োগকারীদের অনাগ্রহ

নিজস্ব প্রতিবেদক:দেশের পুঁজিবাজার সপ্তাহের ব্যবধানে সূচকের উত্থানের মাধ্যমে গত সপ্তাহ পার করেছে। এতে টানা দুই সপ্তাহ ধরে উত্থান হয়েছে পুঁজিবাজারে। সপ্তাহটিতে সূচকের সঙ্গে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া  বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত ছিল। বিনিয়োগকারীদের মুনাফা সংগ্রহে বিক্রির চাপে গত সপ্তাহে কিছুটা অস্থিরতা থাকলেও স্বল্প সময়ে মুনাফার আশায় এবং সুযোগসন্ধানীদের কেনার চাপে সূচক ও লেনদেনে উত্থান হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা। এতে সপ্তাহটির বেশির ভাগ কার্যদিবসে সূচক বেড়েছে। কিন্তু শেয়ারে দীর্ঘমেয়াদে অবস্থান নিতে বিনিয়োগকারীদের অনাগ্রহ এবং মুনাফা সংগ্রহের চাপ অব্যাহত থাকায় বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে বলে জানান তারা।

আলোচ্য সপ্তাহে কাগজ ও মুদ্রণ খাতের শেয়ার কেনায় বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেশি ছিল। ফলে সবচেয়ে বেশি কেনার চাপ থাকায় সপ্তাহটিতে দর বৃদ্ধির শীর্ষে রয়েছে আলোচ্য খাতের শেয়ার। এছাড়া গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের বিক্রির চাপ থাকায় ট্যানারি খাতের দর সবচেয়ে বেশি কমেছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গেল সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ২২৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ১৯০ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এই সময়ের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ১ দশমিক ৭৪ শতাংশ। ডিএসইতে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৪৪৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে গড়ে লেনদেন হয়েছিল ৪৩৮ কোটি ১২ লাখ টাকা। গেল সপ্তাহে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ৪০৩টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে শেয়ারদর বেড়েছে ৯০টির, দর কমেছে ৬৮টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ২২৪টি কোম্পানির। লেনদেন হয়নি ২১টি কোম্পানির শেয়ার।

গত সপ্তাহে ডিএসইএক্স ১৯ দশমিক ৪১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৯৯ দশমিক ৫০ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই৩০ সূচক ১১ দশমিক ১১ পয়েন্ট এবং শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ৬ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২ হাজার ১৪১ দশমিক ৬১ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ৩৭২ দশমিক ৫২ পয়েন্টে।

বাজার-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বল্প সময়ে মুনাফা সংগ্রহে সুবিধাবাদী বিনিয়োগকারীরা কিছু নির্দিষ্ট খাত ও শেয়ারে কেনার চাপ অব্যাহত রাখায় পুঁজিবাজারের প্রধান সূচক টানা দুই সপ্তাহ ধরে উত্থান ধরে রেখেছে। এতে সপ্তাহের বেশির ভাগ কার্যদিবস ইতিবাচক অবস্থায় শেষ হলেও বাজারে দীর্ঘমেয়াদে অবস্থান নিতে ইচ্ছা কমে যাওয়ায় ও সতর্ক বিনিয়োগকারীদের মুনাফা সংগ্রহের চাপ অব্যাহত থাকায় বাজারের অস্থিরত দেখা গেছে। এদিকে বাজারে বিনিয়োগকারীদের অংশ নেয়ার হার কম ছিল, কারণ সতর্ক বিনিয়োগকারীরা বাজারে বর্তমান অনিশ্চয়তার গতিবিধি পর্যবেক্ষণের জন্য সাইডলাইনে থাকতে পছন্দ করেছেন বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে গত সপ্তাহে আগ্রহ বেশি থাকা কাগজ ও মুদ্রণ খাতের শেয়ারদর বেড়েছে ৬ দশমিক ১০ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে ছিল সেবা ও আবাসন খাত। খাতটিতে ৪ দশমিক ৩০ শতাংশ শেয়ারদর

 বেড়েছে। ৩ দশমিক ৯০ শতাংশ শেয়ারদর বেড়ে তৃতীয় স্থানে ছিল আইটি খাত। এছাড়া গত সপ্তাহে বিক্রির চাপ সবচেয়ে বেশি থাকায় ট্যানারি খাতের শেয়ারদর কমেছে শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশ। শূন্য দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ারদর কমে দ্বিতীয় স্থানে ছিল ব্যাংক, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, বিবিধ এবং প্রকৌশলী খাত।

অন্যদিকে গত সপ্তাহে লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে। খাতটিতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ২২ দশমিক ৭০ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিবিধ খাতে গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। ৭ দশমিক ৯০ শতাংশ লেনদেন হয়ে তৃতীয় স্থানে ছিল জীবন বিমা খাত।

এদিকে গেল সপ্তাহ শেষে ডিএসইর পিই রেশিও অবস্থান করে ১৪ দশমিক ৩৯ পয়েন্টে। এর আগের সপ্তাহ শেষে পিই রেশিও দাঁড়িয়েছিল ১৪ দশমিক ৩৯ পয়েন্টে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০