শেয়ার বিজ ডেস্ক: গত কয়েক দিনের টানা অবরোধে দেশের ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাইকারি বাজারগুলো ক্রমে জনশূন্য হয়ে গেছে এবং সপ্তাহব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি হয়েছে।
এর প্রভাব পড়েছে ঢাকার নিউমার্কেট, চাঁদনী মার্কেট, ইস্টার্ন প্লাজা, এলিফ্যান্ট রোড, ফার্মগেট, গুলিস্তান মার্কেট, শান্তিনগর, কাকরাইল, মৌচাক মার্কেট, রামপুরা-বাড্ডা, মিরপুর, ধানমন্ডি, গুলশান-বনানী ও উত্তরার মতো এলাকায়। নবাবপুর, চকবাজার, ইসলামপুর, বাবুবাজার, শাঁখারিবাজার, মৌলভীবাজার ও বঙ্গবাজারেও বাণিজ্য কার্যক্রম কমেছে। সূত্র: ইউএনবি।
ঢাকা নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দেওয়ান আমিনুল ইসলাম জানান, অবরোধের সময় বেচাকেনা খুবই কম ছিল। তিনি বলেন, ‘কোনো ক্রেতা নেই, এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। অবরোধ চলতে থাকলে আমরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হব।’
বায়তুল মোকাররম এলাকার অলিম্পিয়া বেকারিশপের কর্মচারীরাও একইভাবে বিক্রি কমে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন। এ কারণে তারা পরিচিত নেটওয়ার্কগুলোর মধ্যে বিকল্প বিক্রয় কৌশল অবলম্বন করেছেন।
পল্টন মোড়ের চা বিক্রেতা সবুজ জানান, গত সপ্তাহে তার দোকানে বিক্রি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিদিন ১০-১২ হাজার টাকার কেনাবেচা করি। এখন এটা দু-তিন হাজার টাকায় নেমে গেছে।’
বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে আগে থেকেই ক্রেতা সংকটে ভুগছিল খাতটি। এখন অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে আরও কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এর ফলে শুধু রপ্তানি খাতই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের অর্থনীতি। এটি রিজার্ভের ওপরও প্রভাব ফেলবে।’
বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান লোকসান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘পণ্যের অভ্যন্তরীণ পরিবহন মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। শিল্প উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। রপ্তানি খাত চলমান অবরোধের কারণে বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ।’
এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেন, অবরোধের কারণে পরিবহন সংকটে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন বন্দরে আটকে থাকা কাঁচামাল সংগ্রহ করতে পারছেন না।
চলমান ধর্মঘট অবরোধ সম্মিলিতভাবে পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম। তিনি বলেন, এই ধরনের কর্মসূচি দীর্ঘায়িত হলে অর্থনীতির চাকা স্থবির হয়ে যেতে পারে।
গত ২৯ অক্টোবর বিএনপিসহ অন্যান্য সমমনা বিরোধী দলগুলোর ডাকে সারাদেশে হরতাল পালিত হয়। ৩১ অক্টোবর থেকে টানা তিন দিনের অবরোধের পর ৫ ও ৬ নভেম্বর অবরোধ চলে। এরপর এক দিন বিরতি দিয়ে ফের ৮ ও ৯ নভেম্বর অবরোধ দেয়া হয়।